নির্ধারিত দিনেই শেষ হচ্ছে ২৬তম বাণিজ্য মেলা

বিভিন্ন বিধিনিষেধের মধ্যেও চলছে মাসব্যাপী ২৬তম বাণিজ্য মেলা। করোনার মধ্যে মাসের শেষ শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) ছুটির দিনে সর্বোচ্চ প্রায় ৭৩ হাজার ৫০০ দর্শনার্থী এসেছেন। তবে অন্য দিনে গড়ে ১৫ হাজার এসেছেন। এক দিনের জন্যও বন্ধ হয়নি। সেই মেলা নির্ধারিত দিনেই (৩১ জানুয়ারি) শেষ হচ্ছে। নারায়নগঞ্জের পূর্বাচলে স্থায়ী ঠিকানায় এবার প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা।
অন্য বছরে সরকারি ছুটির দিনে শুক্রবার প্রায় দেড় লাখ দর্শনার্থী উপস্থিত হলেও এবার করোনার কারণে তার ধারে কাছে নেই। দুই দফা বিধিনিষেধে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ বন্ধ করা হয়। এ ছাড়া ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ২৫ জানুয়ারি কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি বাণিজ্য মেলা বন্ধ করারও সুপারিশ করে। কিন্তু এক দিনের জন্যও বন্ধ হয়নি মেলা।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আরোপিত বিধি-নিষেধের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা চলছে। সার্বিক ব্যাপারে জানতে চাইলে শনিবার (২৯ জানুয়ারি) আয়োজক সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ও মেলার পরিচালক মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘বিধি-নিষেধের মধ্যেও স্বাস্থ্য বিধি মেনে মেলা চালাচ্ছি। তবে নির্ধারিত সময় ৩১ জানুয়ারিই মেলা শেষ হচ্ছে। মেলার সময় আর বাড়ছে না। শেষদিনে মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। ছুটির দিনগুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো, ফলে ব্যবসায়ীরা মোটামুটি লাভবান হয়েছেন। তবে এবারে করোনা ও ঢাকার বাইরে মেলার আয়োজন করাই দর্শনার্থীদের উপস্থিত অন্যান্য বছরের তুলনায় কম হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ব্যাপক হারে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত ২৫ জানুয়ারি বাণিজ্য মেলা বন্ধ করতে সুপারিশ করে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। তবে এর পরও বাণিজ্য মেলা কার্যক্রম চলমান ছিল।
এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি, শুক্রবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে পাঁচ দফা জরুরি নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। নির্দেশনায় বলা হয়, বাজার, মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, রেলস্টেশনসহ সব ধরনের জনসমাবেশে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। এর আগেও গত ১০ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়, যা ১৩ জানুয়ারি থেকে কার্যকর করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সভা-সমাবেশ বন্ধ হলেও এক দিনের জন্যও মেলা বন্ধ হয়নি। মেলায় দর্শনার্থীদের উপস্থিতির ব্যাপারে জানতে চাইলে মেলার ইজারাদার মেসার্স মীর ব্রাদার্সের অপারেশনাল ম্যানেজার ছাইদুর রহমান (বাবু) ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ছুটির দিনে শেষ শুক্রবার যা আশা করা হয়েছিল তা হয়নি। দ্বিতীয় শুক্রবার ৭৬ হাজার দর্শনার্থী উপস্থিত হলেও গত শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) তা হয়নি। মাত্র ৭২ হাজার ৫০০ জন এসেছেন। আশা করা হয়েছিল এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে। অন্যান্য বছরে সর্বোচ্চ এক লাখ ৪০ হাজার দর্শনার্থী এসেছিলেন। কিন্তু এবার তার ধারে কাছে নেই।
তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যাশা অনুসারে মেলায় দর্শনার্থী আসে নাই। করোনা আতঙ্কে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কমেছে। এ কারণে টিকিট ও বিক্রি কম হয়েছে।
ইপিবি জানায়, পূর্বাচলের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিউশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত বাণিজ্য মেলায় দেশি-বিদেশি মোট ২২৫টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে বিদেশি ৬টি স্টল ও ৪টি মিনি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। বাকিগুলো দেশি স্টল। মেলা চলছে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে ছুটির দিনে মেলা চলে সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে ৩০টি কাউন্টার করা হয়েছে। প্রবেশ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২০ টাকা। তবে মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীরা প্রবেশ ফি ছাড়াই মেলায় প্রবেশ করতে পারবে। সেই সুযোগ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়েছে।
জেডএ/এসআইএইচ
