বিভাগীয় শহর-সিটির বাইরে করতে হবে এসএমই ও কৃষি শাখা
ব্যাংকিং সুবিধা বঞ্চিত এলাকাকে অগ্রাধিকার দিয়ে বিভাগীয় শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে এসএমই ও কৃষি শাখা স্থাপন করতে হবে। আর সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা এলাকার বাইরে কমপক্ষে ৬০ শতাংশ উপ-শাখা করতে হবে। নিয়ন্ত্রণকারী শাখা থেকে ১ কিলোমিটারের মধ্যে উপশাখা স্থাপন করা যাবে না। সব সিটি করপোরেশন ও ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত পৌরসভা এলাকায় স্থাপিত শাখা ‘শহর শাখা’ এবং অন্যান্য এলাকায় স্থাপিত শাখা ‘পল্লী শাখা’ হিসেবে গণ্য হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের (বিআরপিডি) ‘ব্যাংকের ব্যবসা কেন্দ্র স্থাপন, ভাড়া ও ইজারা সংক্রান্ত নীতিমাল’য় এ সব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিআরপিডির পরিচালক মাকসুদা বেগমের সই করা ওই নতুন নীতিমালায় শহর ও পল্লী শাখার সংজ্ঞায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে সিটি করপোরেশন ও ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত পৌরসভা এলাকায় স্থাপিত বা স্থাপিতব্য শাখা ‘শহর শাখা’ এবং অন্যান্য এলাকায় স্থাপিত বা স্থাপিতব্য শাখা ‘পল্লী শাখা’ হিসেবে গণ্য হবে।
এ ছাড়া কোনো এলাকা নতুনভাবে সিটি করপোরেশন এলাকা হিসেবে ঘোষিত হলে বা বিদ্যমান সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হলে বা বিদ্যমান কোনো ‘খ’ বা ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভা ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হলে সেই ব্যাংক শাখা শহর শাখা হিসেবে গণ্য হবে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে ব্যাংকিং সুবিধা বঞ্চিত এলাকার জনসাধারণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে মোট উপ-শাখার কমপক্ষে ৬০ শতাংশ সিটি করপোরেশন ও ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত পৌরসভা এলাকার বাইরে স্থাপন করতে হবে। ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণকারী শাখা থেকে ১ কিলোমিটারের মধ্যে উপ-শাখা স্থাপন করা যাবে না। তা ছাড়া বিদ্যমান নীতিমালার অন্যান্য প্রযোজ্য নির্দেশনাবলী অপরিবর্তিত রেখে পরিমার্জন করে উপ-শাখা স্থাপনের জন্য একীভূত নির্দেশনা প্রস্তাব করা হয়েছে।
ব্যাংকের নাম, নিয়ন্ত্রণকারী শাখার নাম এবং ব্যাংক প্রদত্ত উপশাখাযুক্ত নামের সাইনবোর্ড উপশাখার বাইরে সহজে দৃশ্যমান হয় এমন স্থানে স্থাপন করতে হবে। বাৎসরিক ভিত্তিতে প্রতিটি শহরে একটির অধিক শহর শাখা স্থাপন করা যাবে না।
উপশাখার ক্যাশ ইন ট্রানজিট ও ক্যাশ অন কাউন্টারের পূর্ণ বীমা আচ্ছাদন নিশ্চিত করতে হবে। নগদ অর্থ ও গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টস্ উপশাখায় সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ভল্ট স্থাপন করা যাবে। উপশাখার ভল্ট নিয়ন্ত্রণকারী শাখার ভল্ট হিসেবে গণ্য হবে।
এক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়মানুযায়ী ভল্টের নিরাপত্তা এবং সংরক্ষিত অর্থের বীমা আচ্ছাদন নিশ্চিত করতে হবে। উপশাখায় বৈদেশিক বাণিজ্য সংক্রান্ত কোনো কার্যক্রম সম্পাদন করা যাবে না।
১০০ বর্গফুটে এটিএম বুথ
ইলেক্ট্রনিক বুথ স্থাপনের জন্য ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বা নির্বাহী কমিটির অনুমোদন থাকতে হবে। তবে এটিএমসহ যে কোনো ধরনের ইলেক্ট্রনিক বুথ স্থাপনে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমোদন গ্রহণের আবশ্যকতা নেই। গ্রাহকের ব্যবহারের সুবিধা বিবেচনায় প্রতিটি বুথে একক এটিএম বা সিডিএম স্থাপনের জন্য সর্বোচ্চ ১০০ বর্গফুট পরিসর এবং একাধিক এটিএম ও সিডিএম স্থাপনের জন্য আনুপাতিক হারে স্পেস ভাড়া গ্রহণ করা যাবে। এ ছাড়া এ সব বুথ স্থাপনের ব্যয় ও ভাড়া সংক্রান্ত ব্যয়ের ক্ষেত্রে শাখার জন্য প্রযোজ্য নিয়ম অনুসরণ করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এখন থেকে কোনো ধরনের স্থাপনা ভাড়া নেওয়ার সময় অগ্রিম বাবদ ভাড়া চুক্তির মেয়াদ ৪ বছর পর্যন্ত হলে সর্বোচ্চ ১২ মাসের ভাড়া, ৪ বছরের বেশি কিন্তু ৯ বছরের কম হলে সর্বোচ্চ ২৪ মাসের ভাড়া এবং ৯ বছর বা তদূর্ধ্বে হলে সর্বোচ্চ ৩৬ মাসের ভাড়ার সমপরিমাণ অগ্রিম প্রদান করা যাবে। নির্ধারিত মেয়াদে ন্যূনতম ৩ বছর অন্তর মূল ভাড়ার ১৫ শতাংশের বেশি ভাড়া বাড়াতে পারবে না।
বাজার দর বিবেচনায় প্রতি বর্গফুটের জন্য ব্যয়সীমা সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা এবং বিদ্যমান ব্যবসা কেন্দ্র স্থানান্তরের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গফুটের জন্য সর্বোচ্চ এক হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করা যাবে। আইটি সরঞ্জাম ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার ব্যয়ও যুক্তিসঙ্গত পর্যায়ে থাকতে হবে। এতদিন এই ব্যয়সীমা ছিল প্রতি বর্গফুটে সর্বোচ্চ এক হাজার ৮৫০ টাকা ও এক হাজার ২৫০ টাকা। একই ভাড়াচুক্তির মেয়াদে ন্যূনতম ৩ বছর অন্তর মূল ভাড়ার ১৫ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি করা যাবে না।
জেডএ/আরএ/