এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানির প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
'এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড, মানিকগঞ্জ প্ল্যান্ট স্থাপন' প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। আজ মঙ্গলবার (৫ মার্চ) একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
নীতিমালা অনুসরণ করে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে। এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) ৬০ বছরের পুরাতন ও জীর্ণ প্ল্যান্টটি মানিকগঞ্জে স্থানান্তর করা হবে।
এক হাজার ৯০৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ও এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড বাস্তবায়ন করবে। সে লক্ষ্যে ঢাকার তেজগাঁওয় এলাকায় ২ দশমিক ২০ লক্ষ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন করা হবে। জানুয়ারি ২০২২ হতে ডিসেম্বর ২০২৬ মেয়াদে মানিকগঞ্জ জেলার সদর উপজেলায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় যুক্ত হন । শেষ সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে- অত্যাবশ্যক ও জীবন রক্ষাকারী ঔষধের উৎপাদন বৃদ্ধি করে সরকারি খাতে ঔষধের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণসহ বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সরকারকে সহযোগিতা প্রদান করা ও দেশের স্বাস্থ্য সেবা খাতকে শক্তিশালী করা। ঔষধ শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের মাধ্যমে ঔষধের আমদানি কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা।
প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- ৩১ দশমিক ৫০ একর ভূমি অধিগ্রহণ ও ২ দশমিক ২০ লক্ষ ঘনমিটার ভূমি উন্নয়ন করা হবে। ২৪টি বিভিন্ন ধরণের স্থাপনা/অনাবাসিক ভবন নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, বাউন্ডারি ওয়াল, সেন্ট্রাল ড্রেনেজ, রিজারভার, ফুটপাত, ওয়াকওয়ে, ইউটিলিটি ব্রিজ ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ৬টি ওয়াচ টাওয়ার ও ১টি ডিজিটাল পোট্রেট নির্মাণ, ৩১১৬টি আসবাবপত্র ও ২৮৪টি অফিস সরঞ্জাম ক্রয়, ৭২০টি কম্পিউটার ও ৪টি কম্পিউটার সফটওয়ার ক্রয় করা হবে। ৪০ হাজার ৫০০ বর্গমিটার ল্যান্ডস্কেপিং এবং ১ হাজার ৪৬৪ জনমাস পরামর্শক সেবা কেনা হবে প্রকল্পের আওতায়। প্রকল্পটি ২০২১-২২ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত আছে।
পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সংগতিপূর্ণতা ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় রাষ্ট্রীয় ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক সকল স্তরের সরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানের (কমিউনিটি ক্লিনিক, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) জন্য জরুরি ঔষধ উৎপাদনের বিষয়সহ স্বাস্থ্য সেবার সামগ্রিক উন্নয়নে এসব প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠনের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে, যার সাথে প্রকল্পটি সংগতিপূর্ণ।
পরিকল্পনা কমিশনের মতামত : প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে নীতিমালা অনুযায়ী সর্বোচ্চ গুণগতমান বৃদ্ধির পরিমাণ ঔষধ উৎপাদনের মাধ্যমে সরকারি খাতে ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। ঔষধ সরবরাহে বেসরকারি খাতের উপর নির্ভরতা কমিয়ে সরকারি খাতের স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাত শক্তিশালী হবে। বর্ণিতাবস্থায়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের আওতায় এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃক সম্পূর্ণ জিওবি অর্থায়নে বাস্তবায়ন হবে।
প্রকল্প প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের সদস্য(সচিব) মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম বলেন, এটি একমাত্র রাষ্ট্রয়ত্ব কোম্পানি। ঋণ ও ইক্যুইটি ছাড়া এটি কিছুই পায় না। এটার চাহিদাও আছে। কিন্তু ঢাকায় জমি স্বল্পতার কারণে এট ওষুধ কোম্পানিটি চাহিদা পূরণ করতে পারছে না। এই জন্য ১৮গুণ বড় জায়গা নিয়ে এটা করতে হবে। ১০০ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে এটা করা হচ্ছে।
গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটার প্রয়োজনীয়তা আছে। এসেনসিয়াল ড্রাগস যুগের চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ তৈরি করবে। কোভিড টিকার আবিষ্কারেরও তারা ভূমিকা রাখবে। কারণ এটিই একমাত্র সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। সরকারের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই প্রতিষ্ঠান থেকে ওষুধ গ্রহণ করে থাকেন। তাই এটা বড় আকারে করার পরিকল্পনা হচ্ছে। তারা সরকারের কাছে এক পার্সেন্ট সুদে ঋণ নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে’।
জেডএ/কেএফ