তেলের মতো চালেরমিলেও চলবে অভিযান
চালের বাজার নিয়ে পরিকল্পিতভাবে খেলা হয়েছে। এই খেলায় যে যার মতো খেলেছে উল্লেখ করে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাব্যবস্থাপক ও অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘২৫০০ টাকার চালের বস্তা ৩৩০০ টাকা বিক্রি করবেন, সে সুযোগ দেওয়া হবে না। তেলের মত চালের মিলেও অভিযান শুরু করা হবে।’
করপোরেট চালের মিলেও অভিযান চলবে। মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে মামলা করতে। কিন্তু সে পর্যায়ে এ মুহূর্তে যাওয়া হচ্ছে না।
সোমবার (৬ জুন) ভোক্তা অধিদপ্তরে চালের মজুদ, সরবরাহ, মূল্য স্থিতিশীল রাখার উদ্দেশে মিলমালিক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। কারওয়ান বাজারে ভোক্তা অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাব্যবস্থাপক (ডিজি) বলেন, ‘কোনো গোষ্ঠি চালের বাজার অস্থির করার চেষ্টা করেছে। আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। যেভাবে ঈদের আগে তেলের বাজার অস্থির করা হয়েছিলো। বলা হয়েছিল তেল নেই মিল থেকে তেল দেয় না। ঠিক একই কায়দায় চালের বাজারেও দেখা যাচ্ছে।
‘মিলমালিকরা বলছেন গোডাউনে চাল নেই। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল থেকে চাল দেওয়া হচ্ছে না। তাহলে এত চাল যাচ্ছে কোথায়। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বলেছে, এবার ২ কোটি সাত লাখ টন ধান উৎপাদন হয়েছে। তাহলে এই কয় দিনেই শেষ হয়ে যাচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘হঠাৎ গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ধান নষ্ট হয়ে গেছে। চাল কম হবে। আসলে এ তথ্যের কোনো ভিত্তি নেই। কারা এটা ছড়াচ্ছে তা দেখতে হবে। সম্প্রতি চালের দাম ৪৪ শতাংশ বেড়েছে। কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা বাড়ানো হয়েছে ধানের ভরা মৌসুমে। কিন্তু ধানের দাম কি সেভাবে বেড়েছে। কেউ চালের দাম বাড়ার কারণ বলতে পারছে না ।’
বাজার ব্যবসায়ী নেতাদের উদ্দেশে ভোক্তার এই ডিজি বলেন, ‘তেলের মতো চালের বাজার নিয়ন্ত্রণেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। তাই মন্ত্রণালয় থেকে অবৈধ মজুতদারের বিরুদ্ধে মামলা করতে বলা হয়েছে। তেলের বাজারের মতো চালের পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভোক্তার স্বার্থ রক্ষা করতেই আইন মেনে এই অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এবার চালমিলের গোডাউনে অভিযান পরিচালনা করা হবে। আপনারা বাজার নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করবেন। আমাদের যেন বাজারে যেতে না হয়।’
এর আগেও ঈদের সময় কথা দিয়ে কথা রাখেননি। দোকানে তেল পাওয়া না গেলেও মাটির নিচে সেই তেল পাওয়া গেছে। এবারও যেন সে রকম না হয়। আপনারা কাজ করলে কেউ বাজার অস্থির করতে পারবে না।
তেলের মতো চাল মিলমালিকদেরও অর্ডার নেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে চাল সরবরাহ করতে হবে। আর চাল দিতে না পারলে টাকা ফেরদ দিতে হবে। বিভিন্ন পদের চাল থাকায় দাম নির্ধারণ করা যাচ্ছে না। তবে মানুষকে বা ভোক্তাকে কষ্ট না দিয়ে চাল বিক্রি করতে হবে।’
এই অতিরিক্ত সচিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘তেলের বাজারের মতো ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানের কারণেই বাজারে চালের দাম কমতে শুরু করেছে। মিলে অভিযান শুরু হবে। কারো তথ্যের ব্যত্যয় ঘটলে তেলমিলের মতোও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সভায় বিভিন্ন চাল মিলমালিক, কৃষিমার্কেট, শ্যামবাজার ও কৃষিমার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ী, আকিজ, মেঘনা, এসিআই, তীর গ্রুপ, স্বপ্ন, আগোড়াসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীরা উপস্থিত ছিলেন।
জেডএ/এমএমএ/