মতিঝিল-মিরপুর থেকে বিআরটিসি বাসে বাণিজ্য মেলা
রাজধানীর নতুন শহর পূর্বাচলে প্রথমবারের মতো ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাচ্ছে মাসব্যপাী বাণিজ্য মেলা। সাজানো হচ্ছে ‘বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’। প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে।
কিন্তু দর্শনার্থী ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের যাতায়াতের জন্য তেমন কোন পাবলিক পরিবহন না থাকায় ইপিবি কর্তৃপক্ষ বিআরটিসি বাসের ব্যবস্থা করেছে। যা মতিঝিল ও মিরপুর থেকে কুড়িল ফ্লাইওভার হয়ে গাড়ি যাতায়াত করবে বাণিজ্য মেলায়।
সরকার নির্ধারিত প্রতি কিলোমিটার ২ দশমিক ১৫ টাকা রেটে এসব রুটে বাস চলাচল করবে। তাতে মিরপুর থেকে ৬০ টাকা ও মতিঝিল থেকে ৭০ টাকায় বাণিজ্য মেলায় যাওয়া যাবে বলে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
প্রতিবছর রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হলেও এবার পূর্বাচলে বসতে যাচ্ছে। নারায়নগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জের কাঞ্চন ব্রিজের কাছে ৪নং সেক্টরের মার্কেটের পাশে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ২৬তম এ মেলার আয়োজন করছে।
সম্প্রতি কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণে সরেজমিনে গেলে সংশ্লিষ্টরা জানান, কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে মেলা প্রাঙ্গণের দূরত্ব প্রায় ১৬ কিলোমিটার। তবে যাতায়াতের জন্য যানবাহনের সংখ্যা কম। কুড়িল থেকে গাউছিয়া পর্যন্ত কিছু বিআরটিসি বাস চলাচল করলেও তা পর্যাপ্ত নয়। কুড়িল বিশ্বরোড মোড় থেকে দীর্ঘ এই পথে সাধারণ মানুষের একমাত্র শেষ ভরসা বিআরটিসি (আর্টিকুলেটেড) বাস ও রিকশা। এসব পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বাণিজ্য মেলা শুরু হলে দর্শনার্থী, ক্রেতা ও বিক্রেতাদের একই দশা হবে। ১০০ ফুট চওড়া খাল খনন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় সড়কের বেহাল অবস্থা এবং যানজট লেগেই থাকে।
তবে মেলার আয়োজক সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) বলছে, সড়কের কথা বিবেচনায় নিয়ে বাণিজ্য মেলার জন্য কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে পূর্বাচলের মেলাকেন্দ্রে বিআরটিসির বাস চলাচলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভাড়া কত হবে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
জানতে চাইলে ইপিবি’র সচিব ও পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, মেলাকে কেন্দ্র করে বিআরটিসির ৩০টি বাস থাকবে। মাসব্যাপী মেলা চলাকালীন এই রুটে ৩০টি বাস চলাচলের জন্য বিআরটিসির কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছিল রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)। বিআরটিসির পক্ষ থেকেও তার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বিআরটিসির চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব মো. তাজুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘প্রয়োজন হলে বাসের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। ভাড়া কত হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি রেটে চলবে বাস। প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া হবে ২ দশমিক ১৫ টাকা। তাতে ১৬ কিলোমিটার হলে হয়ত ৩৫ টাকা ভাড়া হবে বলে জানান তিনি।’
তিনি আরও জানান, প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। ১ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। পূর্বাচলের প্রায় একশ বিঘা জমিতে এবারের বাণিজ্য মেলায় অংশ নিচ্ছে ২২৫টি প্যাভিলিয়ন ও স্টল।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু এবার প্রথমবারের মতো ঢাকার বাইরে মেলা হচ্ছে। তাই যত গাড়ি লাগবে বিভিন্ন পয়েন্টে তত দেওয়া হবে। দুই জন ম্যানেজারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিআরটিসির ভাড়া প্রতিকিলো ২ দশমিক ১৫ টাকা। সে হিসেবে দুরত্ব অনুযায়ী যে কোনো স্থানের ভাড়া হবে এ বাসের।
এক প্রশ্বের জবাবে তিনি জানান, কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ২৫টি গাড়ি চলে। তাতে চাহিদা অনুযায়ী গাড়ি বাড়ানো হবে। এ ছাড়া মতিঝিল ও মিরপুর থেকেও মেলার জন্য গাড়ি দেওয়া হবে। বিকালে বেশি ভিড় হবে। তাই মেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত পর্যাপ্ত গাড়ি রাখা হবে। যাতে মেলা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাদের বাসায় ফিরতে কোনো সমস্যা না হয়।
মতিঝিল বাস ডিপো ম্যানেজার মাসুদ তালুকদার ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, মেলায় সারাদিন বাস যাতায়াত করবে।
মতিঝিল থেকে কুড়িল ১৩ কিলোমিটার হবে। আর কুড়িল থেকে মেলা ১৭ কিলোমিটার। কাজেই সরকারের রেট অনুযায়ী ভাড়া সর্বোচ্চ ৭০ টাকা হতে পারে।
আর মিরপুর বাস ডিপো ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মিরপুর থেকে মেলার দূরত্ব সর্বোচ্চ ২৭ কিলোমিটার হবে। তাতে ভাড়া ৬০ টাকা হতে পারে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। মেলা শেষ হওয়া পর্যন্ত গাড়ি যাতায়াত করবে।
জেডএ/এমএমএ/