কারণ ছাড়াই বেড়েছে আদার ঝাঁজ
সপ্তাহের ব্যবধানে মাছ মাংসের দাম বৃদ্ধি পায়নি। বরং মুরগির দাম কেজিতে কমেছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই আদার দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ বেড়ে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। এখনো চিনি নির্ধারিত দামে অর্থাৎ ১০৭ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বেশি দামের চাল ও তেল নিলে তীর চিনি পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিক্রেতারা। তবে সবজির বাজার স্থিতিশীল রয়েছে।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
স্থিতিশীল মাংস, ডিম ও মাছের দাম
পিকনিকের মৌসুম হলেও শৈত্য প্রবাহের কারণে কমে গেছে বিভিন্ন আয়োজন। এ জন্য আগের সপ্তাহে মুরগি, গরু ও খাসির মাংসের দাম বাড়লেও এ সপ্তাহে কমেছে। জননী ব্রয়লার হাউজ, মায়ের দোয়াসহ অন্য মুরগি ব্যবসায়ীরা বলেন, আগের সপ্তাহে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করা হলেও এ সপ্তাহে কেজিতে কমেছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। লাল লেয়ার ও পাকিস্তানি মুরগির দামও কমে ২৪০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। ডিমের দাম আগের সপ্তাহের মতোই ১১৫ থেকে ১২০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে।
এদিকে মাংসের মতোই রুই, কাতলা, ইলিশসহ প্রায় মাছ বিক্রি করা হচ্ছে আগের সপ্তাহের দামেই। বিক্রেতারা জানান রুই ও কাতলার কেজি ২২০-৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি, টেংরা, বোয়াল, আইড়ের দাম কমে ৫০০-৮০০ টাকা, কাচকি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০, কাজলি, বাতাসি ৬০০ টাকা, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। ইলিশের দামও কমতির দিকে। এক কেজির উপরে ১০০০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, বেশি বড় হলে ১ হাজার ২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে ছোটগুলোর দাম একটু কম। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশি উৎপাদন হচ্ছে। তাই চাহিদা বাড়লেও দাম বাড়েনি।
হঠাৎ করে লাগামহীন আদা
আগের সপ্তাহে দেশি আদা ১০০ ও চায়না আদা ১২০-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হলেও এ সপ্তাহে লাগামহীন হয়ে পড়েছে। চায়না আদার কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকা হয়ে গেছে। তার প্রভাবে দেশি আদার দামও কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে ১২০-১৩০ টাকা কেজি হয়ে গেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তবে আগের মতোই রসুনের কেজি ১০০ টাকা, চায়না রসুন ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসায় এর দামও কমে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
আগের মতোই সবজির দাম
আগের সপ্তাহের মতোই টমেটোর কেজি ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, মরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বেগুণ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২০ থেকে ৪০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শিমের কেজি ২৫ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা। তবে করলা ও ঢেঁড়সের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়ে গেছে। মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৩০ টাকা, মূলা ও পেঁপের কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা। শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।
কমেনি মিনিকেট চালের দাম
আগের দামেই চাল বিক্রি করা হচ্ছে বলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের কুমিল্লা রাইস এজেন্সির আবুল হাসেমসহ অন্য চাল ব্যবসায়ীরা জানান। তারা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, মোটা চালের দাম কমেনি। মোটা স্বর্ণা চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। তবে ২৮ চালের দাম কিছুটা কমেছে। আগে ৬০ টাকার উপরে বিক্রি করা হলেও বর্তমানে তা ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে রশিদসহ অন্যরা ৭০ থেকে ৭২ টাকা কেজি বিক্রি করলেও তীর মিনিকেট আগের মতো ৭৪ থেকে ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি করছে। এরমধ্যে ১০ কেজির তীর মিনিকেট ৭৮০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান সালমান ট্রেডার্সের ফেরদৌস।
এছাড়া বাসমতি ৮৮, নাজিরশাইল ৮২ থেকে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। পোলাও চালের দামও কমেনি। খোলা চালের কেজি আগে ১২৫ টাকা বিক্রি করা হলেও তা ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। আর কোম্পানির প্যাকেট পোলাও চাল ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
কমেছে আটার দাম
গত সপ্তাহে সব দোকানে কম দামের আটা পাওয়া না গেলেও বর্তমানে ২ কেজির আটা ১৩৬ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। খোলা আটার কেজি ৬০ ও ২ কেজি ময়দা ১৫০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। আল্লাহর দানের মামুন ও আলী স্টোরের আলী হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ১ লিটার সয়াবিন তেল ১৮৫ টাকা, ২ লিটার ৩৭০ ও ৫ লিটার ৮৮০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। আগের মতো মসুর ডাল ৯৫-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
জেডএ/এএস