আমদানির লাগাম টানতে ১৩৫ পণ্যে শুল্ক
ডলারের সংকট কমাতে সরকার বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাক্কা, বিলাসী পণ্যে ঋণ মার্জিন ৭৫ শতাংশসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে করোনা পরবর্তী অর্থনীতি পুনর্গঠনে ও বিলাসী পণ্যের নির্ভরতা কমাতে ফুল, কসমেটিক্স,ফার্নিচার, ফলসহ আমদানির লাগাম টানতে ১৩৫ পণ্যের উপর নতুন করে শুল্ক বসিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
মঙ্গলবার (২৪ মে) এনবিআর থেকে জানানো হয়, এটা হচ্ছে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বা রেগুলেটরি ডিউটি (আরডি)। এসব পণ্যের উপর বিদ্যমান ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ হারে আরোপ করা হয়েছে বলে।
বিভিন্ন পণ্যের আমদানি নিয়ন্ত্রণ করতে বর্তমানে বিভিন্ন শুল্ক আরোপ করা আছে। এর সঙ্গে ‘অতিরিক্ত’ হিসেবে নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক বসানো হয়েছে। যা ২৩ মে থেকে কার্যকর বলে জানানো হয়েছে। এর ফলে এসব পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত হবে এবং রিজার্ভের উপর চাপ কমবে। এ ব্যাপারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এক প্রজ্ঞাপন জারি করে নতুন শুল্ক হার কার্যকর করেছে।
আন্তর্জাতিক বাজারে বিভিন্ন কারণে পণ্যমূল্য বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের দেশেও আমদানি ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে। এতে রিজার্ভে চাপ পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কয়েকবার টাকার অবমূল্যায়ন করেছে। তারপরও লাগাম টানা যাচ্ছে না। নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছেই। তাই সরকার বিলাস দ্রব্যের আমদানি সীমিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি সরকারি চাকরিজীবীদের বিদেশ যাত্রায় দেওয়া হয়েছে নিষেধাজ্ঞা। এমনকি ব্যাংকাররা নিজের টাকায় দেশের বাইরে যেতে পারবেন না, এমন আদেশও জারি করা হয়েছে। এতেও ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন ঠেকানো যাচ্ছে না।
এই পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় নয়, এমন সব পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করতে বর্ধিত শুল্ক হার ২৩ মে থেকে কার্যকর করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের শেষ কর্মদিবস ৩০ জুন পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে।
মূলত ফল, ফুল, প্রসাধনী সামগ্রী, ফার্নিচার এই চারটি খাতের বিভিন্ন পণ্যে বাড়তি নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপ করেছে এনবিআর। আম, আনারস, আপেল, আঙুর, তরমুজ ও পেয়ারাসহ সব ধরনের তাজা ফল আনতে দিতে হবে এই পরিমাণ শুল্ক। তাজা ফুল আনতেও দিতে হবে বাড়তি এই কর।
ব্রাউন রাইস, আলুর চিপস, চিনি, ফ্লাই অ্যাশ, লুব্রিকেন্ট ওয়েল, টয়লেট পেপার, মেয়েদের মেকআপ, রডের কাঁচামাল, ইনগট, বিলেট, অ্যালুমিনিয়াম তার, গ্লুকোজ, গাড়ির টায়ার, অপটিক্যাল ফাইবার ক্যাবলস, মোটর কার, স্টেশন ওয়াগন, ডবল কেবিন পিকআপ, প্লাস্টিকসহ সব ধরনের আসবাবপত্রও আছে।
মূলত, স্থানীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে এসব পণ্যের আমদানি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এর ফলে বর্তমানে আমদানি ব্যয়ের যে চাপ আছে তা অনেকটাই কমবে এবং রিজার্ভের উপর চাপ কমবে, যোগ করে এনবিআর।
এনবিআর এর সার্কুলারে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে ফুল ও ফলে যথেষ্ট সমৃদ্ধশালী। তাই এই শুল্ক আরোপে দেশের ফুল ও ফল চাষিরা ন্যায্যমূল্য পাবে। দেশের প্রান্তিক চাষিরা লাভবান হবে। বৈদেশিক নির্ভরতা কমবে।’
জেডএ/এমএমএ/