আগামীর ব্যবসা : ইন্টারনেটে বেচা, কেনা
লেখা ও ছবি : নাহিদ হাসান, পাবলিক রিলেশন অফিসার, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি
করোনাভাইরাসের আক্রমণে ‘কোভিড-১৯’ রোগের সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা থমকে গিয়েছিল। তবে ঘরবন্দী ওই সময়ে, জীবনের প্রয়োজনে এবং ভোক্তাদের চাহিদাতে অনলাইন ব্যবসা বেড়েছে। ফলে ই-কমার্সে আরো অনেক গুণে বেশি অভ্যস্ত হয়েছেন বাংলাদেশের সর্বশ্রেণীর, সব বয়সের, সব অঞ্চলের, সব ধরণের মানুষ।
জানা গিয়েছে, এই সময়ে আমাদের ইন্টারভিত্তিক বাণিজ্য হাজার গুণ বেড়েছে। আগে ছিল রকমারীর বই, ইলেকট্রনিক্স দ্রব্যাদি; এখন জামা থেকে শৌখিন পণ্যাদি সবই কিনছেন ছাত্র, ছাত্রী ও যুবক, যুবতীরা ইন্টানেটে অর্ডার করে, নানা অনলাইন শপ থেকে। এর শুরুটি হয়েছিল বেশ আকারে ২০১৩ সালে। কারণ হলো, বাংলাদেশ ব্যাংক ক্রেডিট কার্ডে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমাদের এখানে পণ্যাদি, কেনা-বেচার নির্দেশ তুলে নেন। তারও আগে তারাই আমাদের দেশে কার্ড ব্যবহার শুরু করেন। এর মাধ্যমে তো এখন বেতন, সুপার শপে কেনাবেচা অত্যন্ত বিস্তৃত। তৃতীয় প্রজন্মের ইন্টারনেট সেবা আমাদের আরো গতিময় করেছে। ইন্টারনেটের দুনিয়া ২০০৭ সাল থেকে বড় ভাবে শুরু। ধীরে, ধীরে ইন্টারনেটের মান বেড়েছে, কাজ বেড়েছে, ই-কমার্স বিস্তৃত হয়েছে। ২০১৯ সালে আমাদের এই ইন্টারনেট ভুবনে কেনাবেচা হয়েছে ১ হাজার ৬শ ৪৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২৩ সালে হবে বাংলাদেশে মোট ৩ হাজার ৭৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ইন্টানেট বেচাবিক্রির ভুবন।
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সম্মেলন আঙ্কটাডের সাম্প্রতিক এক গবেষণায়, করোনাভাইরাসের আক্রমণের মধ্যে সারা বিশ্বে মোট ১৩ ভাগ ইন্টারনেট বাণিজ্য বেড়েছে। বাংলাদেশের ই-ক্যাব জানিয়েছে, আমাদের এই সময়ে বাণিজ্য বেড়েছে ২৫ ভাগ। জাতিসংঘের দ্বিগুণ ব্যবসা করেছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও অন্যান্য ইন্টারনেটভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, কর্মীরা।
বিশ্বে ই-কমার্স ডেইজ হলো ১ থেকে ৫ এপ্রিল-মোট পাঁচ দিন। আমাদের হলো সপ্তাহ। এই এপ্রিলেরই ৭ থেকে টানা সাত দিন। ফলে বাংলাদেশের ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন ও এই খাতে খেটে খাওয়া মানুষগুলোর অবদানের কোনো শেষ নেই। অনেক তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছেন। অনেকগুলো ভালো মানের বিশ্ববাজারের পণ্য বিক্রি হচ্ছে এই দেশে।
তাঁত শিল্পের পোশাকগুলো বিক্রিই হতো না। সেগুলো এখন বাজারে বিক্রি হয় ই-কমার্সের কল্যাণে। মানুষের হাতের নাগালে এসেছে। কত সংসার, কত কর্মজীবি, ছাত্র, ছাত্রী ইন্টারনেটে পাওয়া পণ্যগুলো বিক্রি করেন, তার ইয়াত্তা নেই। তারা নিজেরা রোজগার করেন ও পরিবারের মুখে হাসি ফোটান। ফলে নতুন ইতিহাস তৈরি করা অনেক উদ্যোক্তা ও ইন্টারনেটভিত্তিক পেশাদারের জন্ম হয়েছে।
ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জন্ম ২০১৪ সালে। এখন তাদের আছেন মোট ১ হাজার ৭শ প্রতিষ্ঠান। ২৮ জুন দুই বছর মেয়াদের, ২০২২-’২৪ অর্থবছরের চতুর্থ দ্বিবাষিক নির্বাচন হবে। ৯ কার্যনিবাহী পরিচালক পদে প্রাথী মোট ৩৬ জন।
ছবি : ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শহীদুল্লা কায়সারের মেয়ে প্রখ্যাত অভিনেত্রী শমী কায়সার। তাদের অ্যাসোসিয়েশনের একটি ইভেন্ট।