প্রাণের চিনিগুড়া চালের দাম বেড়ে কেজি ১৬০ টাকা
মিলমালিকরা গত ১ ফেব্রুয়ারি দাম বাড়িয়ে খুচরা পর্যায়ে খোলা চিনির দাম প্রতি কেজি ১০৭ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১১২ টাকা করার পরও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। অপরদিকে, ডিমের দাম বেড়ে ডজন ১৪০ টাকা হয়েছে। মাছ গত সপ্তাহের মতো স্থিতিশীল থাকলেও পাকিস্তানি মুরগির দাম বেড়ে প্রতি কেজি ৩১০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে সবজির মধ্যে করলা ও পটলের দাম কমেছে। কিন্তু সিটি গ্রুপ, প্রাণসহ বিভিন্ন কোম্পানি মিনিকেট চালের দাম বৃদ্ধির পর এবার চিনিগুড়া চালের দামও বাড়িয়েছে কেজিতে দশ টাকা। প্রাণের এই চাল প্রতি কেজি ১৬০ টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।
শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের টাউনহল, কৃষিমার্কেট বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
এখনো চিনি শূন্য বাজার
জলারের অজুহাতে মিলমালিকরা ১ ফেব্রুয়ারি থেকে দাম বাড়িয়ে খোলা চিনির কেজি ১০৭ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১১২ টাকা করেছে। তারপরও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে টাউনহলের মনির স্টোরের মনির ও পারভেজ জেনারেল স্টোরের পারভেজসহ অন্যান্য মুদি ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, চিনি নেই এটাই স্বাভাবিক অবস্থা হয়ে গেছে।
তারা বিভিন্ন অজুহাতে চিনির দাম বাড়িয়েছে। সরকারও সুযোগ দিয়েছে। তারপরও কোম্পানি থেকে চিনি দিচ্ছে না। এজন্য আমরা বিক্রি করতে পারছি না। কারণ, মিল থেকে ডিলারদের ঠিক দামে দিলেই আমরা একটু লাভ করে বিক্রি করতে পারতাম। সামনে রমজান এ অজুহাতেই মিল থেকে চিনি দিচেছ না। আবার বেশি দাম আদায় করার জন্যই তারা এসিন্ডিকেট করেছে। সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা নেই। তারা কী করছে। তারাতো বাজারে আসে। তাহলে মিলে যায় না কেন? মিলে ও গোডাউনে গেলে ধরা পড়বে।
চিনি বাজার থেকে হাওয়া হয়ে গেলেও আগের মতোই ১ লিটার সয়াবিন তেল ১৮৫ থেকে ১৮৭ টাকা, ২ লিটার ৩৭০ থেকে ৩৮০ ও ৫ লিটার ৮৭০ থেকে ৯০৫ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। মসুর ডাল ৯৫-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। প্যাকেট আটা ২ কেজি ১৩০ টাকা ও খোলা আটার কেজি ৬০ টাকা, ময়দা ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
বাড়তি মুরগির দাম
গত সপ্তাহের মতো গরু মাংস ৭০০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ টাকা, পোল্ট্রি মুরগি ২১০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে পাকিস্তানি মুরগির কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি করা হচ্ছে ৩১০ টাকা বলে ব্যবসায়ীরা জানান। দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে তারা বলছেন, সবকিছুর দাম বাড়তি। তাই মুরগির দামও বাড়ছে। তবে লেয়ার ২৮০, দেশি মুরগি আগের মতোই ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি ও ডিমের ডজন ১৪০-১৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে।
আগের সপ্তাহের মতোই রুই, কাতলা, ইলিশসহ প্রায় মাছ বিক্রি করা হচ্ছে। জব্বার মাছ বিতানের জব্বারসহ অন্য মাছ বিক্রেতারা জানান রুই ও কাতলার কেজি ২৫০-৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি, টেংরা, বোয়াল, আইড় ৫০০-৮০০ টাকা, কাচকি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০, কাজলি, বাতাসি ৬০০ টাকা, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া, ইলিশ আকার ভেদে ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
কমের দিকে পেঁয়াজ, আদা ও রসুন
গত সপ্তাহে দেশি রসুনের কেজি ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে কিছুটা কমে বিক্রি হচ্ছে। আর, চায়না রসুনের দামও কমে ২৬০ টাকা কেজি , পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি , দেশি আদার দামও কমে ১১০-১৩০ টাকা ও বিদেশি আদা ২৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান খুচরা বিক্রেতারা।
আগের মতোই বাড়তি চালের বাজার
সরকার চালের দাম কমানোর কথা বললেও তা কার্যকর হচ্ছে না। বিভিন্ন কোম্পানির বস্তার চাল ৭২ টাকা বিক্রি করা হলেও সিটি গ্রুপসহ বিভিন্ন কোম্পানির মিনিকেট চাল ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। কৃষিমার্কেট বাজারের মেসার্স মডার্ন রাইস এজেন্সির দেলোয়ার, টাইনহলের মনির স্টোরের মনিরসহ অন্য চাল ব্যবসায়ীরা জানান, মোটা স্বর্ণা চাল ৪৪ টাকা, আটাশ ৫৬ থেকে ৬২ টাকা ও মিনিকেট চাল ৭২ টাকা টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
চাল ব্যবসায়ীরা ঢাকাপ্রকাশ-কে আরও জানান, চালের দাম আর কমবে না। কারণ, সবকিছুর দাম বেশি।
কমেছে করলা, পটলের দাম
আগের সপ্তাহে করলা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হলে শনিবার কমে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি এবং পটল ও ঢেঁড়শের দাম কমে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে গত সপ্তাহের মতো টমেটো ২৫ থেকে ৩৫ টাকা কেজি, আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২০ থেকে ৪০ টাকা, লাউ ৬০ টাকা, শিমের কেজি ২৫ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৩০ টাকা, মুলা ও পেঁপের কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা। শসা ও গাজরের দাম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লাল ও পালং শাকের আটি ১০ টাকা, মরিচ ১২০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
জেডএ/এমএমএ/