কথা দিচ্ছি বাজারের অস্থিরতা বন্ধ করা হবে: অর্থমন্ত্রী
নিত্যপণ্যের বাজারের অস্থিরতা সারা বিশ্বে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, 'করোনা পরে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বে ৩০ শতাংশ পণ্যমূল্য বেড়ে গেছে। তবে আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি, যাতে বাজার অস্থির না হয়'। কথা দিচ্ছি বাজার অস্থিরতা বন্ধ করা হবে। যারা পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ বা বাজারের সঙ্গে যুক্ত তারা কাজ করবে। ব্যর্থ হবে (ফেইল করবে) না। বাজেট পরবর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শুক্রবার (১০ জুন) এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, 'ডিমান্ড ও সাপ্লাইয়ের (চাহিদা-সরবরাহ) উপর বাজার নির্ভর করে। আমরা দেশের পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, তা করছি। কিন্তু বাইরের পণ্যে করার কিছু থাকে না। তারপরও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে বাজেটে। অপ্রয়োজনীয় খাতের পণ্য আমদানি নিরুৎসিাহিত করতে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন পণ্যে করের মাত্রা বাড়ানো হয়েছে। দেশীয় পণ্যকে অগ্রাধীকার দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, 'এবারের বাজেট প্রান্তিক পর্যায়ের জনগণের জন্য বাজেট তৈরি করা হয়েছে যা বাস্তব সম্মত এবং বাস্তবায়ন হবে। সবাই উপকৃত হবেন। এর আগেও করোনা মোকাবেলা করা হয়েছে। কাউকে কষ্ট দেওয়া হয়নি। সব শ্রেণি পেশার মানুষকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রবাসী (রেমিটেন্স) আয় ১৪ বিলিয়ন থেকে ২৪ বিলিয়নে আনা হয়েছে। বিশ্বে কমলেও আমাদের রপ্তানি আয়ও অনেক বেড়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে ৫০ বিলিয়ন হয়ে যেত। এ জন্য বলা যায় চ্যালেঞ্জর সঙ্গে সম্ভাবনাও রয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাড় আকারের রাজস্ব ধরা হলেও আদায় হবে। কারণ চার কোটি মধ্যবিত্ত মানুষ ট্যাক্স (কর) দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। বর্তমানে ১৫ থেকে ১৮ শতাংশ রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। তা থেকে ৪০ শতাংশ অর্জন করা গেলে চ্যালেঞ্জ হবে বাস্তব। রিজার্ভ প্রসঙ্গে বলেন, ২০০৯ সালে মাত্র ৭ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ ছিলো। তা বাড়তে বাড়তে ১৩ বছরে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে পৌছেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে ৫০ বিলিয়ন ডলার হয়ে যেত।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, রিজার্ভ করে গেলেও ৪২ বিলিয়ন ডলারের উপরে আছে। এতে ভয়ের কিছু নেই। মানি সাপ্লাই বাড়বে। তবে মূল্যস্ফীতিও যাতে না বাড়ে সে দিকে খেয়াল রাখা হবে। আমদানিকৃত পণ্যের দাম বাড়লে ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা বেড়ে গেলে মূল্য স্ফীতি বেড়ে যায়। তাই বাজেটে বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করা হচ্ছে যাতে মানুষের চাহিদা মিটিয়ে যায়। এরপরও বাজেটে ট্যাক্স কমানো হয়েছে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য। মানুষ ব্যবসা করে লাভ কো জন্য। সেই লাভ ব্যবসায়ে বিনিয়োগ করবে। এটা সত্য ও বাস্তবতা। তাই আমরাও চাই মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করুক।
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য পৌনে ৭ লাখ কোটি টাকার বেশি বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। এতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় সাড়ে ৭ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। বিভিন্ন খাতে ভর্তূকি এবং প্রণোদনাও দেওয়া হয়েছে। প্রথা অনুযায়ী বাজেটের পরের দিন সরকারের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
জেডএ/এএজেড