বিধি-নিষেধ উপেক্ষিত
বাণিজ্য মেলায় উপচে পড়া ভিড়
ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলায় উপচে পড়া ভিড়। করোনাভাইরাস সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) থেকে যে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে তা মেলায় উপেক্ষিত। দর্শনার্থীরা প্রবেশ পথে মাস্ক পরিধান করে ভিতরে ঢুকলেও পরে খুলে ফেলছেন।
বাণিজ্য মেলার ১৪তম দিনে দ্বিতীয় শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে প্রবেশপথে বাড়তে থাকে মানুষের সমাগম। জুম্মার নামাজের পর প্রচুর ভিড় দেখা যায়।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা রাইহান রাইন ঢাকাপ্রকাশকে জানান, 'নো মাস্ক নো সার্ভিস’ লেখা থাকায় দর্শনার্থীরা মাস্ক পরে ভিতরে ঢুকছে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর মাস্ক খুলে ঘুরাঘুরি করছে। স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। যা খুব বিরক্তিকর এবং ঝুকিপূর্ণ।'
মেলা গেটের ইজারাদার মীর ব্রাদার্সের মালিক মো. শহিদুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশকে জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শনার্থীদের প্রবেশের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কারো মাস্ক না থাকলে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। নো মাস্ক নো সার্ভিস। সরকারি ছুটির দিনে আজ প্রচুর ভিড়। ১০০ জনের টিম করে গেটে মাস্ক দেওয়া হচ্ছে।
১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত বাণিজ্য মেলায় এক লাখ দর্শনার্থী এসেছে বলে তিনি জানান।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, প্রচুর দশনার্থী আসার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রিও বেড়েছে। মানুষজন মেলা প্রাঙ্গণে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি এটা-সেটা দেখছে। পছন্দ হলে কিনেও নিচ্ছে। ফলে বিক্রিও বেড়েছে।'
আয়োজক সংস্থা ইপিবি বলছে, চ্যালেঞ্জ নিয়ে বছরের প্রথম দিন ২৬তম বাণিজ্য মেলা শুরু হয়েছে। এতে অংশ নিয়েছে দেশ বিদেশের ২২৫টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন। তার মধ্যে স্থায়ী কাঠামোর ভিতরে দুই দিকে আছে ১৬২টি স্টল। বড়গুলো আছে বাইরে। রেস্টুরেন্ট রয়েছে ১৫টি। নিয়ম না মানলে মেলায় রেস্টুরেন্টকে জরিমানা করা হচ্ছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুম আরেফিন জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ১০টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে।
ইপিবির সচিব ও পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী ঢাকাপ্রকাশকে জানান, করোনার কারণে গত বছর মেলা করা যায়নি। এবার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সবাই আশা করছি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। যাতায়াতের জন্য বিআরটিসি গাড়ির ব্যবস্থা রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য রয়েছে ৩০০ পুলিশ। বড়দের ৪০ টাকা, অপ্রাপ্তদের জন্য ২০ টাকায় টিকিট কিনে মেলায় প্রবেশ করা যাচ্ছে। তবে প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধারা টাকা ছাড়াই মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। বিশাল আকারের ক্যাফেটেরিয়া রয়েছে মেলা প্রাঙ্গণে। এক হাজার গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও রয়েছে। সব ধরণের সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ জানুয়ারি মাসব্যাপী এ মেলার উদ্বোধন করেন। নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে স্থায়ী ঠিকানায় ২৬তম বাণিজ্য মেলা শুরু হয়েছে।
আয়োজক সংস্থা ইপিবি জানায়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এবার মেলার আয়োজন সীমিত করা হয়েছে। ভারতসহ কাছাকাছি ১১টি দেশ মেলায় অংশ নিয়েছে। রাজধানী থেকে দূরে হওয়ায় দর্শনার্থী, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের যাতায়াতের জন্য কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ৩০টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে মেলায় চলে যাওয়া যাচ্ছে।
জেডএ/এপি/এএন