‘বাজেট পাসের পর দ্রব্যমূল্যের কী গতি হবে আল্লাহই জানে’
দারিদ্র্যের কশাঘাতে জনজীবনে হাহাকার শুরু হয়েছে। মানুষের ওপর চেপে বসেছে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ঘোটক। জীবন ধারণের উপযোগী প্রতিটি জিনিস অগ্নিমূল্যে কিনতে হচ্ছে। চাল, ডাল, মাছ, মাংস, তেল, তরিতরকারি, ফলমূল, চিনি, লবণ, গম, আটা, রুটি, বিস্কুট ইত্যাদি দ্রব্যের মূল্য আগের তুলনায় কয়েক গুণ বেড়েছে। ফলে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে।
ফলে অতিরিক্ত মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের জন্যই সাধারণ মানুষকে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে ক্রেতা অভিযোগ।
রবিবার (৫ জুন) রাজধানীর বিজয় সরণি কলমিলতা কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা শাহজাহান সাজু ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বর্তমানে এমন কোনো পণ্য পাওয়া যাবে না, যার দাম বাড়েনি। জনসাধারণের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিতে জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। এখন বেশিরভাগ দ্রব্যের মূল্য ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। নিম্ন আয়ের মানুষ যা উপার্জন করছেন তার পুরোটাই জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম খাদ্যদ্রব্য কিনতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষার জন্য ব্যয় করার মতো অর্থ তাদের হাতে অবশিষ্ট থাকছে না। মনে হয়, নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষকে মারার আরেক নাম দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। দিন দিন জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলেছে, বাড়ছে না আয়। সংসারের খরচ সামাল দিতে অনেকেই হিমশিম খাচ্ছেন।
তেজকুনিপাড়া সমিলের মোড় বাজারের মাছ কিনতে এসে তেজগাঁও মডেল হাই স্কুলের একজন শিক্ষক ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, জিনিসপত্রের যে দাম তাতে তিন বেলা ডাল-ভাত খাওয়াও কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। আমি নিজেও নিম্নবিত্ত, না কি মধ্যবিত্ত কিছুই বুঝতে পারছি না। তারপর আবার কয়েকদিনের মধ্যে বাজেট পেশ করা হবে। বাজেট পাস হলে দ্রব্যমূল্যের কী গতি হয় তা বোঝা বড় মুশকিল। আল্লাহ ভালো বলতে পারবে।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে দাম সমন্বয়ের কথা বলে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। কিন্তু বাইরে কমার পরে তখন আর দেশে কমে না। সাধারণ মানুষের তো আয় বাড়ছে না। কষ্টটা তাদেরই বেশি হচ্ছে। সেজন্য নিত্যপণ্যের বাজারে এখনই লাগাম টানতে হবে। সরকার চাইলেই টিসিবির পরিধি আরও বাড়াতে পারে, কিন্তু সেটাও তারা করছে না।
তেজকুনিপাড়া সমিলের মোড় বাজারের মনোহারি দোকানদার আনোয়ার হোসেন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, এমন কোনো জিনিস নেই যার দাম বাড়ানো হয়নি। তাই আমাদের গ্রাহকদের সঙ্গে অনেক সময় দরকষাকষিতে ঝগড়া করতে হচ্ছে।
এদিকে বিজয় সরণি কলকমিলতা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী সাধন চন্দ্র রায় ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আমাদের দেশে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির বহু কারণ রয়েছে। যেমন চাহিদা ও জোগানের পার্থক্য, মজুতদাররা অধিক মুনাফার জন্য দাম বাড়িয়ে দেয়, বড় বড় ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট তৈরি করে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। আর আমরা যারা খুচরা ব্যবসায়ী যারা সরাসরি গ্রাহকের সঙ্গে জড়িত সবাই এর ভুক্তভোগী।
এসএন