‘তামাক কোম্পানিতে সরকারের মালিকানা ছেড়ে দিতে হবে’
পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ও জাতীয় তামাকবিরোধী মঞ্চের আহ্বায়ক অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ তামাক আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সংশোধনী প্রস্তাবগুলো যেন শেষ পর্যন্ত বহাল থাকে। কোম্পানিগুলোর লম্বা হাত যেন সেখানে না ঢুকতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। তামাক কোম্পানিতে সরকারের যে মালিকানা আছে সেটা ছেড়ে দিতে হবে এবং যারা নীতিনির্ধারণ করেন তারা যেন রাজস্বের দিকে না তাকিয়ে তামাকের কারণে স্বাস্থ্য খাতে যে ব্যয় হয় সেই দিকটা দেখেন।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডস (সিটিএফকে) এর সহযোগিতায় প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মা আয়োজিত ‘টেকসই উন্নয়নে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন: বাংলাদেশ পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক ভার্চুয়াল বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান।
বৈঠকে বিশেষজ্ঞ ও তামাকবিরোধী নেতারা বলেন, তামাক টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একটি বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনে সংশোধনীর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণের কোনো বিকল্প নেই।
তারা আরও বলেন, দেশে তামাক ব্যবহারের কারণে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে এবং পঙ্গুত্ববরণ করে আরও কয়েক লাখ মানুষ। তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু এবং অসুস্থতা এসডিজি’র তৃতীয় লক্ষ্যমাত্রা- সুস্বাস্থ্য অর্জনের একটি বড় বাধা। বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারকারী পরিবারগুলোর মাসিক খরচের ৫ শতাংশ তামাক ব্যবহারে এবং ১০ শতাংশ তামাক ব্যবহারজনিত রোগের চিকিৎসায় ব্যয় হয়। তামাক ব্যবহারের স্বাস্থ্য ব্যয় ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে তামাক ব্যবহারে দরিদ্র মানুষ আরও দরিদ্র হয়ে পড়ছে, যা এসডিজি’র লক্ষ্যমাত্রা-১ অর্জনে বড় বাধা।
সিটিএফকে-বাংলাদেশ এর লিড পলিসি অ্যাডভাইজর মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তামাক কোম্পানিগুলোর জনস্বাস্থ্যের ক্ষতির বিপরীতে কোনো যৌক্তিক বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ নেই। তাই তারা আইন সংশোধন ঠেকাতে মানুষের কর্মসংস্থান কমে যাওয়া, সরকার রাজস্ব হারানো ইত্যাদি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করে নীতিনির্ধারকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুমসহ বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
জেডএ/এসজি