ভোক্তা অধিদপ্তরের ডিজি
যেখানেই হাত দিচ্ছি সেখানেই অনিয়ম
যেখানেই হাত দিচ্ছি সেখানেই অনিয়ম পাচ্ছি উল্লেখ করে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেছেন, এমন কোন জায়গা নাই যেখানে অনিয়ম পাওয়া যায় না। তেলের মিল পর্যায় থেকে শুরু করে ডিলার পাইকারি খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে তেলের অনিয়ম পাওয়া গেছে। আমরা উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি।
বৃহস্পতিবার (১৯মে) অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইআরএফ এর সহযোগিতায় রাজধানীর পল্টনে ভিআরএফ কার্যালয়ে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক বলেন, আগে বড় বড় করপোরেট অভিযান করলে তেলের সংকট দেখা দিত। প্রতিদিন প্রায় চার হাজার টন তেল লাগে। ১৬৮ টাকা থেকে ১৬০ টাকা লিটার করা হলে তা বাজারে আসতে ১৫ দিন লেগেছে মালিকদের বলার পরও। কিন্তু ১৯৮ টাকা করা হলে তারপরের দিনই খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করতে শুরু করে। চরম নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে। তাই ভোক্তা অধিদপ্তর অভিযানে যেতে বাধ্য হয়েছে। তাতে দেখা গেছে মাটির নিচে, গোডাউনে বিভিন্ন জায়গায় তেল লুকিয়ে রাখা হয়েছে। বেশি দামে বিক্রি করা হয়েছে। ভোক্তার মহাপরিচালক আরও বলেন, যেখানে হাত দিচ্ছি সেখানে গলদ ধরা পড়ছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, চোরকে বলে কি চোর ধরতে যাওয়া যাবে। তাহলে তো তারা উধাও হয়ে যাবে।
এফবিসিসি শীর্ষ নেতা বলেছেন, চোরের নেতা হতে চাই না। তেল দোকানে থাকবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু মাটির নিচে কেন? আমরা অভিযান করে তা উদ্ধার করেছি মাটির নিচে থেকে তেল।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন আমাদের কথা একটাই কথা ভোক্তা, গণমাধ্যম, ভোক্তা অধিদপ্তর এক কাতারে কাজ করছে। ভক্তাদের স্বার্থরক্ষা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও করা হবে। এই অতিরিক্ত সচিব বলেন, যেহেতু হাত বাড়াইলে অনিয়ম তাই ভোক্তা অভিযান বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। ওয়াসার সার্ভিসনাবিল নিচ্ছে বিদ্যুতের কথা সেবা দেওয়া হয় না। বিমানেরও একই অবস্থা। টাইম ঠিক রাখে না তাই বিভিন্ন জায়গায় ভোক্তা অধিদপ্তর কাজ শুরু করবে।
তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যমে ও বিজ্ঞাপনে প্রতারণা করা হচ্ছে ১০০ ভাগ হালাল বলে চালিয়ে দিচ্ছে। এই হালাল বলার সার্টিফিকেট কে দিয়েছে। রেস্টুরেন্টে বেশি পরিমাণ পানির বোতল দেওয়া হয় না। ছোট ছোট পানির বোতল দেওয়া হয়। দাম বেশি নেওয়া হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর টেস্টিং সল্ট পণ্য নিষিদ্ধ করলেও তা বাজারে দেখা যাচ্ছে। এসব কিছু নিয়ে কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, ভোক্তা আইন সংশোধনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বুধবার আন্তঃমন্ত্রণালয়ের মিটিং হয়েছে। এ নিয়ে আশা করি খুব তাড়াতাড়ি ক্যাবিনেটে অনুমোদনের পর সংসদে যাবে। সেখানে অনুমোদন হবে। এরপরই ভোক্তদের স্বার্থে পুরোপুরিভাবে প্রয়োগ করা যাবে।
ভোক্তা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. শাহরিয়ার বলেন, প্রতিশ্রুত পণ্য দিতে বাধ্য ব্যবসায়ীরা। কিন্তু জাতি অবাক হয়েছে, দেখেছে ঈদে কিভাবে তারা তেল লুকিয়ে সংকট তৈরি করেছে। মিল থেকে দেওয়া হল ভোক্তারা চাইলেও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তেল পায়নি। ভোক্তা আইন এর কোন না কোন ধারায় ভোক্তা স্বার্থে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এই উপসচিব সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সারাদেশে এত অনিয়ম যে মানুষ দেখলে ভীত হয়ে যেত। গণমাধ্যমে যা আসছে তা দুই-একটা। এসব অনিয়মে নামিদামি প্রতিষ্ঠান ধরা পড়ছে। তেলের সরবরাহ রাখার পরও বক্তারা তা পাইনি। অথচ পাইকারি খুচরা ব্যবসায়ীরা বিভিন্নভাবে লুকিয়ে রেখেছে ভাবতে অবাক লাগে কিভাবে আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে তারা এসব করেছে। তিনি আরো বলেন ৯১ জন অফিসার নিয়ে সারাদেশে ভোক্তা অধিদপ্তর কাজ করছে। ভোক্তা আইন সংশোধন হলে ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষার সুযোগ আরো বাড়বে।
জেড এ/