খারাপ ব্যবসায়ীর দায়িত্ব নিতে চাই না: জসিম উদ্দিন
সুযোগ পেলে চালের দাম বাড়াবেন এটা কেউ সহ্য করবে না উল্লেখ করে এফবিসিসিআই’র সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন মানুষকে বোকা না ভেবে ভালোভাবে ব্যবসা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ৯৯ শতাংশ ভালো ব্যবসায়ী। এক শতাংশ খারাপ মানুষের দায়িত্ব নিতে চাই না। বলছেন ধান নষ্ট হাওয়ায় চালের দাম বেড়ে গেছে। তাহলে সরকার অভিযান করলে কেন ১০ টাকা কমে গেল একদিনের ব্যবধানে।’
বৃহস্পতিবার (২ জুন) সরকারের বাজার অভিযানের প্রেক্ষিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী আমদানি, মজুত ও মূল্য নিয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিভিন্ন পণ্যের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ নেতা বলেন, অনেকে বলছেন চালের ব্যবসা করে শেষ হয়ে যাচ্ছি, অথচ গুলশানে ৪/৫ টা বাড়ির মালিক হলেন তাহলে কীভাবে। কারও ঢাকা শহরে ৮/১০টা বাড়ি আছে । আপনারা শেষ হয়ে গেলে তাহলে এভাবে বাড়ির মালিক হওয়া যাচ্ছে কীভাবে।
মিলমালিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘হাওর এলাকায় ধান নষ্ট হয়েছে এ জন্য চালের দাম বেড়েছে। এখন মোবাইল কোর্ট যাওয়র পর দাম ৫ টাকা কমিয়ে দিচ্ছি। আপনাদের কথার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই। সরকার ধরাধরি কেন করবে? ধরাধরির যে সিস্টেম চালু করে দিয়েছি এটা তো ঠিক না। এ সিস্টেম ছিল আর্মি শাসন আমলে। এখানে যারা আছেন তাদের ৯৯ শতাংশ ভালো। এক দুইজনের দায়িত্ব কেন আমরা সবাই নিব।’
এখানে আমরা যারা এসেছি সবাই বুঝি। আমি নিজেও ধান উৎপাদন করি। কত খরচ কীভাবে কী হয় আমি তা জানি, যোগ করেন তিনি।
এখানে ব্যবসায়ীরা সরকারের অভিযানকে স্বাগত জানাচ্ছে। তারা বলছে সরকারকে দন্যবাদ জানাচ্ছি, সরকার ধরছে দাম কমছে। এটা কী ঠিক? যদি সমস্যাই থাকতো তাহলে অভিযানের পর দাম কমতো না। আসলে বাজারে কোন ধান-চালের সংকট নাই সমস্যা আমাদের ব্যবসায়ীদের কোনো ব্যবসায়িক সুযোগ নিবেন না প্রচুর চালাচ্ছে সংকট হবে না।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই চাল ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা এফবিসিসিআই সভাপতিকে অভিযোগ করে বলেন ‘আমাদের (চাল ব্যবসায়ী) হয়রানি ও ধরপাকড় করা হচ্ছে।
এর জবাবে এফবিসিসিআই সভাপতি চাল ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা ধানের ভরা মৌসুমে চালের দাম বাড়িয়ে দিবেন আর সরকার ধরপাকড় করবে না এটা কি হয়। এখন ধান উঠছে, বোরো ধানের ভরা মৌসুম। দাম কমছে এ অবস্থায় চালের দাম কমার কথা। আপনি-আমি ব্যবসা করে খায়, ব্যবসা করব। তার মানে কেজিতে ১০/১৫ টাকা বাড়াবেন এটা কি হয়। আপনি হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে মেশিন আনছেন এতে খরচ কমার কথা, তাহলে দাম কেনো বাড়বে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, আসলেই চালের সংকট না, সবার কাছে চাল আছে। ৫ থেকে ১০ শতাংশ ধান নষ্ট হয়েছে এখনই কেন দাম বাড়বে, এটাতো আরও সাত মাস পরে দাম বাড়বে। সু্যোগ পেলেই দাম বাড়বে এটা সরকার বা আমরা কেউ সহ্য করব না।
জসিম উদ্দিন বলেন, খারাপ ভালো হুজুরদের মধ্যেও আছে, ব্যবসায়ীদের মাঝেও আছে। পেঁয়াজ আমদানি ভারত থেকে বন্ধ করার পরের দিনই ১৫ টাকা কেজিতে দাম বেড়ে গেল। অথচ আমদানির পেঁয়াজের দাম বাড়বে আরও পরে কিন্তু দাম বাড়িয়ে দিল আমাদের ব্যবসায়ীরা।
এক প্রশ্নের উত্তরে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘চালের দাম মিলমালিকরা বাড়িয়েছে। কারণ তারা মনে করেছে ধান নষ্ট হয়েছে ঘাটতি হবে। এ সময় যারা এ কারসাজি করছে তাদের সতর্ক করেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এ নেতা। একইসঙ্গে বাজারে সরকারি নজরদারি অব্যাহত রাখারও দাবি জানান তিনি।
জেডএ/এমএমএ/