করদাতাদের হয়রানি কমাতে আলাদা বিভাগ জরুরি

কয়েক বছরে দেশে কর বাড়লেও তা যথেষ্ট নয়। কর নীতি নির্ধারণী (পলিসি মেকার) কাজের সঙ্গে সম্পৃক্তদের কর আদায়ে রাখা যাবে না। কর নীতি (ট্যাক্স পলিসি) বিভাগ ও কর প্রশাসন (ট্যাক্স অ্যাডমিস্ট্রিটেশন) আলাদা করতে হবে। তাহলে করদাতাদের হয়রানি কমবে।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাজস্ব সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে সেমিনারে বক্তারা এসব অভিমত প্রকাশ করেন।
রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এনবিআর এর উদ্যোগে ‘আয়কর ব্যবস্থা ক্রম বিকাশ এবং বাংলাদেশের অগ্রযতায় আয় করের ভূমিকা’ শীর্ষক এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম ও বিশেষ অতিথি ছিলেন মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী।
প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তৃতায় এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি এম এ মোমেন বলেন, ট্যাক্সের আওতা বাড়াতে হবে। শুধু ট্যাক্স পেয়ার চিহ্যিত করলে হবে না, তাদের কাছে কর আদায় করতে হবে। ট্যাক্স আইন ব্যবসাবান্ধব করতে হবে। তা না হলে কার উপকারে লাগবে। ট্যাক্স ম্যানুয়েল করতে হবে। তা না হলে একই ব্যক্তিকে বারবার ট্যা্ক্স দিতে হবে।
প্যানেল আলোচক হিসেবে মেট্রোপলিটন চেম্বারের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাত কবির বলেন, ট্যাক্স-জিডিপির অনুপাত কম। কারণ আয়কর প্রদানকারির সংখ্যা এখনো কম। করের হার যৌক্তিক পর্যায়ে আসতে হবে। করগ্রহীতাদের সরাসরি না গিয়ে প্রযুক্তির মাধ্যমে কর সংগ্রহ করতে হবে। যরা পলিসি করবে তাদের মাধ্যমে কর আদায় করা যাবে না। তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে কর আহরণ বাড়াতে হবে।
এই ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, আর যারা ভালো কর দেয় তাদের হয়রানি করা যাবে না, চাপ দেওয়া যাবে না। লন্ডনে বসে যেভাবে পাব ট্যাক্স নিব তা হতে পারে না। সবার সঙ্গে আলোচনা করে ট্যাক্স আরোপ করতে হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে তা করতে হবে। আমরা তাতে সমর্থন দিব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে ট্যাক্স দেওয়ার ক্ষেত্রে ঢাকার অবস্থা বাজে, আর সিলেটের অবস্থা ভালো। দেখতে হবে খারাপ কেন। এ জন্য গবেষণা করে দেখতে হবে। অন্য বোর্ড এর মতো জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যানকে ৪ থেকে ৫ বছর থাকতে হবে।
মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী বলেছেন, করদাতা ও কর গ্রহণকারীদের মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতি (ট্রাস্ট ডেফিসিয়েট) রয়েছে। এটা দুর করতে হবে। যখর যা আসবে তাই করা যাবে না। আর কর বিভাগকে পেশাদারিত্ব হতে হবে। নীতি বিশ্লেষণ করতে হবে। ট্যাক্স পলিসি ও টাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশনকে আলাদা করতে হবে।
অপরদিকে বিজিএমইএর পরিচালক আসিফ আশরাফ বলেন, যারা কর আদায় করবে তারা যদি নীতি নির্ধারণী হয় তবে সমস্যা। আমরা ৮৪ শতাংশ বেসরকারি খাত থেকে রাজস্ব দিয়ে থাকি। তারপরও মাঠ পর্যায়ে কর গ্রহণকারীদের কারণে ভীতিতে থাকি। ২০২৬ সালে দেশ এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েশন হবে। তাই ট্যাক্স পলিসি ও ট্যাক্স কালেক্টর-এই দুই প্রতিষ্ঠানকে আলাদা করতে হবে।
জেডএ/এমএমএ/
