সর্বজনীন পেনশনের অনুমান ভিত্তিক হিসাব
বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে সরকার। ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী বাংলাদেশি নাগরিকরা এ সুবিধা পাবে। আগামী ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে এ ব্যবস্থা চালু করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ কথা জানা।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এই পেনশন স্কিম হচ্ছে এক প্রকারের বিনিয়োগ। কাজেই এর কোনো নিম্ন ও উর্ধ্বসীমা নেই। যে যেভাবে বিনিয়োগ করবে সে সেভাবে পরিমান পাবে। প্রভিডেন্ট ফান্ডের মতো বলা যায়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেহেতু বাজেটে ঘোষণা করা হয়েছে পেনশনের ব্যাপারে। তার আলোকেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাজেই আইন ও বিধিপ্রণয়ন করেই সব কিছু ঠিক করা হবে।
২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি চালুর সুনির্দিষ্ট ঘোষণা প্রদান করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট এবং সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা প্রবর্তনের জন্য একটি কৌশলপত্র প্রণয়নকরা হয়েছে। কৌশলপত্র প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী কিছু নির্দেশনা প্রদান করেছেন। নির্দেশনাসমূহ অন্তর্ভুক্ত করে শিগগিরই একটি সর্বজনীন পেনশন আইন প্রণয়ন করা হবে। প্রকৃত অবস্থা আইন ও বিধিপ্রণয়ন এবং পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আইন প্রণয়ন হলে পেনশনের একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা পাওয়া যাবে। এটি নিয়ে এখন কাজ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ বর্তমানে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট এর সুবিধা ভোগ করছে। আমাদের বর্তমান গড় আয়ুষ্কাল ৭৩ বছর যা ২০৫০ সালে ৮০ বছর এবং ২০৭৫ সালে ৮৫ বছর হবে বলে প্রক্ষেপণ করা হয়েছে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় আগামী তিন দশকে একজন কর্মজীবী ব্যক্তি অবসর গ্রহণের পরও গড়ে ২০ বছর আয়ু থাকবে। বাংলাদেশে বর্তমানে নির্ভরতার অনুপাত ৭ দশমিক ৭ শতাংশ, যা ২০৫০ সালে ২৪ শতাংশে এবং ২০৭৫ সালে ৪৮ শতাংশে উন্নীত হবে। গড় আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি ও ক্রমবর্ধমান নির্ভরতার অনুপাত বিবেচনায় আমাদের বয়স্কদের নিরাপত্তা হিসেবে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা খুবই জরুরি।
পেনশনের অনুমান ভিত্তিক হিসাব
পেনশনের অনুমান ভিত্তিক একটি হিসাব দিয়েছে অর্থমন্ত্রণালয়। একবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যদি মাসিক চাঁদা ১০০০ টাকা, মুনাফা ১০% ও আনুতোষিক (গ্র্যাচুটি) ৮ শতাংশ ধরা হয় তাহলে ১৮ বছর বয়সে চাঁদা প্রদান শুরু করে এবং ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত তা চালু থাকে তাহলে উক্ত ব্যক্তি অবসরের পর ৮০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতিমাসে ৬৪ হাজার ৭৭৬ টাকা পেনশন পাবেন। যদি ৩০ বছর বয়সে চাঁদা প্রদান শুরু করেন এবং ৬০ বছর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে তাহলে অবসরের পর প্রতি মাসে ১৮ হাজার ৯০৮ টাকা পেনশন পাবেন।
তবে চাঁদার পরিমাণ ১০০০ টাকার বেশি হলে আনুপাতিক হারে পেনশনের পরিমাণও বেশি হবে। এ হিসাব একটি আনুমানিক হিসাব। প্রকৃত অবস্থা আইন ও বিধিপ্রণয়ন এবং পেনশন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার পর বিস্তারিত জানা যাবে।
জেডএ/