মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫ | ১৮ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

বছরজুড়ে ভোগান্তির রেকর্ডে ব্যাংকিং খাত

করোনার ধকল সামলে উঠতে না উঠতে বছরের শুরুতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তাণ্ডবে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। বিশ্বে পণ্যের দাম লাগামহীন হয়ে পড়লে ডলারের দাম লাগামহীন হয়ে পড়ে। ৮৬ থেকে বেড়ে ১১৫ টাকা হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করতে থাকে।

বিলাসী পণ্যের শতভাগ ঋণ মার্জিন ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারপরও ঠেকানো যাচ্ছে না রিজার্ভ সংকট। ৪৬ বিলিয়ন থেকে ৩৪ বিলিয়ন ডলারে নেমে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক নামমাত্র ডাউন পেমেন্ট দিয়ে খেলাপির তকমা কমাতে ঋণ পুনঃতফসিলকরণ ব্যাংকের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। তারপরও ঋণ গ্রহীতারা ঠিকমতো তা পরিশোধ করছেন না। এর ফলে এক লাখ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকায়। এভাবে ব্যাংকিং খাাত সারাবছরই ভুগিয়েছে দেশের মানুষকে।

অস্থির ডলারের বাজারে রিজার্ভে টান

আমদানি ব্যয় মেটাতে হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে। এক সময়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থাকলেও কারও মুখে কোনো টু শব্দ দেখা যায়নি। কিন্তু করোনার পরে আমদানি ব্যয় মেটোতে হলে রিচার্ভে বাড়তে থাকে চাপ। চলতি বছরের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ কমে ছিল ৪৬ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হলে আকাশে দেখা দেয় মেঘ। অর্থনীতিতে মারাত্বকভাবে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। দেশের প্রায় নিত্যপণ্য আমদানি নির্ভর হওয়ায় বাড়তে থাকে ডলারের চাহিদা।

এর ফলে বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসে প্রতি ডলার ৮৬ টাকায় বিনিময় হলেও প্রতি মাসে বাড়তে থাকে চলারের চাহিদা। এ কারণে দামও বাড়তে থাকে। সেপ্টেম্বরে ১১৫ টাকায় উঠে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংক দাম নির্ধারণ করেও তা রুখতে পারেনি। পরে ব্যাংকের দাবির মুখে তা বাজারের উপর ছেড়ে দেয়। বাফেদার হাতে ডলার ছেড়ে দিলেও তা ১০৭ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। আর খোলা বাজারে তা ১২০ পর্যন্ত ডলার বেচাকেনা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকেও প্রতিদিন রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। তারপরও মিটছে না ডলারের সংকট। কোনো ব্যবসায়ীই ঠিকমতো এলসি ঋণপত্র খুলতে পারছে না।

বাধ্য হয়ে চলতি বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করেছে ৯৫০ কোটি মার্কিন ডলার। যা আগের চেয়ে অনেক বেশি। ডলার বিক্রি করতে থাকায় রিজার্ভের পরিমাণও দিন দিন কমছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৪০০ কোটি (৩৪ বিলিয়ন) ডলারে নেমে গেছে। এ থেকে রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলসহ কয়েকটি তহবিলে বিনিয়োগ করা হয়েছে ৮০০ কোটি (৮ বিলিয়ন) ডলার।

এই তহবিলের বিনিয়োগ রিজার্ভ হিসেবে মানতে নারাজ আইএমএফ। তা নিয়ে ব্যাপকভাবে সমালোচনার ঝড় উছে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য হচ্ছে এই বিনিয়োগ করা অর্থও রিজার্ভের। কাজেই এটা বাদ দিলে রিজার্ভ থাকে ২৬০০ কোটি (২৬ বিলিয়ন) ডলার, যা দিয়ে বর্তমানে সাড়ে চার মাসের ব্যয় মেটানো সম্ভব। এটা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই।

হুন্ডির রমরমা ব্যবসাতে রেমিট্যান্সে ভাটা

আমদানির লাগাম টানতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও ডলারের সংকট কমেনি। সরকার রেমিট্যান্স বৃদ্ধি করতে গত জানুয়ারিতে আড়াই শতাংশ প্রণোদনাও ঘোষণা করেছে। তারপরও দেশে বৈধ চ্যানেলের চেয়ে অবৈধ পথে শুধু ঘোষণার মাধ্যমেই হুন্ডিতেই বেশি আসছে রেমিট্যান্স। ডলার নিয়ে দেশে সংকট সৃষ্টি হওয়ায় প্রবাসী আয়ে এক দর বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরফলে কোনো ব্যাংক বেশি দামে বিদেশ থেকে আয় সংগ্রহ করতে পারবে না। অন্যদিকে, দেশে মার্কিন ডলারের চরম সংকট দেখা দেওয়ায় সরকারের আমদানি দায় পরিশোধে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছাড়েও লাগামহীন খেলাপি ঋণ

২০২০ সালের মার্চে করোনা শুরু হলে গত দুই বছর ধরে ঋণ আদায়ে নানাভাবে ছাড় দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যবসায়ীদের রক্ষা করতে ২০২০ সালের শুরু থেকেই মাত্র দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে দীর্ঘ মেয়াদে ঋণ নবায়নে ছাড় দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল শপথ নিয়েই বলেছিলেন, ‘আজ থেকে আর এক টাকাও খেলাপি ঋণ বাড়বে না।’

ব্যাংক মালিকরাও বলেছিলেন, এটা কার্যকর করা হবে। তারপরও বাড়ছে খেলাপি ঋণ। কোনোক্রমেই ঠেকানো যাচ্ছে না। বিভিন্নভাবে ঋণ নিয়ে অনেকে ঠিকমতো তারা পারিশোধ করছেন না। এরফলে বাড়ছে খেলাপি ঋণ। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ২৭৩ কোটি টাকার বেশি, যা মোট ঋণের প্রায় ৮ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব মতে, সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে হয়েছে এক লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর নয় মাসে খেলাপি বেড়েছে ৩১ হাজার ১২৩ কোটি টাকা।

ডিসেম্বর প্রান্তিকের কেলাপি এখনো প্রকাশ করা হয়নি। এটা করা হলে খেলাপি ঋণ আরও বৃদ্ধি পাবে।

সাবেক অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার গভর্নর হয়েই গত ১৮ জুলাই বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নির্দেশনা জারি করে। তাতে বলা হয়েছে , এখন থেকে খেলাপি ঋণে কী সুবিধা দেওয়া হবে তা নির্ধারণ করতে পারবে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ। ব্যাংক মালিকরাই এখন ঋণখেলাপিদের কী সুবিধা দেওয়া যাবে তা ঠিক করে দেবেন। আগে বিশেষ সুবিধায় ঋণ নিয়মিত করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন লাগলেও সেই ক্ষমতা পুরোটাই ব্যাংকগুলোর হাতে দেওয়া হয়েছে।

নতুন নির্দেশনায়, খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে আড়াই থেকে সাড়ে চার শতাংশ অর্থ জমা দিতে বলা হয়েছে। আগে নিয়মিত করতে ১০ থেকে ৩০ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হতো। আগে এ ধরনের ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় থাকলেও সময় বাড়িয়ে তা ৫ থেকে ৮ বছরে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। ৫০ কোটি থেকে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ স্থিতিকারিরা এই সুবিধা পাবেন। শুধু তাই নয়, পুনঃতফসিলকৃত ঋণ পুনরায় খেলাপি হওয়ার পূর্বে কোনো পুনঃতফসিলকৃত ঋণকে ‘খেলাপি ঋণ’ এবং গ্রাহককে ‘খেলাপি ঋণগ্রহীতা’ হিসেবে বিবেচনা করা যাবে না।

সর্বশেষ চলতি বছরে গত ২০ জুলাই ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত ও ঋণের সুদহার বেঁধে দেওয়ার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এই খাতে। সুদহার বেঁধে দেওয়ার পর আমানত হারাচ্ছে এসব প্রতিষ্ঠান। গত এক বছরে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত কমেছে হাজার কোটি টাকার ওপরে।

বিলাসপণ্য আমদানিতে কড়াকড়ির রেকর্ড

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব মারাত্মকভাবে পড়ে দেশে। কারণ তেল, চিনি, গুড়া দুধসহ প্রায় পণ্য আমদানি নির্ভর হওয়ায় ডলারে টান পড়ে। বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দেয় এলসি খুলতে। আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সুরক্ষিত করতে আমদানি বিকল্প পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য নতুন পুনঃঅর্থায়ন স্কীম চালু করে। একইসঙ্গে বিলাস জাতীয় দ্রব্য, বিদেশি ফল, অশস্য খাদ্যপণ্য, চিনজাত ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে এলসি ঋণ মার্জিন ৭৫ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত করা হয়েছে।

এ ছাড়া, আমদানি ব্যয়ের লাগাম টানতে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক গাড়ি, টিভি, ফ্রিজ, স্বর্ণসহ ২৭ পণ্যে শতভাগ এলসি মার্জিন নির্ধারণের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। বিলাসবহুল পণ্য আমদানির ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ, রপ্তানি বিল পাওয়ার এক দিনের মধ্যে নগদায়ন, বিদেশ ভ্রমণে কড়াকড়িসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে।

আমদানি ব্যয়ের চাপ কমাতে বিলাসীপণ্য আমদানির লাগাম টেনে ধরে বাংলাদেশ ব্যাংক। মোটরকার, হোম অ্যাপ্লায়েন্স হিসেবে ব্যবহৃত ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর আমদানি ঋণপত্র (এলসি) খোলার ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করার কথা বলা হয়। একইসঙ্গে অতি জরুরি পণ্য ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ নগদ মার্জিন সংরক্ষণ করতে বলা হয়।

বেশি দামে ডলার বিক্রি করায় জরিমানা

মে মাস থেকে ডলারের বাজার অস্থির হয়ে যায়। এ সুযোগে কিছু মানি এক্সচেঞ্জ যোগসাজস করায় ৮৬ টাকার ডলারের দাম ১১০টাকা ছড়িয়ে গেছে। তা এ নিয়ে দেশে হই-চই পড়লে বাংলাদেশ ব্যাংক অভিযান শুরু করে। ডলারে কারসাজি করায় ২ আগস্ট পাঁচটি মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৪২ মানি এক্সচেঞ্জকে শোকজ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এ ছাড়া, মার্কিন ডলারের সংকটকে পুঁজি করে অনৈতিক সুবিধা নেয় ১২ ব্যাংক। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার মজুত করে বড় অঙ্কের মুনাফা করে তারা। কোনো কোনো ব্যাংক ডলার বিক্রি করে ৭৭০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের কারণে ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক ও বিদেশি খাতের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এমডিদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

অর্থপাচারের তথ্য অধরা

চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লোক গেছেন এক লাখের বেশি। এভাবে চলতি বছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাজের উদ্দেশে বাংলাদেশ থেকে ১১ লাখ কর্মী গেছেন। কিন্তু তারপরও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স আসছে কম। বেড়েছে হুন্ডির রমরমা ব্যবসা। করোনার সময় দেশে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে।

অপরদিকে, বাণিজ্যের আড়ালে বিভিন্ন ফাঁক ফোকরে দেশ থেকে প্রচৃর অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। বহু সন্দেহজনক লেনদেনও হচ্ছে। তারপরও এর সঠিক চিত্র তুলে ধরতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ এর প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস সম্প্রতি এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের কৌশলগত দুর্বলতা এবং উদার অর্থনীতির সুযোগ নিয়ে লন্ডারিংকৃত অর্থ সহজেই বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে ঢুকে পড়ে। আবার খুব সহজে ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব অর্থ বিদেশে পাচার হয়ে যায়। এসব অর্থ ফেরাতে বাধ্য হয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বাজেট বক্ততায় বলেছেন, ‘পাচার হওয়া টাকা দেশে ফেরত আনলে কথা দিচ্ছি কোনো প্রশ্ন করা হবে না। স্থাবর সম্পত্তির ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, অস্থাবর সম্পত্তিতে ১০ শতাংশ এবং নগদ টাকা আনলে ৭ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ করা যাবে। এই সুযোগ চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে। তারপরও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কঠোর নির্দেশ

খেলাপি ঋণ হুহু করে বাড়তে থাকলেও সেদিকে নজর না দিয়ে ব্যয় কমানোর অজুহাতে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে কর্মকর্তাদের চাকুরিচ্যুতির হিড়িক পড়ে এই বছরে। তা বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরে আসলে বাধ্য হয়ে বছরের শুরুতেই ২৫ জানুয়ারি নির্দেশনা জারি করে। তাতে বলা হয় আমানত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অজর্ন করতে না পারা বা কোনোরূপ প্রমাণিত অভিযোগ ছাড়াই অদক্ষতার অজুহাত দেখিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি হতে বঞ্চিত বা চাকুরিচ্যুত বা পদত্যাগে বাধ্য করা যাবে না। তা পালন করতে তফসিলভুক্ত সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় অন্য এক সার্কুলারে দেশের বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরি শুরুর বেতনকাঠামোও বেঁধে দেওয়া হয়। তাতে অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার/ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার/ট্রেইনি অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশ অফিসার অথবা সমপর্যায়ের কর্মকর্তা-যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, ব্যাংকের অ্যান্ট্রি লেভেলে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের শিক্ষানবিশকালে ন্যূনতম বেতন হবে ২৮ হাজার টাকা। আর শিক্ষানবিশকাল শেষে এ ধরনের ব্যাংক কর্মকর্তাদের শুরুর মূল বেতনসহ ন্যূনতম মোট বেতন-ভাতা হবে ৩৯ হাজার টাকা।

জেডএ/এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা

ছবি: সংগৃহীত

দেশের দুই বিভাগের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। একই সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে।

মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া ৬ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ কারণে এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সারা দেশের আবহাওয়া সম্পর্কে পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে সিলেট বিভাগের দু-একটি স্থানে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

এ অবস্থায় ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রপাতের সময় সাবধানতা অবলম্বন এবং নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

Header Ad
Header Ad

শান্তিপূর্ণ ঈদ উদযাপনে সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা

ছবি: সংগৃহীত

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনগণের জানমাল ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ঈদের ছুটি চলাকালীন সম্ভাব্য অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সেনাবাহিনীর বিশেষ টহল ও চেকপোস্ট কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

সোমবার (৩১ মার্চ) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে জানানো হয়, রাজধানীর নিরাপত্তা জোরদার করতে ৬ স্বতন্ত্র এডি ব্রিগেড এবং ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের অধীনস্থ ইউনিটগুলো সার্বক্ষণিক টহল পরিচালনা করছে। পাশাপাশি, রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

সাধারণ মানুষের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে এবং টিকিট কালোবাজারি রোধে বাস টার্মিনালগুলোতে সেনাবাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ ছাড়া, আজ রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঈদগাহে মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনা সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেছেন।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত এক অভিযানে সেনাবাহিনী মাদকদ্রব্যের চালান জব্দ করেছে। দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ও রাজধানীবাসীকে নির্ঝঞ্ঝাট ঈদের পরিবেশ উপহার দিতে সেনাবাহিনী অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ৮০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও কয়েকশ মানুষ। সোমবার (৩১ মার্চ) তুরস্কভিত্তিক বার্তা সংস্থা আনাদোলু এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫০ হাজার ৩৫৭ জনে পৌঁছেছে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৪ হাজার ৪০০ জন। এর মধ্যে অনেকে এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন, যাদের কাছে উদ্ধারকর্মীরা পৌঁছাতে পারছেন না।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রথম দিন রোববার (৩০ মার্চ) ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫৩ জনের মরদেহ গাজার বিভিন্ন হাসপাতালে আনা হয়। পাশাপাশি গত ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৩০৫ জন আহত হয়েছেন।

গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হয়। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ২ হাজার ৪০০ জন।

দীর্ঘ ১৫ মাসের সামরিক অভিযানের পর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। প্রায় দুই মাস ধরে তুলনামূলক শান্তি বজায় থাকলেও হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার ইস্যুতে মতানৈক্যের জেরে মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে ফের বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল।

জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে, ইসরায়েলের এই বর্বর আক্রমণের ফলে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং অঞ্চলটির ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এর আগে ২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলা চলছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকায় আন্তর্জাতিক মহলে ক্ষোভ বাড়ছে। তবে এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

দুপুরের মধ্যে ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের সম্ভাবনা
শান্তিপূর্ণ ঈদ উদযাপনে সেনাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়াল
রাজধানীতে মেট্রোরেল ও সারা দেশে আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল শুরু
যমুনা সেতু দিয়ে একসপ্তাহে ২ লাখ ৪৭ হাজার যানবাহন পারাপার, ১৭ কোটি টাকার টোল আদায়
ঈদের দিনে সড়কে মৃত্যুর মিছিল: ১০ জেলায় নিহত ২১
টঙ্গিবাড়ীতে ঈদের দিনে ১০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি, উপকৃত ৪২০ পরিবার
ঈদের দিনেও তাপপ্রবাহ অব্যাহত, এক বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা
যশোরের শার্শা সীমান্তে যুবকের লাশ উদ্ধার, আটক ১
চীনে বিশাল তেলক্ষেত্র আবিষ্কার, মজুদ ১০ কোটি টনের বেশি
রাজধানীতে সুলতানি আমলের আদলে ঈদ আনন্দ মিছিল
গাজীপুরে বাসচাপায় শিশুসহ দুই যাত্রী নিহত, আহত ৪
টাঙ্গাইলে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে পবিত্র ঈদুল জামাত অনুষ্ঠিত
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি: পরমাণু চুক্তি না হলে ইরানে বোমা হামলা ও নিষেধাজ্ঞা
লোহাগাড়ায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত
বাধা সত্ত্বেও নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা প্রধান উপদেষ্টার
ঈদের সকালেও নাড়ির টানে ছুটছে মানুষ
ঈদের দিন ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬৪ ফিলিস্তিনি
দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস
টাঙ্গাইলে ঈদের মাঠে সংঘর্ষের শঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি