সাক্ষাৎকার/ বাজেটের ১ শতাংশ বরাদ্দ দিলে সংস্কৃতির জোয়ার তোলা সম্ভব
জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে ১ শতাংশ সংস্কৃতিখাতে বরাদ্দের এবং সংস্কৃতিজনদের সংশ্লিষ্টতায় তা ব্যয়ের দাবি করেছেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। জাতীয় বাজেটকে সামনে রেখে ঢাকাপ্রকাশকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এই দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন তিনি।
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ১ শতাংশ বরাদ্দ দিয়ে তা আমলাতান্ত্রিক উপায়ে বা সংস্কৃতিজনদের বাইরের কাউকে দিয়ে ব্যয় পরিকল্পনা করলেও তাতে কাঙ্ক্ষিত ফল আসবে না। আর নূন্যতম এই ১ শতাংশ বরাদ্দ দিলে এবং তা সংস্কৃতিজনদের সঙ্গে নিয়ে ব্যয় পরিকল্পনা করলেই মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যেই দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক জোয়ার গড়ে তোলা সম্ভব।
তিনি বলেন, ‘সংস্কৃতির মহাজাগরণ তৈরি করতে হলে, রাষ্ট্র এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস অত্যাবশ্যক। শুধু সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ মূলধারার সংস্কৃতিকর্মীদের ওপর এই দায় চাপিয়ে দিলে হবে না। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। অনুদানের ভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে সংস্কৃতি খাতে বিনিয়োগ করতে হবে।’
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, জাতীয় বাজেটের এক শতাংশ টাকার অংকে অনেক বড় মনে হতে পারে। কিন্তু এর একটি বড় অংশ অবকাঠামোগত উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ, সংগঠনের অনুদান, শিল্পী সম্মানি এবং বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়নে ব্যয়ের পরামর্শ দেওয়া হবে জোট থেকে।
অবকাঠামোগত উন্নয়নের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক উপজেলায় ৫০০ আসনের আধুনিক মিলনায়তন নির্মাণ। বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে প্রতি বছর অন্তত ১০০টি উপজেলায় এ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হলে ৫ বছরের মধ্যে দেশের সবকয়টি উপজেলায় সংস্কৃতি চর্চার নেটওয়ার্ক তৈরি হবে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ স্মরণে রেখে প্রত্যেক জেলায় ‘বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ স্মৃতিভবন’ নির্মাণ করা। এই ভবনে ৭০০ আসনের আধুনিক মিলনায়তন, মহড়া ও কর্মশালার কক্ষ, সেমিনার হল, পাঠাগার, ক্যান্টিন ও ৫ থেকে ১০ জন থাকার মতো কক্ষের ব্যবস্থা করতে হবে। ভবনটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি রক্ষার পাশাপাশি ঐ জেলার শিল্পী-সাহিত্যিক ও বুদ্ধিজীবীদের মিলনকেন্দ্র হিসেবেও গড়ে উঠবে। যত দ্রত সম্ভব এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে হবে।
রাজধানীসহ ঘনবসতিপূর্ণ মহানগর প্রসঙ্গে গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীসহ অন্যান্য মহানগরীর বিস্তীর্ণ এলাকায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন কোনো মিলনায়তন নেই। আমাদের দাবি হলো মহানগরীগুলোতে প্রতি ৫ লক্ষ নাগরিকের জন্য একটি করে আধুনিক মিলনায়তন নির্মাণ করা অত্যাবশ্যক।
গ্রামীণ জনপদের সংস্কৃতি চর্চার অতীত তুলে ধরে জোট সভাপতি বলেন, ‘রাজধানীসহ প্রত্যেক জেলায় একটি করে স্থায়ী যাত্রা প্যান্ডেল নির্মিত হলে যাত্রার প্রসারের পাশাপাশি অশ্লীলতার প্রবণতা থেকেও মুক্ত হওয়া যাবে।
এমএ/এমএমএ/