রিটার্ন বাধ্যতামূলক, রাজস্ব বকেয়ায় গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি বিচ্ছিন্ন
কর ফাঁকিরোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণসহ করযোগ্য আয়ধারী সবাইকে কর-জালের (Tax-net) আওতায় আনার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, টিনধারীর সংখ্যা এক কোটিতে উন্নীত ও রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। একই ভাবে, অবিতর্কিত কর পরিশোধ না করলে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিধান চালু করা হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপনের সময় এ প্রস্তাব রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অর্থমন্ত্রী বলেন, 'দেশে মধ্যবিত্ত বা তদূর্ধ্ব শ্রেণির জনসংখ্যা প্রায় ৪ কোটির মতো, যাদের বেশিরভাগই আয়কর দিচ্ছে না। ফলে কর ফাঁকি রোধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণসহ করযোগ্য সবাইকে করের আওতায় আনা হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা টিনধারীর সংখ্যা এক কোটিতে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি এবং গত ৪ বছরে প্রতি বছর গড়ে ১০ লাখেরও বেশি হারে এ সংখ্যা বেড়েছে। এপ্রিল ২০২২ নাগাদ এ সংখ্যা ৭৫ দশমিক ১০ লাখ করতে পেরেছি। পাশাপাশি, মার্চ ২০২২ নাগাদ কর প্রদানকারীর সংখ্যা বেড়ে ২৯ লাখে দাঁড়িয়েছে। কর দাখিল সহজ করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এটি হবে সহজবোধ্য এবং ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের জন্য এক পাতায়। এ ছাড়া, কিছু ক্ষেত্র ছাড়া সবার জন্য রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হবে'।
অর্থমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশে কর-জিডিপি অনুপাত অন্যান্য উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশের মতো আশাব্যঞ্জক নয়। উন্নত দেশের সোপানে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কর-জিডিপি অনুপাত অনেকাংশে বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এ উদ্দেশ্যে দেশের করযোগ্য বিপুল জনগোষ্ঠীকে করের আওতায় আনতে পারলে কর আহরণের সক্ষমতা ও আনুষ্ঠানিক অর্থনীতির আওতা বৃদ্ধি পাবে।'
করের আওতা সম্প্রসারণে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য অর্থমন্ত্রী কিছু আইনি বিধান আরোপের প্রস্তাব করেন। এগুলো হলো- কিছু ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ উপস্থাপন বাধ্যতামূলক করা, স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ড, অনুমোদিত গ্র্যাচুইটি ফান্ড, পেনশন ফান্ড, অনুমোদিত সুপার এন্যুয়েশন ফান্ড এবং শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ছাড়া অন্যান্য ফান্ডের রিটার্ন দাখিল, যে সব এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভার্সন চালু আছে তাদের আয়কর রিটার্ন দাখিলের বিধান প্রবর্তন, অন স্পট কর নির্ধারণের বিদ্যমান বিধানকে কেবলমাত্র গ্রোথ সেন্টারসমূহে সীমাবদ্ধ না রেখে সব পর্যায়ে এর প্রয়োগ বিস্তৃত করা, ধারাবাহিক ৩ বছর বা ততোধিক সময়ব্যাপী কোন কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ থাকলে পরিচালকদের কাছ থেকে বকেয়া অবিতর্কিত কর আদায়ের বিধান করা এবং অবিতর্কিত রাজস্ব দাবি পরিশোধ করতে না পারলে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য সেবা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার বিধান চালু করা।
এএজেড