মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর এমওইউতে যা বলা হয়েছে
দীর্ঘ তিন বছর পর মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য শ্রমবাজার উন্মুক্ত হলো। শ্রম বাজার সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তিটি (এমওইউ) সই হয় রোববার (১৯ ডিসেম্বর)। স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের (এমওইউ) উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো একটি হলো বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়া প্রান্তের সব খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন।
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সমঝোতার আওতায় বাংলাদেশি কর্মীদের মালয়েশিয়া প্রান্তের সব খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন। খরচের আওতায় রয়েছে রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি নিয়োগ, মালয়েশিয়ায় আনা, আবাসন, কাজে নিয়োগ, কর্মীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর খরচও বহন করবেন মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিয়োগকর্তা নিজ খরচে মালয়েশিয়ায় রিক্রুটিং এজেন্ট নিযুক্ত করতে পারবেন। মালয়েশিয়ায় আসার পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইনস্যুরেন্স সংক্রান্ত খরচ, করোনা পরীক্ষার খরচ, কোয়ারেন্টিন সংক্রান্ত খরচসহ সকল খরচ মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা/কোম্পানী বহন করবে।
উভয় দেশের আইন, বিধি, প্রবিধান, জাতীয় নীতি এবং নির্দেশাবলীর আলোকে এই সমঝোতা স্মারকে কর্মীদের অধিকার ও মর্যাদাকে অনেকবেশি সুরক্ষিত করা হয়েছে উল্লেখ করে বলা হয়, নিয়োগকর্তা কর্মীর মানসম্মত আবাসন, বীমা, চিকিৎসা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করবে। ফলে আশা করা যায় কর্মীর অভিবাসন খরচ অনেক কমে যাবে।
রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে স্থানীয় সময় সকাল ১১ টায় এই এমওইউ সই হয়। মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান এবং বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমওইউ স্বাক্ষর করেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং প্রত্যাবাসনের আদর্শ কাঠামো প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের শ্রমিকদের কর্মসংস্থান একটি অন্যতম সহযোগিতার ক্ষেত্র এবং পারস্পরিকভাবে উপকারী বলে উভয় দেশ বিশ্বাস করে। বাংলাদেশের কর্মীরা যেমন মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখছে, তেমনি বাংলাদেশের উন্নয়নেও অবদান রেখে যাচ্ছে যা উভয় দেশ স্বীকার করে।
এমওইউ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড.আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোঃ গোলাম সারোয়ার এবং মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল দাতু মুহাম্মদ খাইর আজমান বিন মোহামেদ আনুয়ার, বিএমইটির মহাপরিচালক মোঃ শহীদুল আলমসহ উভয় দেশের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গত ১১ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার মন্ত্রিসভা বাংলাদেশ থেকে আবারও শ্রমিক নেওয়ার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয়। এর আগে জিটুজি প্লাস পদ্ধতিতে কর্মী নিতে ২০১৬ সালে সমঝোতা স্মারক সই করে দুই দেশ। চুক্তির মেয়াদ ৫ বছর থাকলেও ১০টি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সিন্ডিকেট করে ২০০ কোটি রিঙ্গিত হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় ২০১৮ সালের পর আর ভিসা দেয়নি মালয়েশিয়া।
আরইউ/কেএফ/