বিশ্বমন্দার মধ্যেও বেড়েছে রপ্তানি আয়
বিশ্বমন্দার মধ্যেও তৈরি পোশাকের হাত ধরে রপ্তানি আয়ে সুবাতাস দেখা দিয়েছে। চলতি অর্থবছরের (জুলাই থেকে জানুয়ারি) সাত মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। তবে লক্ষমাত্রা অর্জনে বেগ পেতে হয়েছে। অপর দিকে জানুয়ারি মাসেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে না পারলেও প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ছয় শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে গত জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত মোট সাত মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩ হাজার ২৪৪ কোটি ৭৫০ লাখ ডলার। যা ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ২ হাজার ৯৫৪ কোটি ৮৯২ লাখ ডলার। অর্থাৎ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৮৯ কোটি ৮৫৮ লাখ ডলার রপ্তানি আয় বেড়েছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। তবে প্রবৃদ্ধি হলেও লক্ষ্যমাত্রা টেনেটুনে অর্জন হয়েছে। কারণ লক্ষ্য ছিল ৩ হাজার ২৩৮ কোটি ডলার। বেশি অর্জন হয়েছে দশমিক শূণ্য ৩ শতাংশ।
ইপিবির তথ্য মতে, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের তৈরি পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার। যা আগের বছরের জানুয়ারি মাসে হয়েছিল ৪৮৫ কোটি ৪ লাখ ডলার। এ হিসেবে জানুয়ারি মাসে রপ্তানি আয় বেড়েছে ২৮ কোটি ৫৮ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন (ইউএস) ডলার। আর বছরের ব্যবধানে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। তবে লক্ষ্য মাত্রা ৫২৪ কোটি ৬০ লাখ ধরা হলেও অর্জন কম হয়েছে ২ দশমিক ১ শূণ্য শতাংশ।
রপ্তানির ৮০ শতাংশের বেশি আয় হয় তৈরি পোশাক শিল্প থেকে। এ খাতে অর্জন বেশি হলে সে মাসেও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পায়। ২০২২-২৩ অর্থবছরের সাত মাসে পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৬ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। তা ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। আগের বছরে এই সময়ে অর্জন হয়েছিল ২৩ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
খাতভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, জুলাই থেকে জানুয়ারি এই সাত মাসে দুই হাজার ৭৪১ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা মোট রপ্তানি আয়ের ৮৪ দশমিক ৫ শূণ্য শতাংশ। গত অর্থবছরের তুলনায় এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৪ দশমিক ৩১ শতাংশ। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি অর্জন হয়েছে ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ। একইভাবে চামড়াজাত পণ্যে ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ ও প্লাস্টিক পণ্যে ৪০ দশমিক ১ শূণ্য শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
তবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এবার কৃষিপণ্য ২৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ, হিমায়িত মাছে ২২ দশমিক ৩৯ শতাংশ, হস্তশিল্পে ৩৪ দশমিক ১০ শতাংশ, পাটজাত পণ্য ২১ দশমিক ২২ শতাংশ এবং কাঁচ পণ্যের রপ্তানি ৪৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ কমেছে।
উল্লেখ্য, গত অর্থবছরে ৫২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রপ্তানি হওয়ায় সরকার ২০২২-২৩ অর্থবছরে বেশি করে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এবারে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা রয়েছে ৫৮ বিলিয়ন ডলার। এটাও অর্জন হবে বলে ৩১ জানুয়ারি বাণিজ্য মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
জেডএ/এএস