দেশের অনেক টাকা পাচার হয়ে গেছে: ওবায়দুল কাদের
বাজেটে দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার একটা সুযোগ দেওয়া হয়েছে সেই সুযোগ সুফল না হলে সেটা রাখা হবে কেন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, 'এটা ঠিক সেভাবে দেখলে হবে না। দেশের অনেক টাকা পাচার হয়ে গেছে।' শনিবার (১১ জুন) বিকালে ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বাজেট পরবর্তি সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন দেশে এ ধরণের সুযোগ দেওয়া হয়। আমরা সেই সুযোগটা দিচ্ছি। আমরা দেখি একটা সুযোগ। আমরা দিচ্ছি যদি এই সুযোগে সুফল না আসে তাহলে এ সুযোগ রাখব কেন? বাজেটে একটা সুযোগ দেওয়া হয়েছে, এর থেকে সুফল পেতে পারি এই সম্ভবনাকে সামনে রেখেই করা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিবকে প্রশ্ন রেখে কাদের বলেন, টাকা পাচার, এটা কি ভুলে গেছেন? বেগম জিয়ার দুই পুত্র দুর্নীতির টাকা সিঙ্গাপুর আমেরিকায় পাচার করেছে। যেই অর্থ এফবিআই তদন্ত করতে গিয়ে ধরা খেয়েছে। সেই টাকার কিছু অংশ ফেরত এসেছে। সিঙ্গাপুরে আমেরিকায় অর্থ পাচার করে বিশ্ব রেকর্ড করেছেন। পরবর্তিতে সরকার যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আংশিক টাকা দেশে ফেরত আনতে পেরেছে। বাকি টাকা কোথায়, কিভাবে ফেরত দেবেন?
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ও দেশের একটি চিহ্নিত মহল ক্রমাগতভাবে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। তাদের বক্তব্যে যদি সত্য হিসেবে ধরে নিই তাহলে ৭ শতাংশ কর দানের মাধ্যমে যদি কেউ টাকা দেশে নিয়ে আসে তাহলে তো মির্জা সাহেবদের খুশি হওয়ার কথা। কিন্তু এখন কেন অভিযোগ? অর্থ পাচারের অভিযোগ তুলবেন আর যখন আপনার কথা অনুযায়ী সে টাকা ফেরত আসে তখন অভিযোগ করবেন সেটা তো আপনাদের ডাবল স্ট্যান্ড দ্বিচারিতা। তাহলে তো বলতে হয় ফখরুল সাহেব ভুলে কি গিয়েছেন যখন ক্ষমতায় ছিলেন আপনার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অনৈতিকভাবে দুই দফা দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় কালো টাকা সাদা করেছেন। কর অফিসে জরিমানা হিসেবে ৩৪ লাখ টাকা জরিমনা দিয়েছিল। বাংলার মানুষ জানে কারা দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে। আপনাদের বিশ্ব রেকর্ড হয়ে গেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বেগম খালেদা জিয়া। আমরা তো উচ্চারণ করি বেগম খালেদা জিয়া। তারা (বিএনপি নেতারা) বলে 'হাসিনা' তারা বলে 'তুই' 'হাসিনা তুই' হত্যার হুমকি দেয় ৭৫ এর কথা বলে। আমরা কোন দিন বেগম জিয়াকে রাস্তার ভাষায় সন্মোধন করি নাই। তারা রাস্তার ভাষায় বঙ্গবন্ধু কন্যাকে অশ্রব্য ভাষায় গালিগালাজ করে।
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বলেন, করোনা উত্তর পরিস্থিতি এবং ইউরোপের চলমান যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির উপর বিরূপ চাপ সৃষ্টি করেছে। প্রস্তাবিত বাজেটটি সম্পূর্ণভাবে বাস্তবসম্মত এবং সময়োপযোগী। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দুরদর্শী নেতৃত্ব বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানোর বাজেট এটি। কল্যাণকর বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। দেশের সব চেয়ে বড় অংকের বাজেট জাতিকে উপহার দিয়েছেন। বর্তমান বিশ্ব অর্থনীতির বাস্তবতায় পৌনে সাত লাখ কোটি টাকার বাজেট জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্জিত হয়েছে অর্থনৈতিক সক্ষমতার প্রতীক।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক উন্নত দেশ মূল্যস্ফিতি বেড়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফিতি ৮ দশমিক ৩ শতাংশ, ভারতে ৭ দশমিক ৮ শতাংশ। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার মূল্যস্ফিতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ রাখার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ৩ হাজার ৯ মার্কিন ডলার। তিনি আরও বলেন, বিশ্বের যে কোনো দেশের কাছে অনুকরণীয় রাষ্ট্র প্রধান শেখ হাসিনা। যিনি সকল সংকটে একমাত্র পরিত্রাণ কর্তা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, কাজী জাফরুল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক আবু সায়েম খান প্রমুখ।
এসএম/এএজেড