এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে ‘জিএসপি প্লাস’ সুবিধায় গুরুত্বারোপ
স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাজারে ২০২৯ সালের পর জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রাপ্তির জন্য বাংলাদেশকে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় আলাপ আলোচনা ও প্রচেষ্টা চালাতে হবে। একই সাথে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের পর আরও ছয় বছর আন্তর্জাতিক সুযোগ সুবিধা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বাংলাদেশকে এখন থেকেই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সঙ্গে প্রয়োজনীয় আলাপ আলোচনা চালানোরও আহবান জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এক সেমিনারে সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা এই অভিমত প্রকাশ করেন। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর সাপোর্ট টু সাস্টেইনেবল গ্র্যাজুয়েশন প্রকল্পের (এসএসজিপি) আওতায় ন্যাশনাল সেমিনার অন এলডিসি গ্রাজুয়েশন শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম। উদ্বোধনী ও সমাপনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির সভাপতি ড. আহমদ কায়কাউস।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। অধিবেশনের সম্মানিত অতিথি ছিলেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ- এর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণকে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় একটি মাইলফলক। স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের ফলে শুধুমাত্র যে উন্নততর কৌশল ও কর্মপরিকল্পনাই তৈরি হবে তা নয়, বরং এর ফলে সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে অংশিদারিত্বমূলক মনোভাব তৈরি হবে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মেলবন্ধনের একটি কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের অর্থনীতির থেকে বেশি শক্তিশালী। বাংলাদেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে স্থানীয় চাহিদা ও যোগান।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ দেশে বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধি এবং শিল্পায়নের ব্যাপ্তি বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
ইআরডি সচিব শরিফা খান বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সহায়তা করবে। যা আমাদেরকে অধিকতর বৈদেশিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এবং আমাদের রপ্তানির বাজার সম্প্রসারণে সহায়তা করবে।
সমাপনী অধিবেশনের সম্মানিত অতিথি বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক মিজ গুয়েইন লুইস উত্তরণকে টেকসই করবার লক্ষ্যে একটি সুচিন্তিত, পরামর্শমূলক, সময়ভিত্তিক এবং বাস্তবায়নযোগ্য মসৃণ উত্তরণ কৌশল প্রণয়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। দিনব্যাপী সেমিনারে উত্তরণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে চারটি কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে পরপর দুইবার স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণের সকল শর্ত পূরণ করেছে। জাতিসংঘের মাধ্যমে উত্তরণের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছে। আশা করা হচ্ছে জাতিসংঘ প্রদত্ত পাঁচ বছরের প্রস্তুতিমূলক পর্ব শেষে ২০২৬ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণ হবে।
জেডএ/এএস