১৫, ২৫ টাকার আলু-পেঁয়াজ খুচরায় ২৫-৪০ টাকা

সারাদেশে ব্যাপকভাবে আলুর ফলন হয়েছে। তাই এলাকায় দাম কম, ৮ থেকে ১০ টাকা কেজি। সেই আলু রাজধানীর পাইকারি কৃষি মার্কেট, কারওয়ান বাজারের আড়তে ১২ থেকে ১৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু সেই আলুই একটু দূরে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। অপরদিকে পেঁয়াজেরও একই চিত্র দেখা গেছে। আড়তের ২৫ টাকার পেঁয়াজ খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। আড়তের চেয়ে আদা, রসুনও বেশি দামে খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে কৃষকরা লাভবান না হলেও ঠগছে ভোক্তারা। অতি মুনাফা লুটে নিচ্ছে ফোড়িয়ালারা। শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারী) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার মোহাম্মদপুরের কৃষি মার্কেটের বিভিন্ন আড়তে সরেজমিনে দেখা গেছে, ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা কেজি। আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা। আদা ৭৫, রসুন ১৬৫ টাকা। কিন্তু একটু দূরেই সেই আদা থেকে পেঁয়াজ, রসুন-সবকিছুই ১০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
দামের ব্যাপারে জানতে চাইলে মেসার্স মামা ভাগিনা বাণিজ্যালয়ের মোহাম্মদ সম্রাট ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ভালো মানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ২৮ টাকা কেজি। আদা বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি। আর রসুন ১২৫ থেকে ১৬৫ টাকা।
একই বাজারের মেসার্স নিউ বিক্রমপুর বানিজ্যালয়ের মোহাম্মদ কালু ব্যাপারী বলেন, আলু, পেয়াজ রসুনের দাম একটু কমেছে বর্তমানে। তাই আলু ১০ থেকে ১৫ টাকা, আদা ৭০ টাকা, রসুন ১৬০ টাকা ও পেঁয়াজ ২৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
কিন্তু একটু দূরে খুচরা বাজারে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। দামের ব্যাপারে জানতে চাইলে সবজি বিক্রেতা আলম আলী বলেন, পিয়াজ ৪০ টাকা কেজি, আলু ২৫ টাকা , আদা ১২০, রসুন ২৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। এত বেশি কেন প্রশ্ন করা হলে তার সাফ উত্তর গত সপ্তাহে আরও বেশি ছিল। দাম কমেছে। তাই আমরাও কম দামে বিক্রি করছি।
আড়তে তো অনেক কম দাম। সেই তুলনায় অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হচেছ-এমন প্রশ্নের জবাবে খুচরা বিক্রেতারা বলেন, আমাদের তো বিভিন্ন খরচ আছে, লাভও করতে হবে। তাই একটু দাম বেশি।
আড়ত থেকে খুচরা দামের অনেক ব্যবধান কারওয়ান বাজারেও দেখা গেছে। মেসার্স বিক্রমপুর ট্রেডিং করপোরেশনের জহরুল বলেন, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ২৬ টাকা কেজি। অন্যান্য আড়তদার বলেন, আলু ১৫ টাকা, আদা ৭০ থেকে ৭৫, রসুন ১৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু সেইসব পণ্য খুচরা বাজারেও অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জসিম বলেন, আমরা কিনার পর কিছু খরচ আছে। লাভও করতে হয়। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ সময় বুলবুল, জসিমসহ কয়েকজন ভোক্তার অভিযোগ, দেশে আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও আদার বাম্পার ফলন হচ্ছে। তাই কৃষকরা কম দামে এসব পণ্য বিক্রি করছে। কিন্তু আমাদের তো ঠিকই অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। ফরিয়াদের পকেটে চলে যাচ্ছে আমাদের টাকা। ভোক্তাদের কাছ থেকে আড়ত থেকে শুরু করে খুচরা পর্যায়ে যে অনেক বেশি টাকা আদায় করছে এমন চিত্র সম্প্রতি জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরও জানতে পেরেছে।
এ ব্যাপারে জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, মরিচের বাজার হঠাৎ অস্থির হয়ে গেলে তারা দেখতে পায় দ্বিগুন দামে বিক্রি করা হচ্ছে। একটু ধরাধরি করলে আবার দাম স্বাভাবিক হয়ে যায়।
জেডএ/এসআইএইচ
