বুধবার, ৮ জানুয়ারি ২০২৫ | ২৪ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বছরজুড়ে ভোগান্তির রেকর্ডে ব্যাংকিং খাত

করোনার ধকল সামলে উঠতে না উঠতে বছরের শুরুতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাণ্ডবে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। বিশ্বে পণ্যের দাম লাগামহীন হয়ে পড়লে ডলারের দাম লাগামহীন হয়ে পড়ে। ৮৬ থেকে বেড়ে ১১৫ টাকা হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে থাকে।

বিলাসী পণ্যের শতভাগ ঋণ মার্জিন ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারপরও ঠেকানো যাচ্ছে না রিজার্ভ সংকট। ৪৬ বিলিয়ন থেকে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নামমাত্র ডাউন পেমেন্ট দিয়ে খেলাপির তকমা কমাতে ঋণ পুনঃতফসিলকরণ ব্যাংকের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। তারপরও ঋণ গ্রহীতারা ঠিকমতো তা পরিশোধ করছেন না। এর ফলে এক লাখ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকায়। এভাবে ব্যাংকিং খাাত সারাবছরই ভুগিয়েছে দেশের মানুষকে।

অস্থির ডলারের বাজারে রিজার্ভে টান

আমদানি ব্যয় মেটাতে হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে। এক সময়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থাকলেও কারও মুখে কোনো টু শব্দ দেখা যায়নি। কিন্তু করোনার পরে আমদানি ব্যয় মেটোতে হলে রিচার্ভে বাড়তে থাকে চাপ। চলতি বছরের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ কমে ছিল ৪৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হলে আকাশে দেখা দেয় মেঘ। অর্থনীতিতে মারাত্বকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। দেশের প্রায় নিত্যপণ্য আমদানি নির্ভর হওয়ায় বাড়তে থাকে ডলারের চাহিদা।

এর ফলে বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে প্রতি ডলার ৮৬ টাকায় বিনিময় হলেও প্রতি মাসে বাড়তে থাকে চলারের চাহিদা। এ কারণে দামও বাড়তে থাকে। সেপ্টেম্বরে ১১৫ টাকায় উঠে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক দাম নির্ধারণ করেও তা রুখতে পারেনি। পরে ব্যাংকের দাবির মুখে তা বাজারের উপর ছেড়ে দেয়। বাফেদার হাতে ডলার ছেড়ে দিলেও তা ১০৭ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। আর খোলা বাজারে তা ১২০ পর্যন্ত ডলার বেচাকেনা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও প্রতিদিন রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। তারপরও মিটছে না ডলারের সংকট। কোনো ব্যবসায়ীই ঠিকমতো এলসি ঋণপত্র খুলতে পারছে না।

বাধ্য হয়ে চলতি বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করেছে ৯৫০ কোটি মার্কিন ডলার। যা আগের চেয়ে অনেক বেশি। ডলার বিক্রি করতে থাকায় রিজার্ভের পরিমাণও দিন দিন কমছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৪০০ কোটি (৩৪ বিলিয়ন) ডলারে নেমে গেছে। এ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলসহ কয়েকটি তহবিলে বিনিয়োগ করা হয়েছে ৮০০ কোটি (৮ বিলিয়ন) ডলার।

এই তহবিলের বিনিয়োগ রিজার্ভ হিসেবে মানতে নারাজ আইএমএফ। তা নিয়ে ব্যাপকভাবে সমালোচনার ঝড় উছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য হচ্ছে এই বিনিয়োগ করা অর্থও রিজার্ভের। কাজেই এটা বাদ দিলে রিজার্ভ থাকে ২৬০০ কোটি (২৬ বিলিয়ন) ডলার, যা দিয়ে বর্তমানে সাড়ে চার মাসের ব্যয় মেটানো সম্ভব। এটা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।

হুন্ডির রমরমা ব্যবসাতে রেমিট্যান্সে ভাটা

আমদানির লাগাম টানতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও ডলারের সংকট কমেনি। সরকার রেমিট্যান্স বৃদ্ধি করতে গত জানুয়ারিতে আড়াই শতাংশ প্রণোদনাও ঘোষণা করেছে। তারপরও দেশে বৈধ চ্যানেলের চেয়ে অবৈধ পথে শুধু ঘোষণার মাধ্যমেই হুন্ডিতেই বেশি আসছে রেমিট্যান্স। ডলার নিয়ে দেশে সংকট সৃষ্টি হওয়ায় প্রবাসী আয়ে এক দর বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরফলে কোনো ব্যাংক বেশি দামে বিদেশ থেকে আয় সংগ্রহ করতে পারবে না। অন্যদিকে, দেশে মার্কিন ডলারের চরম সংকট দেখা দেওয়ায় সরকারের আমদানি দায় পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছাড়েও লাগামহীন খেলাপি ঋণ

২০২০ সালের মার্চে করোনা শুরু হলে গত দুই বছর ধরে ঋণ আদায়ে নানাভাবে ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যবসায়ীদের রক্ষা করতে ২০২০ সালের শুরু থেকেই মাত্র দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ নবায়নে ছাড় দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল শপথ নিয়েই বলেছিলেন, ‘আজ থেকে আর এক টাকাও খেলাপি ঋণ বাড়বে না।’

ব্যাংক মালিকরাও বলেছিলেন, এটা কার্যকর করা হবে। তারপরও বাড়ছে খেলাপি ঋণ। কোনোক্রমেই ঠেকানো যাচ্ছে না। বিভিন্নভাবে ঋণ নিয়ে অনেকে ঠিকমতো তারা পারিশোধ করছেন না। এরফলে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকার বেশি, যা মোট ঋণের প্রায় ৮ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব মতে, সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর নয় মাসে খেলাপি বেড়েছে ৩১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা।

ডিসেম্বর প্রান্তিকের কেলাপি এখনো প্রকাশ করা হয়নি। এটা করা হলে খেলাপি ঋণ আরও বৃদ্ধি পাবে।

সাবেক অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর হয়েই গত ১৮ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নির্দেশনা জারি করে। তাতে বলা হয়েছে , এখন থেকে খেলাপি ঋণে কী সুবিধা দেওয়া হবে তা নির্ধারণ করতে পারবে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ। ব্যাংক মালিকরাই এখন ঋণখেলাপিদের কী সুবিধা দেওয়া যাবে তা ঠিক করে দেবেন। আগে বিশেষ সুবিধায় ঋণ নিয়মিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন লাগলেও সেই ক্ষমতা পুরোটাই ব্যাংকগুলোর হাতে দেওয়া হয়েছে।

নতুন নির্দেশনায়, খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে আড়াই থেকে সাড়ে চার শতাংশ অর্থ জমা দিতে বলা হয়েছে। আগে নিয়মিত করতে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হতো। আগে এ ধরনের ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় থাকলেও সময় বাড়িয়ে তা ৫ থেকে ৮ বছরে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। ৫০ কোটি থেকে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ স্থিতিকারিরা এই সুবিধা পাবেন। শুধু তাই নয়, পুনঃতফসিলকৃত ঋণ পুনরায় খেলাপি হওয়ার পূর্বে কোনো পুনঃতফসিলকৃত ঋণকে ‘খেলাপি ঋণ’ এবং গ্রাহককে ‘খেলাপি ঋণগ্রহীতা’ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না।

সর্বশেষ চলতি বছরে গত ২০ জুলাই ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত ও ঋণের সুদহার বেঁধে দেওয়ার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এই খাতে। সুদহার বেঁধে দেওয়ার পর আমানত হারাচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। গত এক বছরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত কমেছে হাজার কোটি টাকার ওপরে।

বিলাসপণ্য আমদানিতে কড়াকড়ির রেকর্ড

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব মারাত্মকভাবে পড়ে দেশে। কারণ তেল, চিনি, গুড়া দুধসহ প্রায় পণ্য আমদানি নির্ভর হওয়ায় ডলারে টান পড়ে। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দেয় এলসি খুলতে। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সুরক্ষিত করতে আমদানি বিকল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নতুন পুনঃঅর্থায়ন স্কীম চালু করে। একইসঙ্গে বিলাস জাতীয় দ্রব্য, বিদেশি ফল, অশস্য খাদ্যপণ্য, চিনজাত ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে এলসি ঋণ মার্জিন ৭৫ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়া, আমদানি ব্যয়ের লাগাম টানতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক গাড়ি, টিভি, ফ্রিজ, স্বর্ণসহ ২৭ পণ্যে শতভাগ এলসি মার্জিন নির্ধারণের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। বিলাসবহুল পণ্য আমদানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ, রপ্তানি বিল পাওয়ার এক দিনের মধ্যে নগদায়ন, বিদেশ ভ্রমণে কড়াকড়িসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।

আমদানি ব্যয়ের চাপ কমাতে বিলাসীপণ্য আমদানির লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক। মোটরকার, হোম অ্যাপ্লায়েন্স হিসেবে ব্যবহৃত ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করার কথা বলা হয়। একইসঙ্গে অতি জরুরি পণ্য ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে বলা হয়।

বেশি দামে ডলার বিক্রি করায় জরিমানা

মে মাস থেকে ডলারের বাজার অস্থির হয়ে যায়। এ সুযোগে কিছু মানি এক্সচেঞ্জ যোগসাজস করায় ৮৬ টাকার ডলারের দাম ১১০টাকা ছড়িয়ে গেছে। তা এ নিয়ে দেশে হই-চই পড়লে বাংলাদেশ ব্যাংক অভিযান শুরু করে। ডলারে কারসাজি করায় ২ আগস্ট পাঁচটি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৪২ মানি এক্সচেঞ্জকে শোকজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ ছাড়া, মার্কিন ডলারের সংকটকে পুঁজি করে অনৈতিক সুবিধা নেয় ১২ ব্যাংক। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার মজুত করে বড় অঙ্কের মুনাফা করে তারা। কোনো কোনো ব্যাংক ডলার বিক্রি করে ৭৭০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের কারণে ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ও বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এমডিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অর্থপাচারের তথ্য অধরা

চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লোক গেছেন এক লাখের বেশি। এভাবে চলতি বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাজের উদ্দেশে বাংলাদেশ থেকে ১১ লাখ কর্মী গেছেন। কিন্তু তারপরও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসছে কম। বেড়েছে হুন্ডির রমরমা ব্যবসা। করোনার সময় দেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

অপরদিকে, বাণিজ্যের আড়ালে বিভিন্ন ফাঁক ফোকরে দেশ থেকে প্রচৃর অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। বহু সন্দেহজনক লেনদেনও হচ্ছে। তারপরও এর সঠিক চিত্র তুলে ধরতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ এর প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস সম্প্রতি এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের কৌশলগত দুর্বলতা এবং উদার অর্থনীতির সুযোগ নিয়ে লন্ডারিংকৃত অর্থ সহজেই বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে ঢুকে পড়ে। আবার খুব সহজে ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যায়। এসব অর্থ ফেরাতে বাধ্য হয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট বক্ততায় বলেছেন, ‘পাচার হওয়া টাকা দেশে ফেরত আনলে কথা দিচ্ছি কোনো প্রশ্ন করা হবে না। স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, অস্থাবর সম্পত্তিতে ১০ শতাংশ এবং নগদ টাকা আনলে ৭ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করা যাবে। এই সুযোগ চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে। তারপরও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নির্দেশ

খেলাপি ঋণ হুহু করে বাড়তে থাকলেও সেদিকে নজর না দিয়ে ব্যয় কমানোর অজুহাতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে কর্মকর্তাদের চাকুরিচ্যুতির হিড়িক পড়ে এই বছরে। তা বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে আসলে বাধ্য হয়ে বছরের শুরুতেই ২৫ জানুয়ারি নির্দেশনা জারি করে। তাতে বলা হয় আমানত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অজর্ন করতে না পারা বা কোনোরূপ প্রমাণিত অভিযোগ ছাড়াই অদক্ষতার অজুহাত দেখিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি হতে বঞ্চিত বা চাকুরিচ্যুত বা পদত্যাগে বাধ্য করা যাবে না। তা পালন করতে তফসিলভুক্ত সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় অন্য এক সার্কুলারে দেশের বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি শুরুর বেতনকাঠামোও বেঁধে দেওয়া হয়। তাতে অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার/ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার/ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশ অফিসার অথবা সমপর্যায়ের কর্মকর্তা-যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, ব্যাংকের অ্যান্ট্রি লেভেলে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের শিক্ষানবিশকালে ন্যূনতম বেতন হবে ২৮ হাজার টাকা। আর শিক্ষানবিশকাল শেষে এ ধরনের ব্যাংক কর্মকর্তাদের শুরুর মূল বেতনসহ ন্যূনতম মোট বেতন-ভাতা হবে ৩৯ হাজার টাকা।

জেডএ/এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের চৌকা সীমান্তে

বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ ঘিরে উত্তেজনা, বিজিবির সতর্ক অবস্থান  

ছবিঃ সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের চৌকা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ নিয়ে দু’দিন ধরে উত্তেজনা চলছে। এরই মধ‍্যে সোম ও মঙ্গলবার বিকেলে বিজিবি-বিএসএফের দুই দফা পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তবে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি তারা। উভয় বাহিনী সীমান্তে বতর্মানে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। নিজেদের টহল কার্যক্রম বাড়িয়েছে বিজিবি।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিজিবির-৫৯ ব্যাটালিয়নের চৌকা বিওপির অধীনস্থ পিলার নম্বর ১৭৭ এর ১ এস, ২ এস ও ৩ এস এলাকার বিপরীতে ভারতীয় অংশে সীমান্তে রাস্তা নির্মাণের কাজ করতে দেখা যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওই এলাকায় সতর্ক অবস্থান নিয়েছে বিজিবি, বাড়িয়েছে নিজেদের টহল।

এদিকে মঙ্গলবার বিকালে সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন বিজিবির ৫৯ ব্যাটালিয়নের লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া।

৫৯ ব্যাটালিয়নের লে. কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, ঠিক রাস্তা নির্মাণ নয়, রাস্তা নির্মাণের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে মাটি খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করেছিল। সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি জানান, ভারতের পক্ষ থেকে তাদের সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। আমাদের বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আমরাও আমাদের সীমান্তে এলাকায় বিজিবি মোতায়েন রেখেছি। সাধারণ মানুষের ভয়ের কোনো কারণ নেই।

এদিকে সীমান্তে বাংলাদেশের ভূমি রক্ষায় স্থানীয় বাংলাদেশিরা ক্ষোভ জানিয়েছেন এবং বিএসএফের অবৈধ কর্মকাণ্ডকে প্রতিহত করতে বিজিবির সঙ্গে তারাও দিনব‍্যাপী সীমান্তে অবস্থান নেন। একইভাবে বিএসএফের সঙ্গে ভারতের নাগরিকদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই সীমান্তে অতিরিক্ত বিজিবি মোতায়েন করা হয় এবং বিজিবির সেক্টর কমান্ডারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পরও অবস্থান করছেন।

Header Ad
Header Ad

খালেদা জিয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বার্তা দিয়ে গেছেন: মির্জা ফখরুল  

ছবিঃ সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র যেন প্রতিষ্ঠা করা হয়, গণতন্ত্রকে যেন আমরা সবাই মিলে প্রতিষ্ঠা করি এই বার্তাটি দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বেগম খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা ত্যাগ করার পর মঙ্গলবার রাতে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান বিএনপি মহাসচিব।

সুচিকিৎসা করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দ্রুতই আবার দেশের মানুষের কাছে ফিরে আসবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, যাওয়ার সময় তিনি (খালেদা জিয়া) আবারও দেশবাসীকে বলেছেন যে, তারা যেন আমার জন্য দোয়া করেন, আমিও আল্লাহর কাছে এই দোয়া চাই দেশবাসীকে যেন ভালো রাখেন, তাদের কল্যাণ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতনে মিথ্যা মামলায় বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ছয় বছর আটক করে রাখা হয়। আটক করে রাখার সময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। তারপর আমরা বারবার বলেছি, বিদেশে নেওয়ার জন্য সুযোগ দিন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনা কোনো কথাতেই কর্ণপাত করেননি।

তিনি বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পাঁচ আগস্ট হাসিনা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পরে আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পূর্ণ মুক্ত হয়েছেন মিথ্যা মামলা থেকে। তিনি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেছেন এটা আল্লাহর জন্য শুকরিয়া জানাচ্ছি।

Header Ad
Header Ad

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক  

ছবিঃ সংগৃহীত

রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ বিষয়ে ব্রিফ করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

শফিকুল আলম বলেন, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে আয়োজিত এ বৈঠকে নির্বাচন, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে করণীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, বর্ধিত সময়সীমার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ছয়টি সংস্কার কমিশনের মধ্যে পাঁচটি ১৫ জানুয়ারির মধ্যে তাদের প্রতিবেদন জমা দেবে বলে আশা করছে সরকার।

এই ছয়টি কমিশন হলো বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, সরফরাজ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশন, বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মোমিনুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বিচার বিভাগীয় সংস্কার কমিশন, টিআইবির ইফতেখারুজ্জামানের নেতৃত্বে দুর্নীতি দমন কমিশন, আবদুল মুয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন এবং ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির বিশিষ্ট অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সংবিধান সংস্কার কমিশন।

এ সময় জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে জাতির উদ্দেশে ভাষণে যা বলেছেন, তা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ ঘিরে উত্তেজনা, বিজিবির সতর্ক অবস্থান  
খালেদা জিয়া গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বার্তা দিয়ে গেছেন: মির্জা ফখরুল  
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক  
মেটা প্ল্যাটফর্মে থাকছে না ফ্যাক্টচেকার, বাড়বে রাজনৈতিক কনটেন্ট: জাকারবার্গ  
হাসিনাকে দীর্ঘমেয়াদি থাকার অনুমতি দিলো ভারত  
ইউরোপে পোঁছানোর চেষ্টায় সাগরে প্রাণ গেলো ২,২০০ অভিবাসীর  
ই-সিগারেট আমদানি নিষিদ্ধ করল সরকার  
ঢাবি থেকে সাত কলেজকে আলাদা করতে কমিশন ও শিক্ষার্থীদের বৈঠক বুধবার
প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে ৯৮ কোটি টাকার অনুদান সংগ্রহ
এবার শাহীনকে ধরা হলো বিমানবন্দরে! আদালতে সোপর্দ
হৃদয়-মেয়ার্সের জুটিতে বরিশালের সহজ জয়
‘ফিরোজা’ থেকে বিমানবন্দরের পথে খালেদা জিয়া
কানাডার অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম অঙ্গরাজ্য হিসেবে তাঁদের দেশকে দেখতে চান: ট্রাম্প
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল
পাঁচদশক আড়ালে থাকা মেজর ডালিম বাংলাদেশে ফিরছেন!
সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ছোট ভাই মৃদুল গ্রেপ্তার
জুলাই-আগস্ট গণহত্যার ন্যায়বিচার দেখতে চান প্রধান বিচারপতি
আবারও বাড়বে শীতের দাপট, ঘন কুয়াশার সঙ্গে থাকবে ঠাণ্ডা বাতাস
পরিবারসহ নাফিজ সারাফতের বাড়ি, জমি ও ফ্ল্যাট ক্রোকের আদেশ
শিবগঞ্জ-মালদা সীমান্তে কাঁটাতার দেয়া নিয়ে বিজিবি-বিএসএফের উত্তেজনা