বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাব
সামাজিক নিরাপত্তা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি ২০ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেছে। এই বাজেটে আয় ধরা হয়েছে ১৮ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি থাকবে এক লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। কালো টাকা ও বিদেশে যে অর্থপাচার হয়েছে তা থেকে এই ঘাটতি বাজেটের অনেকটা পূরণ হবে।
রবিবার (২২ মে) বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত সংবাদ সম্মেলনে এ সব তথ্য জানান। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবনা ২০২২-২৩: একটি গণতান্ত্রিক বাজেট প্রস্তাবটি রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন রোডে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অফিসে অনুষ্ঠিত হয়।
অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাত বলেন, ‘বৈষম্য দুর করার জন্যই আগামী অর্থবছরের সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সর্বোচ্চ অগ্রাধীকার দেওয়া হয়েছে। কারণ এই খাতে প্রায় দুই কোটি সুবিধা পাওয়ার উপযোগী। কিন্তু ৭৫ শতাংশই সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাই সামাজিক খাতকে গুরুত্ব বেশি দিয়ে বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ২০ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এতে আয় ধরা হয়েছে ১৮ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয় ধরা হয়েছে প্রায় ১২ লাখ কোটি টাকা। যা আমাদের সরকারের চলতি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় চার গুণ বেশি হবে।
এছাড়া আয়ের নতুন ২৭ টি উৎস ধরা হয়েছে। তারমধ্যে পাঁচিটি উৎস থেকেই আয় হবে ছয় লাখ ৪৭ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে সম্পদ কর দুই লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা, অতিরিক্ত মুনাফার উপর কর ৭৫ হাজার কোটি টাকা, অর্থ পাচার রোধ থেকে ৭৯ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা, কলো টাকা উদ্ধার থেকে আয় এখ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা, ও বিলাসী পণ্যের উপর কর থেকে আয় ধরা হয়েছে এক লাখ ৫ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি ধরা হয়েছে এক লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘সরকার আমলে নিলো কি না নিলো তা দেখার বিষয় না। আমাদের দায়িত্বরোধ থেকে প্রতিবছর বিকল্প বাজেট প্রস্তাব করে থাকি। আমাদের লক্ষ্য আমদানি নয়, উৎপাদনমুখী অর্থনীতি। দরিদ্র, বিত্তহীন ও নিম্নবিত্তদের জন্য কিছু করার চেষ্টা। বৈষম্যহীন শোভন বাংলাদেশ গড়ার। এটি একটি রাজণেতিক-অর্থনৈতিক দলিল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও সংবিধানের আলকে প্রণয়ন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের বাজেট প্রস্তাবনায় ২৪টি খাতে ৩৩৮টি সুপারিশ করা হয়েছে। এরমধ্যে গবেষণা ও উন্নয়ন এবং গণপরিহন মন্ত্রণালয় গঠন এবং ১৬টি বিভাগ গঠনেরও সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী বাজেটে সার্বজনিন পেনশন স্কিমে ৬০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দেরও সুপারিশ করা হয়েছে। বিলাসী পণ্যের লাগাম টেনে ধরতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে দুই হাজার শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে হবে। তবে কৃষক বাঁচাতে চাই। শিল্প রক্ষা করতে চাই। অপর এক প্রশ্নের হবাবে তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা আছে। এ জন্য ৯ মাসে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ করলেও শেষ দিন মাসে ৩০ শতাংশ করে ফেলে। কাজের অভার বাস্তবায়ন করে থাকে।’
জেডএ/আরএ/এএজেড