শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

বছরজুড়ে ভোগান্তির রেকর্ডে ব্যাংকিং খাত

করোনার ধকল সামলে উঠতে না উঠতে বছরের শুরুতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাণ্ডবে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। বিশ্বে পণ্যের দাম লাগামহীন হয়ে পড়লে ডলারের দাম লাগামহীন হয়ে পড়ে। ৮৬ থেকে বেড়ে ১১৫ টাকা হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে থাকে।

বিলাসী পণ্যের শতভাগ ঋণ মার্জিন ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারপরও ঠেকানো যাচ্ছে না রিজার্ভ সংকট। ৪৬ বিলিয়ন থেকে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নামমাত্র ডাউন পেমেন্ট দিয়ে খেলাপির তকমা কমাতে ঋণ পুনঃতফসিলকরণ ব্যাংকের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। তারপরও ঋণ গ্রহীতারা ঠিকমতো তা পরিশোধ করছেন না। এর ফলে এক লাখ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকায়। এভাবে ব্যাংকিং খাাত সারাবছরই ভুগিয়েছে দেশের মানুষকে।

অস্থির ডলারের বাজারে রিজার্ভে টান

আমদানি ব্যয় মেটাতে হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে। এক সময়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থাকলেও কারও মুখে কোনো টু শব্দ দেখা যায়নি। কিন্তু করোনার পরে আমদানি ব্যয় মেটোতে হলে রিচার্ভে বাড়তে থাকে চাপ। চলতি বছরের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ কমে ছিল ৪৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হলে আকাশে দেখা দেয় মেঘ। অর্থনীতিতে মারাত্বকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। দেশের প্রায় নিত্যপণ্য আমদানি নির্ভর হওয়ায় বাড়তে থাকে ডলারের চাহিদা।

এর ফলে বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে প্রতি ডলার ৮৬ টাকায় বিনিময় হলেও প্রতি মাসে বাড়তে থাকে চলারের চাহিদা। এ কারণে দামও বাড়তে থাকে। সেপ্টেম্বরে ১১৫ টাকায় উঠে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক দাম নির্ধারণ করেও তা রুখতে পারেনি। পরে ব্যাংকের দাবির মুখে তা বাজারের উপর ছেড়ে দেয়। বাফেদার হাতে ডলার ছেড়ে দিলেও তা ১০৭ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। আর খোলা বাজারে তা ১২০ পর্যন্ত ডলার বেচাকেনা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও প্রতিদিন রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। তারপরও মিটছে না ডলারের সংকট। কোনো ব্যবসায়ীই ঠিকমতো এলসি ঋণপত্র খুলতে পারছে না।

বাধ্য হয়ে চলতি বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করেছে ৯৫০ কোটি মার্কিন ডলার। যা আগের চেয়ে অনেক বেশি। ডলার বিক্রি করতে থাকায় রিজার্ভের পরিমাণও দিন দিন কমছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৪০০ কোটি (৩৪ বিলিয়ন) ডলারে নেমে গেছে। এ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলসহ কয়েকটি তহবিলে বিনিয়োগ করা হয়েছে ৮০০ কোটি (৮ বিলিয়ন) ডলার।

এই তহবিলের বিনিয়োগ রিজার্ভ হিসেবে মানতে নারাজ আইএমএফ। তা নিয়ে ব্যাপকভাবে সমালোচনার ঝড় উছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য হচ্ছে এই বিনিয়োগ করা অর্থও রিজার্ভের। কাজেই এটা বাদ দিলে রিজার্ভ থাকে ২৬০০ কোটি (২৬ বিলিয়ন) ডলার, যা দিয়ে বর্তমানে সাড়ে চার মাসের ব্যয় মেটানো সম্ভব। এটা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।

হুন্ডির রমরমা ব্যবসাতে রেমিট্যান্সে ভাটা

আমদানির লাগাম টানতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও ডলারের সংকট কমেনি। সরকার রেমিট্যান্স বৃদ্ধি করতে গত জানুয়ারিতে আড়াই শতাংশ প্রণোদনাও ঘোষণা করেছে। তারপরও দেশে বৈধ চ্যানেলের চেয়ে অবৈধ পথে শুধু ঘোষণার মাধ্যমেই হুন্ডিতেই বেশি আসছে রেমিট্যান্স। ডলার নিয়ে দেশে সংকট সৃষ্টি হওয়ায় প্রবাসী আয়ে এক দর বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরফলে কোনো ব্যাংক বেশি দামে বিদেশ থেকে আয় সংগ্রহ করতে পারবে না। অন্যদিকে, দেশে মার্কিন ডলারের চরম সংকট দেখা দেওয়ায় সরকারের আমদানি দায় পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছাড়েও লাগামহীন খেলাপি ঋণ

২০২০ সালের মার্চে করোনা শুরু হলে গত দুই বছর ধরে ঋণ আদায়ে নানাভাবে ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যবসায়ীদের রক্ষা করতে ২০২০ সালের শুরু থেকেই মাত্র দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ নবায়নে ছাড় দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল শপথ নিয়েই বলেছিলেন, ‘আজ থেকে আর এক টাকাও খেলাপি ঋণ বাড়বে না।’

ব্যাংক মালিকরাও বলেছিলেন, এটা কার্যকর করা হবে। তারপরও বাড়ছে খেলাপি ঋণ। কোনোক্রমেই ঠেকানো যাচ্ছে না। বিভিন্নভাবে ঋণ নিয়ে অনেকে ঠিকমতো তারা পারিশোধ করছেন না। এরফলে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকার বেশি, যা মোট ঋণের প্রায় ৮ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব মতে, সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর নয় মাসে খেলাপি বেড়েছে ৩১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা।

ডিসেম্বর প্রান্তিকের কেলাপি এখনো প্রকাশ করা হয়নি। এটা করা হলে খেলাপি ঋণ আরও বৃদ্ধি পাবে।

সাবেক অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর হয়েই গত ১৮ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নির্দেশনা জারি করে। তাতে বলা হয়েছে , এখন থেকে খেলাপি ঋণে কী সুবিধা দেওয়া হবে তা নির্ধারণ করতে পারবে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ। ব্যাংক মালিকরাই এখন ঋণখেলাপিদের কী সুবিধা দেওয়া যাবে তা ঠিক করে দেবেন। আগে বিশেষ সুবিধায় ঋণ নিয়মিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন লাগলেও সেই ক্ষমতা পুরোটাই ব্যাংকগুলোর হাতে দেওয়া হয়েছে।

নতুন নির্দেশনায়, খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে আড়াই থেকে সাড়ে চার শতাংশ অর্থ জমা দিতে বলা হয়েছে। আগে নিয়মিত করতে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হতো। আগে এ ধরনের ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় থাকলেও সময় বাড়িয়ে তা ৫ থেকে ৮ বছরে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। ৫০ কোটি থেকে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ স্থিতিকারিরা এই সুবিধা পাবেন। শুধু তাই নয়, পুনঃতফসিলকৃত ঋণ পুনরায় খেলাপি হওয়ার পূর্বে কোনো পুনঃতফসিলকৃত ঋণকে ‘খেলাপি ঋণ’ এবং গ্রাহককে ‘খেলাপি ঋণগ্রহীতা’ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না।

সর্বশেষ চলতি বছরে গত ২০ জুলাই ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত ও ঋণের সুদহার বেঁধে দেওয়ার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এই খাতে। সুদহার বেঁধে দেওয়ার পর আমানত হারাচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। গত এক বছরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত কমেছে হাজার কোটি টাকার ওপরে।

বিলাসপণ্য আমদানিতে কড়াকড়ির রেকর্ড

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব মারাত্মকভাবে পড়ে দেশে। কারণ তেল, চিনি, গুড়া দুধসহ প্রায় পণ্য আমদানি নির্ভর হওয়ায় ডলারে টান পড়ে। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দেয় এলসি খুলতে। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সুরক্ষিত করতে আমদানি বিকল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নতুন পুনঃঅর্থায়ন স্কীম চালু করে। একইসঙ্গে বিলাস জাতীয় দ্রব্য, বিদেশি ফল, অশস্য খাদ্যপণ্য, চিনজাত ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে এলসি ঋণ মার্জিন ৭৫ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়া, আমদানি ব্যয়ের লাগাম টানতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক গাড়ি, টিভি, ফ্রিজ, স্বর্ণসহ ২৭ পণ্যে শতভাগ এলসি মার্জিন নির্ধারণের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। বিলাসবহুল পণ্য আমদানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ, রপ্তানি বিল পাওয়ার এক দিনের মধ্যে নগদায়ন, বিদেশ ভ্রমণে কড়াকড়িসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।

আমদানি ব্যয়ের চাপ কমাতে বিলাসীপণ্য আমদানির লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক। মোটরকার, হোম অ্যাপ্লায়েন্স হিসেবে ব্যবহৃত ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করার কথা বলা হয়। একইসঙ্গে অতি জরুরি পণ্য ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে বলা হয়।

বেশি দামে ডলার বিক্রি করায় জরিমানা

মে মাস থেকে ডলারের বাজার অস্থির হয়ে যায়। এ সুযোগে কিছু মানি এক্সচেঞ্জ যোগসাজস করায় ৮৬ টাকার ডলারের দাম ১১০টাকা ছড়িয়ে গেছে। তা এ নিয়ে দেশে হই-চই পড়লে বাংলাদেশ ব্যাংক অভিযান শুরু করে। ডলারে কারসাজি করায় ২ আগস্ট পাঁচটি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৪২ মানি এক্সচেঞ্জকে শোকজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ ছাড়া, মার্কিন ডলারের সংকটকে পুঁজি করে অনৈতিক সুবিধা নেয় ১২ ব্যাংক। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার মজুত করে বড় অঙ্কের মুনাফা করে তারা। কোনো কোনো ব্যাংক ডলার বিক্রি করে ৭৭০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের কারণে ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ও বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এমডিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অর্থপাচারের তথ্য অধরা

চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লোক গেছেন এক লাখের বেশি। এভাবে চলতি বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাজের উদ্দেশে বাংলাদেশ থেকে ১১ লাখ কর্মী গেছেন। কিন্তু তারপরও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসছে কম। বেড়েছে হুন্ডির রমরমা ব্যবসা। করোনার সময় দেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

অপরদিকে, বাণিজ্যের আড়ালে বিভিন্ন ফাঁক ফোকরে দেশ থেকে প্রচৃর অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। বহু সন্দেহজনক লেনদেনও হচ্ছে। তারপরও এর সঠিক চিত্র তুলে ধরতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ এর প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস সম্প্রতি এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের কৌশলগত দুর্বলতা এবং উদার অর্থনীতির সুযোগ নিয়ে লন্ডারিংকৃত অর্থ সহজেই বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে ঢুকে পড়ে। আবার খুব সহজে ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যায়। এসব অর্থ ফেরাতে বাধ্য হয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট বক্ততায় বলেছেন, ‘পাচার হওয়া টাকা দেশে ফেরত আনলে কথা দিচ্ছি কোনো প্রশ্ন করা হবে না। স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, অস্থাবর সম্পত্তিতে ১০ শতাংশ এবং নগদ টাকা আনলে ৭ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করা যাবে। এই সুযোগ চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে। তারপরও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নির্দেশ

খেলাপি ঋণ হুহু করে বাড়তে থাকলেও সেদিকে নজর না দিয়ে ব্যয় কমানোর অজুহাতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে কর্মকর্তাদের চাকুরিচ্যুতির হিড়িক পড়ে এই বছরে। তা বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে আসলে বাধ্য হয়ে বছরের শুরুতেই ২৫ জানুয়ারি নির্দেশনা জারি করে। তাতে বলা হয় আমানত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অজর্ন করতে না পারা বা কোনোরূপ প্রমাণিত অভিযোগ ছাড়াই অদক্ষতার অজুহাত দেখিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি হতে বঞ্চিত বা চাকুরিচ্যুত বা পদত্যাগে বাধ্য করা যাবে না। তা পালন করতে তফসিলভুক্ত সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় অন্য এক সার্কুলারে দেশের বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি শুরুর বেতনকাঠামোও বেঁধে দেওয়া হয়। তাতে অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার/ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার/ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশ অফিসার অথবা সমপর্যায়ের কর্মকর্তা-যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, ব্যাংকের অ্যান্ট্রি লেভেলে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের শিক্ষানবিশকালে ন্যূনতম বেতন হবে ২৮ হাজার টাকা। আর শিক্ষানবিশকাল শেষে এ ধরনের ব্যাংক কর্মকর্তাদের শুরুর মূল বেতনসহ ন্যূনতম মোট বেতন-ভাতা হবে ৩৯ হাজার টাকা।

জেডএ/এমএমএ/

Header Ad

৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি

ছবি: সংগৃহীত

তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে ৮ ক্রিকেটারসহ মোট ৯ জনকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। নিয়ম অমান্য করায় এই ক্রিকেটারদের প্রত্যেককে ১ বছরের নিষেধাজ্ঞা এবং ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে বিসিবি।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের পক্ষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আচরণ বিধি লঙ্ঘনের দায়ে ৮ ক্রিকেটার ও এক ক্লাব কর্তাকে ১ বছরের জন্য নিষিদ্ধ এবং সবাইকে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা গুনতে হবে।

এতে আরও বলা হয়েছে, ঘরোয়া ক্রিকেটের কোনো পর্যায়েই শৃঙ্খলাভঙ্গের কোনো ধরনের ঘটনায় নমনীয় হবে না বিসিবি। তাই এটিকে ক্রিকেটার ও কর্মকর্তাদের প্রতি বার্তা হিসেবে নেওয়া যায় যে, আচরণবিধি ভঙ্গের ঘটনায় বোর্ড কঠোর পদক্ষেপ নেবে।

ওই ৮ ক্রিকেটার হলেন, তেজগাঁও একাডেমির ইয়াসিন আরাফাত, রিফাত আল ইমন (অনিক), তাসিন আহমেদ রনবি, রাব্বি হাসান, পারভেজ আহমেদ জয়। স্যাফায়ার স্পোর্টিং ক্লাবের রানা খান, সাইফুল ইসলাম শাওন ও মোহাম্মদ হৃদয়। আর তেজগাঁও ক্লাবের কর্মকর্তা রবিন।

জানা গেছে, গত সোমবার পিকেএসফ ১ নম্বর মাঠে হওয়া সুপার লিগের ম্যাচে তেজগাঁও ক্রিকেট একাডেমি ও স্যাফায়ার স্পোর্টিং ক্লাবের ক্রিকেটাররা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। পরে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রোপলিসের টেকনিক্যাল কমিটি ঘটনার প্রমাণ সাপেক্ষে তাদের শাস্তি দেয়।

Header Ad

উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী

বক্তব্য রাখছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনগণের দুর্ভোগের মধ্যে উপদেষ্টাদের অযাচিত কার্যকলাপ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না বলে সতর্ক করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে শ্রমিক সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, জনগণের দুর্ভোগ আগের মতোই রয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। উপদেষ্টারা চাকরিজীবীর মতো কাজ করছেন। তাদের কাজে বিপ্লবের গতিশীলতা নেই।

তিনি বলেন, বিদেশে বসে শেখ হাসিনা গুজব ছড়িয়ে দুর্বৃত্তদের উসকানি দিচ্ছে। ক্ষমতা নিশ্চিত করার জন্যই গত ১৫ বছর পুলিশ দিয়ে হত্যা ও নির্যাতন চালানো হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, কারাগারের সালমান এফ রহমান বহাল তবিয়তে রয়েছেন। সেখানে সে খুব তৎপরতা চালাচ্ছে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এখনও বঞ্চিত হচ্ছে। আন্দোলনে ছিল এমন পরিচয়ে কিছু মানুষ সব পদ দখল করে নিচ্ছে।

এ সময় আন্দোলনে হতাহতদের মাসিক ভাতা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে বলেও জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।

Header Ad

ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ

ছবি: সংগৃহীত

ভূমি এবং বেসামরিক বিমান, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ এম হাসান আরিফ জানিয়েছেন, ভারত বাংলাদেশিদের জন্য কবে থেকে ভিসা উন্মুক্ত করে দিবে, তা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার, এটা নিয়ে সরকারের কোনো বক্তব্য দেয়ার কিছু নেই।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) গাজীপুরের কালিয়াকৈরের সফিপুর নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্সের উদ্বোধন কালে এসব কথা বলেন তিনি।

হাসান আরিফ বলেন, দেশের পর্যটন বিকাশে তার মন্ত্রণালয় বিশদ পরিকল্পনা নিয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরবর্তীতে সাংবাদিকদের জানানো হবে।

এ সময় তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের দানকৃত জমিতে গড়ে তোলা হবে হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। সমাজে অবস্থার কারণে বিভিন্নভাবে রোহিঙ্গাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। ওয়ামী তাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। তবে শিক্ষার পাশাপাশি যুব সমাজকে এগিয়ে নিতে ওয়ামি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। অন্যতম মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি উপস্থিত সৌদি রাষ্ট্রদূতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন, সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান,ওয়ামী সচিবালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর ড. আব্দুল হামিদ ইউসুফ আল মাজরু, ওয়ামী কার্যালয়ের বৈদেশিক অফিস ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ডিরেক্টর সাআ’দ আব্দুল্লাহ বিন জাবর ও ত্রাণ বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুল মালেক আল আমের প্রমুখ। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন, জেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহামেদ, উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার দিল আফরোজ।

এর আগে পবিত্র কুরআন তেলাওয়াতের পর ভ্রাতৃপ্রতিম বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্স ভবনে রয়েছে দ্বিতল বিশিষ্ট সুপরিসর মসজিদ, ১০০ জন এতিম শিশুর জন্য উন্নত মানসম্পন্ন আবাসন ব্যবস্থা, ১টি ক্যাডেট মাদ্রাসা, ১টি নুরানী ও হিফজ মাদরাসা, ১টি লাইব্রেরি হল, ১টি হলরুম ও কনফারেন্স রুম, তরুণ শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল লার্নিং জন্য একটি আইটি প্রশিক্ষণ সেন্টার ও ডাইনিং হল। এ ছাড়াও কমপ্লেক্স এর অবশিষ্ট পরিকল্পনার মধ্যে একটি হাসপাতাল, স্কুল, ভোকেশনাল সেন্টার, প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ডরমিটরি ও প্লে গ্রাউন্ড নির্মাণের বিষয় তিনি উল্লেখ করেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী
ভিসা কবে উন্মুক্ত করবে সেটা ভারতের নিজস্ব ব্যাপার: হাসান আরিফ
জুরাইন রেলক্রসিং ছাড়লেন রিকশাচালকরা, ৪ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল শুরু
পাঁচ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
সাফজয়ী নারী ফুটবলার আইরিনকে নওগাঁয় সংবর্ধনা
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দেবে পাকিস্তান
বেনাপোলে সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল উদ্ধার
পুলিশ-অটোরিকশা চালক সংঘর্ষ, ঢাকা-পদ্মা সেতু ট্রেন চলাচল বন্ধ
ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ৪৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন
তামিমকে অধিনায়ক করে বাংলাদেশের দল ঘোষণা
নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ