পাচার হওয়া টাকা ফেরানোর উদ্যোগ অনৈতিক: আইসিএবি
প্রস্তাবিত বাজেটকে সময়োপযোগী বললেও পাচারকৃত টাকা ফেরানোর উদ্যোগকে নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয় বলে উল্লেখ করেছে ইনিস্টিটিউট অফ চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)।
সংগঠনটির নেতারা বলছেন, সরকার যে উদ্যোগটি নিয়েছে এটি ইউনিক না বা এবারই প্রথম না। জাস্টিস এন্ড ইকিউটির জায়গা বা নৈতিকতার দিক থেকে ঠিক না। তবে বাস্তবতার নিরীখে এই উদ্যোগের সাফল্য কামনা করি।
বাজেট পরবর্তী ‘প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের উপর চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টদের ভাবনা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন আইসিএবির সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান কাউন্সিল মেম্বার ট্যাক্সেশন অ্যান্ড করপোরেট ল’স কমিটি হুমায়ুন কবির।
আইসিএবি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনটি শনিবার (১১ জুন) কাওরানবাজার সিএ অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট শাহাদাত হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে আইসিএবির সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান কাউন্সিল মেম্বার ট্যাক্সেশন অ্যান্ড করপোরেট ল’স কমিটি হুমায়ুন কবির বলেন, ‘বাজেট প্রস্তাবনায় যেভাবে আছে নৈতিক দিক থেকে ন্যয্যতা জাস্ট এন্ড ইকুইটিতে ধরলে এটা অস্বভাবিক। ন্যয্যতা ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্যনা। কিন্তু পারফেক্ট ওয়ার্ল্ডের বাস্তবতায় এটা মিথ্যুক গ্রহণযোগ্য না। অনেক সময় বাস্তবতার প্রেক্ষিতে অনেক জিনিসকে গ্রহণ করে নিতে হয়।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমীক্ষা অনুযায়ী আমাদের দেশে অনেক টাকা বাইরে চলে গেছে, সুতরাং একটা পদক্ষেপ সরকার নিয়েছেন যে এই টাকাটা বাইরে। এত দিন বললাম অন্যায্য তবে এটা প্রথম না। স্বাধীনতার ৫০ বা ৫১ বছরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এটি করা হয়েছে। গত বছরেও স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করলে ক্যাশ টাকা পর্যন্ত বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কাজেই এটা প্রথম না।’
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, গ্লোবালি আমাদের দেশের চাইতে উন্নত বহুদেশে এটা আছে। ভারতে আয়কর আইনে নাই কিন্তু এরজন্য আলাদা আইন করেছে। আমাদের যেহেতু বাজেট কেন্দ্রিক সব কাজেই সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে এটার সাফল্য কামনা করি।
তার মানে পিকে হালদার যে টাকা পাচার করেছে তারা টাকা দিলেই বৈধ হবে এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আইন যেটা বলা হয়েছে সেটা কিন্তু এটা না। আইনে কোনো ক্রিমিনাল বা অবৈধভাবে ঘোষিত লোকাদের সুযোগ দেওয়া হয়নি। সরকার শর্ত দিয়েছে ইতোমধ্যে যদি কেউ মামলা করে থাকে এটা কিন্তু এতে আসবে না। টাকা নিয়ে গেল শাস্তির আওতায় আসবে না এটা মনে হয় এই আইনে নাই। তবে সরকার চেষ্টা করছে আনতে। কেউ যদি আলাপ করে ফেলে বা সরকারি কোনো সংস্থা চিহ্নিত করে ফেলে সেটা এই আইনে আসবে না। যারা স্বেচ্ছায় ঘোষণা দিয়ে আসে তাদেরটার কথাই বলা হয়েছে।’
বাজেট সময়োপযোগী কেন তার ব্যাখায় সাব্বির আহমেদ বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতি এরকম থাকবে না। মুদ্রস্ফিতি একটা পর্যায়ে নেমে আসবে। সরকার যে টার্গেট দিয়েছে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ এটাকে আমরা স্বাগত জানাই।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে কথা বলেন, আইসিএবির সাবেক সভাপতি এবং বর্তমান কাউন্সিল মেম্বার ট্যাক্সেশন অ্যান্ড করপোরেট ল’স কমিটি হুমায়ুন কবির, সহ-সভাপতি এন কে এ মবিন, মেম্বর কাউন্সিল সাব্বির আহমেদ, মো. আব্দুল কাদের জোয়াদ্দার, এমবিএম লুতফুল হাদী, সিনহাশিস বড়ুয়া, আইসিএবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শুভাশীষ বসু ও মাহবুব আহমেদ সিদ্দীক প্রমুখ।
এসএম/এমএমএ/