বাজেট সাপোর্ট প্রকল্পে ঋণ দিতে বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ
বিশ্বব্যাংককে বাজেট সাপোর্ট প্রকল্পে ঋণ দিতে অনুরোধ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল।
রোববার (০৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ও বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দলের একটি দ্বি-পাক্ষিক সভায় তিনি এ অনুরোধ করেন।
সভায় বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মি. হার্টউইগ শ্যেফার এর নেতৃত্বে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি মিয়াং টেম্বন, বিশ্বব্যাংকের আঞ্চলিক পরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া) যৌবিদা খেরুস আলাউয়া।
সভায় অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির চিত্র তুলে ধরে জানান, আমাদের রপ্তানি আয় ২৪ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। বর্তমানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫-৪৬ বিলিয়ন ডলার। ঋণ-জিডিপির অনুপাত এখনও ৪০ শতাংশের নিচে।
তিনি জানান, মূল্যস্ফীতি এখন ৬ শতাংশের নিচে। রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি প্রায় ১৭ শতাংশ। খেলাপি ঋণ ৮.১ শতাংশে নেমে এসেছে। ব্যাংকের ঋণের সুদের হার ৭.৩ শতাংশে নেমেছে। এর ফলে, দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির ভিত যথেষ্ট মজবুত রয়েছে। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে এমন অর্থনৈতিক সক্ষমতা ধরে রাখা বিরল।
অর্থমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৩৮ বছরের মাথায় ১০০ বিলিয়ন ( ১০ হাজার কোটি ) ডলার জিডিপির মাইল ফলক স্পর্শ করেছিল। আর স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির অব্যবহিত পূর্বে বাংলাদেশ আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় ও সাহসী নেতৃত্বে মাত্র ১২ বছরের মাথায় তা চার গুণ বেড়ে ৪১১ বিলিয়ন (৪১ হাজার ১০০ কোটি ) ডলারে পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বে কোভিড-১৯ কে মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে অর্থনীতি। এর জন্য সবচেয়ে বড় কৃতিত্বের অধিকারি দেশের সাধারণ মানুষ, যারা অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস-প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শ্যেফার কোভিড-১৯ থেকে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাফল্যের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় ভাল করছে এবং কোভিড মোকাবিলা করে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্রচলিত নিয়মে প্রকল্পের বিপরীতে ঋণ দেওয়ার কারণে অনেক সময় দেখা যায় যে প্রকল্প প্রস্তুত থাকে না। সেগুলো প্রস্তুত করতে অনেক কালক্ষেপণ হয়ে মন্থর গতি তৈরি হয়। এই মন্থর গতি থেকে উত্তরণের জন্য অর্থমন্ত্রী বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ করেন যাতে বাজেট সাপোর্ট আকারে প্রকল্প ঋণ দেওয়া হয়। তাহলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যেসব প্রকল্প প্রস্তুত আছে সেসব প্রকল্পের জন্য অর্থ ছাড় করা সম্ভব হবে, প্রকল্পের গতি ত্বরান্বিত হবে।’
উল্লেখ্য, চলমান করোনা অতিমারীর কারণে দেশের ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমবাজার, আর্থিক ও সামাজিক খাত সচল রাখার লক্ষ্যে চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের ডিপিসি প্রকল্পের আওতায় ৫০ কোটি মার্কিন ডলার বাজেট সাপোর্ট হিসাবে দ্রুত ছাড়করণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশ্বব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে।
জেডএ/এএন