বাজেটের আগেই বেড়েছে সকল পণ্যের দাম
সাইদুর ইসলাম। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। রবিবার বিকালে কারওয়ান বাজার কিচেন মার্কেটে কথা হয় সাইদুরের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, ৪৮ টাকা কেজির চাল ৬০ টাকা কেজি কিনতে হলো। আগে দুই কেজি আটা কিনতাম ৮০ টাকায়, আজ কিনলাম ১১৫ টাকায়। এভাবে সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। বাজেটে আর কি জিনিসের দাম বাড়বে? সব জিনিসের দাম তো আগেই বেড়ে গেছে। এটা সরকারকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তা না হলে আমরা যাব কোথায়? খাব কি? আমাদের তো আয় বাড়েনি। শুধু ব্যয়ই বাড়ছে।
একই বাজারে কথা হয় সালমান আহমেদ স্বপন নামে আরেক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আগে যে পাউরুটি ৮ টাকা ছিলো, তা আজকে ১৫ টাকা হয়ে গেছে। তিন দিনের ব্যবধানে সাত টাকা বেড়ে গেছে। ২০ টাকার কোক ৩০ টাকা হয়ে গেছে। এভাবে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বাড়িয়েছে রাতারাতি। সব জিনিসের দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে গেছে। এমন কোনো পণ্য নেই যে দাম বাড়েনি। সব ব্যবসায়ীরা সরকারের দোহাই দিয়ে টাকা লুফে নিচ্ছে।
কাইয়ুম খান নামে আরেক ক্রেতা বলেন, ‘অন্য জিনিসের মতো আলুর দামও বেড়ে গেছে। আগে ৯০ টাকা পাল্লা কেনা গেলেও আজ ১১০ টাকায় কিনতে হলো। পেঁয়াজের দামও কিছুটা বাড়তি। সরকারের নজরদারি ছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।’
মোহাম্মদপুরের নামারবাজারে রাশেদ নামে এক ক্রেতা বলেন, ৪০ টাকার রুটি ৪৫ টাকা, ৫০ টাকার বিস্কুট ৬০ টাকা, প্রাণের ১০ টাকার রুটি (বান) ১৫ টাকা হয়ে গেছে। ১২০ টাকার হুইল গুড়া সাবান ১৫০ টাকা কেজি, ২০ টাকার সাবান ২৫ টাকা হয়েছে। এভাবে সব জিনিসের দাম বাড়িয়েছে কোম্পানিগুলো। সরকারের উচিত এসব কোম্পানির লাগাম টেনে ধরা। বিশ্বে তেলের দাম তো কমেছে। আমাদের দেশে কমছে না কেন? কিন্তু বিশ্বে বাড়লে শুনা মাত্র দেশে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয় ব্যবসায়ীরা।
রাজধানীর বাজারগুলোতে গেলে এখন সাধারণ মানুষের ক্ষোভ-অসন্তোষের কথা শোনা যায় সবচেয়ে বেশি। কোথাও কোথাও পণ্যের দাম নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদও চোখে পড়ে।
নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি মানুষের জীবনযাত্রাকে বিষিয়ে তুলেছে। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব মিলাতে পারছেন তারা। সাধারণ ক্রেতাদের দাবি, বাজেটের আগেই প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে গেছে, সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এই অবস্থায় সরকার যদি এখনই লাগাম টেনে না ধরে তাহলে বাজার আরও অস্থির হয়ে উঠবে।
গাড়িচালক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘বাজেটের অজুহাতে দাম বাড়াচ্ছে ব্যবসায়ীরা। এটা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ভারতে একটা জিনিসের দাম বাড়ালে হইচই পড়ে যায়। মন্ত্রীকেও পদত্যাগ করতে হয়। আমাদের দেশে কিছুই হচ্ছে না। রাজপথে কেউ নামে না। তাই সব জিনিসের দাম বাড়তেই থাকে। একারণে চলতে অসুবিধা হচ্ছে। কারণ বাড়তি টাকাতো আসে না। খাওয়া কমিয়ে দিতে হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজধানীসহ সারা দেশে চাল, ডাল, চিনি, ভোজ্যতেল, আটা, কেক, বিস্কুট, ডিম, দুধ এমন কোনো পণ্য নেই যেগুলোর দাম বাড়েনি। তাই বাজেটের ছুতায় আর যাতে কোনো জিনিসের দাম না বাড়ে সেদিকে সরকারকে কঠোরভাবে নজর দিতে হবে।
জেডএ/এনএইচবি/