বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা পাবেন বিশেষ সুবিধা
দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকের ২৫ শতাংশ ঋণ পরিশোধ করলে গ্রাহকরা খেলাপি হবেন না।
তবে অতি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যারা ১৫ শতাংশ পরিশোধ করতে পারবে, তাদের খেলাপি করা যাবে না বলে বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার জারি করেছে।
ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মাকসুদা বেগমের সই করা সার্কুলার দেশের তফসিলি ব্যাংকের সব ব্যবস্থপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
একই সঙ্গে ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ সালের ৪৫ ধারার ক্ষমতা বলে এই আদেশ জারি করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হলো বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, ১৫ ডিসেম্বর ব্যাংকের ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধা আরও ছয় মাস অর্থাৎ ২০২২ সালে জুন পর্যন্ত বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
চিঠিতে জানানো হয়, করোনায় ব্যবসায়ীরা এখনও ভয়াবহ অবস্থা পার করছেন। তাই ২৫ শতাংশ পরিশোধের শর্ত শিথিল করে ঋণ শ্রেণীকরণ সুবিধার মেয়াদ আগামী বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) ব্যাংকার্স সভায় গভর্নর ফজলে কবির জানান সময় আর বাড়ছে না। তারপরই এ সার্কুলার জারি করা হলো। এর আওতায় চলতি বছরের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে ঋণের ২৫ শতাংশ শোধ না করলে গ্রাহক খেলাপি হবেন।
অপরদিকে, করোনাকালীন ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রেও বিশেষ সুবিধার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের
মহাব্যবস্থাপক মাকসুদা বেগমের বুধবার জারি করা অপর এক সার্কুলারে বলা হয়েছে অতিরিক্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) দুই শতাংশের পরিবর্তে দেড় শতাংশ সংরক্ষণ করলেই হবে। আর জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর ঋণের ২৫ শতাংশের পরিবর্তে মাত্র ১৫ শতাংশ পরিশোধ করলেই তারা খেলাপি হবেন না।
করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) চলতি মূলধন সুবিধার জন্য ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ গঠন করা হয়েছিল। এ তহবিলের ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ। তবে একজন গ্রাহক দিচ্ছেন ৪ শতাংশ আর বাকি ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দিচ্ছে।
ব্যাংকার্স সভা শেষে মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজ শতভাগ বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। ব্যাংকগুলো হলো-অগ্রণী, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক (রাকাব)। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলো হচ্ছে ইউসিবিএল, প্রিমিয়ার, উত্তরা, প্রাইম, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, মধুমতি, ব্যাংক এশিয়া, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, ইস্টার্ন ও ব্র্যাক।
এ ছাড়া চার আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি, আইডিএলসি, লংকাবাংলা ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্সকেও পুরস্কৃত করা হবে।
জেডএ/এমএমএ/