প্রস্তুত না হলেও শনিবার বাণিজ্যমেলা শুরু
প্রথমবারের মতো পূর্বাচলে ২৬তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা শুরু হচ্ছে শনিবার থেকে। এতে অংশ নিচ্ছে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশীপ এক্সিবিউশন সেন্টারের দুইটি হলের অবকাঠামোতে বসা দেশ-বিদেশের ২২৫টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন। কিন্তু এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত বা সাজানো হয়নি প্রায় স্টল ও প্যাভিলিয়ন। মূল অবকাঠামোর সামনে-পিছনে বড় বড় বিভিন্ন প্যাভিলন থাকছে, তবে তাও পুরোপুরি সাজানো হয়নি। শুক্রবার মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েক দিন থেকে স্টল প্যাভিলিয়ন সাজানো কাজ করা হচ্ছে। তারপরও শেষ হয়নি। জানতে চাইলে এক্সিবিউশনের ভিতরে ওয়ালটন স্টলের আর্কিটেকচার লোকমান বলেন, চার দিন থেকে কাজ করা হচ্ছে। এখনো অনেক কাজ বাকি রয়েছে। তারপরও আশা করি রাতেই শেষ করতে হবে। কারণ কালকে মেলার উদ্বোধন করা হবে। প্রাণ স্টলের মিস্ত্রী আইয়ুব বলেন, ২৮ ডিসেম্বর থেকে কাজ করছি। এখানো শেষ হয়নি। তবে যতই রাত হোক কাজ শেষ করতে হবে। এদিকে আকতার ফার্নিচারের কাজ করা অবস্থায় রবিউল বলেন, কয়েক দিন থেকে কাজ করছি। রাতে কাজ শেষ করতে হবে। সেভাবে কাজ করছি। আশা করি শেষ হয়ে যাবে। এ সময় মিরপুর থেকে আসা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘মেলা কেমনভাবে সাজানো হয়েছে তা দেখতে আগের দিন এসেছি। কিন্তু দুই দিকের ফাকা জায়গায় দেখছি স্টল ও প্যাভিলিয়ন সাজানো হয়নি।’
মেলা ঘুরে আরও দেখা গেছে, মুজিববর্ষ, মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে বিভিন্ন স্থানে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ছিল স্থায়ী ঠিকানায় বাণিজ্যমেলার আয়োজন করা। চীনের সহযোগিতায় সেটা করা সম্ভব হয়েছে। অন্য মেলায় সময় লাগত পাঁচ মাস। এবার কম সময়ে নতুন ঠিকানায় করা হচ্ছে। কখনো না কখনো শুরু করতে হবে। তাই কিছু সমস্যা থাকলেও এবার শুরু করা হচ্ছে ২৬তম বাণিজ্যমেলা।
তিনি আরও বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়েই বছরের প্রথম দিন ২৬তম বাণিজ্যমেলা শুরু করা হচ্ছে। দেশের বাণিজ্য বাড়াতে এটা করতে হচ্ছে। বিদেশিদের আকৃষ্ট করতে এ মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। মেলার মাধ্যমে তারা দেখতে পাবে আমাদের বর্তমান অবস্থা।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকায় বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হচ্ছে। করোনার কারণে গতবার মেলার আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। তবে এবারে করোনার প্রকোপ কমতে থাকায় ঢাকার বাইরে নতুন জায়গায় এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। এখানে সমস্যা কিছু আছে। তবে ৯০ শতাংশ সমাধান করা হয়েছে।
মেলার আয়োজক সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) জানায়, এক্সিবিউশন সেন্টারের প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার বর্গমিটার আয়তনের দুইটি হলে মেলায় অংশ নিচ্ছে দেশ-বিদেশের ২২৫টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন। তার মধ্যে স্থায়ী কাঠামোর ভিতরে দুই দিকে থাকবে ১৬২টি স্টল। আর বড়গুলো বাইরে থাকবে। বিভিন্ন ক্যাটাগরির মোট ২৩টি পাভিলিয়ন, ২৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন এবং দেশি-বিদেশি ১৫টি ফুড স্টল থাকছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকাল ১০টায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি মেলার উদ্বোধন করবেন। মাসব্যাপী এ মেলা সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। তবে ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত চলবে।
নারায়নগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জের কাঞ্চন ব্রিজের কাছে ৪ নম্বর সেক্টরের হঠাৎ মার্কেটের পাশে ২৬তম এ মেলার আয়োজন করছে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে মেলা প্রাঙ্গণের দূরত্ব ১৪ কিলোমিটার। অনেক দূরে হওয়ায় ৩০টি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কুড়িল থেকে ৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে মেলা যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া মিরপুর ও মতিঝিল থেকে বিআরটিসি বাসে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইপিবি কর্তৃপক্ষ।
জেএ/এসআইএইচ