সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৩ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

মোকাম থেকে খুচরা দামে ফারাক তিনগুণ

আলুর ক্ষেতে (জমিতে) ৫ থেকে ৬ টাকা কেজি আলু। তাও কেনার লোক নেই। জমি থেকে উঠার খরচই উঠছে না। বিঘাতে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লোকসান। কারণ প্রতি বিঘা আলু চাষে খরচ হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। বর্তমানে অর্ধেক দামেও কেনার লোক পাওয়া যায় না। তাই কৃষকরা জমি থেকে আলু তুলতেও চাচ্ছে না। একেবারে দিশেহারা কৃষকরা। এভাবেই ক্ষেত ও মোকামে আলুর বাজারের শোচনীয় অবস্থার কথা ঢাকাপ্রকাশকে জানান ঠাকুরগাও জেলার হরিপুর থানার মেদনীসাগর গ্রামের মো. মামুন।

সেই আলু রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন আড়তে ১০ থেকে ১১ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে ১৫ থেকে ২০ টাকা। পুরাতন আলু বিক্রি করতে না পারায় দুই হাজার ১১২ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে কৃষক, ব্যবসায়ী ও কোল্ডস্টোরেজ মালিকদের। সরকারের উদ্যোগ ছাড়া আলুর দাম বাড়ানো সম্ভব নয়। আলুর মতো টমটোরও খারাপ অবস্থা। ক্ষেত্রে কম দামে বিক্রি হলেও ঢাকাতে দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে এমনই তথ্য জানা গেছে।

শুধু ঠাকুরগাও নয়, দিনাজপুর, রংপুর, রাজশাহী, মুন্সিগঞ্জসহ সারা দেশে আলুর একই দুরাবস্থা বলে সংশ্লিষ্ট কৃষক ও ব্যবসায়ীরা জানান।

তাদের কথার সত্যতা জানতে যোগাযোগ করা হলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পাইকারি বাজার জনতা বাণিজ্যলয়ের ইকবাল হোসেন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘ডাইমন্ড আলুর কেজি কেনা হয়েছে ১১ টাকা কেজি। আর বিক্রি করা হচ্ছে ৭০ টাকা পাল্লা (৫ কেজি) বা ১৪ টাকা কেজি। কয়েক দিন থেকে বর্তমানে একটু দাম বেশি। তারপরও লোকসানে চলতে হচ্ছে। মরার মতো অবস্থা। গত ১৯ বছরের ব্যবসা জীবনে এতো খারাপ অবস্থা হয়নি। কারণ হিসেবে মুন্সিগঞ্জের এই আলু ব্যবসায়ী ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করা যায়। বর্তমানে কৃষকরাই তো ক্ষেতে দাম পাই না। তাহলে আমরা কিভাবে বেশি দামে বিক্রি করব।’

বাজার এতো খারাপ অর্থাৎ কম দাম কেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘পুরাতন আলু এখনো কোল্ডস্টেরেজে। তাইতো নতুন আলু ঢুকানো যাচ্ছে না। তবে লাল আলুর দাম একটু বেশি। মেহেদী হাসান জানান, ‘১৫ টাকা কেজি কিনে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।

একই বাজারের সোনার বাংলা বাণিজ্যলায়ের মো. রাকিম বলেন, ‘বর্তমানে বাড়তি আলুর বাজার। পাইকারী ১০ থেকে ১১ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আগে ছিলো ৯ থেকে ১০ টাকা। তবে বাছাই করা খুব ভালো মানেরটা ১৪ থেকে ১৫ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, একই আলু পাশেই প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেশি দামে খুচরা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে।

তা জানতে পাশের সুজনের কাছে আলু কতো টাকা কেজি এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন,’১৬ টাকা, বাছাই করা বেশি ভালোটা ২০ টাকা কেজি। পাইকারিতে কম। তাহলে খুচরাইিএতো বেশি কেন? এমন উত্তরে তিনি বলেন, বেশি দামে কেনা। সঙ্গে বিভিন্ন খরচা আছে। লাভ তো করতে হবে। একই কথা জানান আবুদল খালেক। তিনি ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, রাত থেকে সকাল ৮টার মধ্যে আড়তদারের বিক্রির পরে পাইকারি ১১ টাকা কেজি ও খুচরা ১৬ টাকা কেজি আলু বিক্রি করা হয়।

আলুর এতো খারাপ বাজার কেন? জানতে চাইলে ঠাকুরগাওয়ের মামুন বলেন, ‘এবার আলুর আবাদ বেশি হয়েছে। সরবরাহ বেশি। আবার পুরাতন আলুই কোল্ডস্টোরেজে থেকে গেছে। সেগুলোও লোকসান করে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘ প্রতি ট্রাকের ভাড়া ২২ থেকে ২৩ হাজার টাকা। প্রতি বস্তায় ৬০ থেকে ৬৫ কেজি আলু ধরে। তাতে প্রতি কেজিতে খরচ পড়ে দেড় থেকে এক টাকা ৭৫ পয়সা। সঙ্গে ঢাকাতে আড়ৎদারী এক টাকা এবং বস্তা ও মজুরিতে আরও এক টাকা খরচ হয় প্রতি কেজি আলুতে। এভাবে সব ঝামেলা মোকাবেলা করে ঢাকার বিভিন্ন আড়তে আলু পৌছাতে হয়। তারপরও চাহিদা নেই। নিতে চাই না। প্রতি কেজি আলু ঢাকায় ১০ কেজিও বিক্রি হয় না।

তাহলে এভাবেই ক্ষেতে পড়ে থাকবে আলু, দাম বাড়বে না? এমন প্রশ্নের উত্তরে মামুন বলেন, ‘ মাস খানেক পর আলু একটু আরও পুষ্ট হবে। তখন কোল্ডস্টোরেজে রাখার মতো হবে। স্টক করা শুরু করলে একটু দাম বাড়তে পারে। বাজার কিছুটা চড়া হতে পারে।’

কৃষি বিপণন অধিদফতরের সূত্র মতে, কৃষক পর্যায়ে এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ হয় ৭ টাকা ৬০ পয়সা। সেই পণ্য উৎপাদনকারী থেকে ভোক্তা পর্যায়ে আসতে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরুতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে- স্থানীয় ব্যবসায়ী, স্থানীয় মজুদদার, স্থানীয় খুচরা বাজার, ব্যাপারি, পাইকারি ব্যবসায়ী, কেন্দ্রীয় বাজার বা টার্মিনাল, আড়তদার, প্রক্রিয়াজাতকারী, খুচরা বাজার, খুচরা ব্যবসায়ী। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজিও রয়েছে।

সার্বিক ব্যাপারে জানতে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘আলুর দাম কম থাকলে সরকারের ভালো। তাইতো গত আগষ্ট থেকে কৃষিমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছে বারবার ধরনা দেওয়া হয়েছে। তারপরও কোনো উদ্যোগ নেয়নি। পুরাতন ৪০ লাখ বস্তা আলু ফেলে দিতে হয়েছে। প্রতি বস্তায় আলু ছিলো গড়ে ৬০ কেজি। আট টাকা কেজি ধরলে এসব আলুতে দুই হাজার ১১২ কোটি টাকা লোকসান হয়েছে কৃষক, ব্যবসায়ী ও কোল্ডস্টোরেজের। তারপরও সরকারের মাথা ব্যথা নেই। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘২০২০ সালে দাম বাড়লে তখন র্যাব, ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু বর্তমানে উৎপাদন খরচের অর্ধেকও দাম নেই তাতে কোনো মাথা ব্যথা নেই।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে সাতটি কোল্ডস্টোরেজের এই মালিক বলেন, ‘সরকার সুযোগ না দিলে এক সময়ে কৃষক আলু চাষ করা বন্ধ করে দিবে। তখন ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে বেশি দামে ভোক্তাদের কিনতে হবে। অনেকে এটা চাচ্ছে বলেই কোনো উদ্যোগ নেই না।’ তিনি আরও বলেন সারা দেশে প্রায় চারশটি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে। তাতে সব আলু ধরবে না। সরকারের উদ্যোগ ছাড়া বাড়বে না আলুর দাম।’

আলুর পথেই টমেটো:
এদিকে টমোটোর দামের অবস্থাও আলুর মতো। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর কৃষক ও ব্যবসায়ী শাহজাহান বলেন, বৃষ্টিতে অনেক টমোটোর ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া মৌসুম শেষ হয়ে আসছে। তারপরও কম দামেই বিক্রি হচ্ছে টমোটো। আড়তে ১০ থেকে ১২ টাকার বেশি কেজি নিতে চাই না। শুধু গোদাগাড়িতে নয়, বানেশ্বরসহ অন্যান্য বাজারেরও একই দশা। কম দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো।

কিন্তু সেই টমেটো রাজধানীর বিভিন্ন পা্ইকারি ও খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দামে অর্থাৎ ৩০ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। সরেজমিনে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে। কারওয়ান বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী মো. আনোয়ার এ প্রতিবেদককে জানান, ‘পাইকারী কেনা হয়েছে ২০ টাকা কেজি। খুচরা বিক্রি করা হচ্ছে ৩০ টাকা। সময় শেষ হয়ে আসছে। তাই দাম আর কমবে না।

টমোটোর খুচরা-পাইকারি দামের ব্যাপারে একই বাজারের চাঁদপুর বাণিজ্যালয়ের মেহেদী হাসানও জানান.‘পাইকারী কেনা হয়েছে ১৫ টাকা কেজি। তা খুচরা বিক্রি করা হচ্ছে ২২ থেকে ২৫ টাকা কেজি। একই কাজারের খুবচরা ব্যবসায়ী করিম বলেন, ‘৩৫০ টাকা ক্যারেট (৩০ কোজি) টমেটো কেনা হয়েছে। তাতে প্রতি কেজিতে ১২ টাকার কম হয়। তা খুচরা ২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আর নৌকিব বলেন, ৪০০ টাকা ক্যারেট (৩০ কোজি) কিনে ১১০ টাকা পাল্লা (৫ কোজি) বা ২২ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তাতে লাভ খুব বেশি নেই।‘

জেডএ/

Header Ad
Header Ad

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেত্রী দোলনা আক্তার গ্রেপ্তার

দোলনা আক্তার । ছবি: সংগৃহীত

নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেত্রী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য দোলনা আক্তারকে (২৭) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার রাতে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নিজ গ্রামের বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। তিনি ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়নের কবিরমামুদ গ্রামের দুলাল হোসেনের কন্যা।

পুলিশ জানিয়েছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর দোলনা আক্তার আত্মগোপনে চলে যান এবং দীর্ঘদিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় লুকিয়ে ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে সারাদেশে চালু হওয়া ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানের মধ্যে গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি নিজ গ্রামের বাড়িতে আশ্রয় নেন। তবে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তার অবস্থান শনাক্ত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।

ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন, গত ৪ আগস্ট ফুলবাড়ীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দোলনা আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আগামীকাল (সোমবার) তাকে আদালতের মাধ্যমে কুড়িগ্রাম জেলহাজতে পাঠানো হবে।

Header Ad
Header Ad

গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক পররাষ্ট্র উপদেষ্টার

ওমানের মাস্কটে ৮ম ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সের অবকাশে জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ওমানের মাস্কটে আয়োজিত অষ্টম ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সের অবকাশে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এটি ছিল গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর দুই নেতার মধ্যে দ্বিতীয় বৈঠক।

বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দেওয়া বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, উভয়পক্ষ পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বিশেষভাবে গঙ্গা পানি চুক্তির নবায়ন সংক্রান্ত আলোচনার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। একই সঙ্গে তিনি দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) স্থায়ী কমিটির বৈঠক আয়োজনের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন এবং ভারতকে বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানান।

বৈঠকে দুই দেশের সীমান্ত পরিস্থিতি এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনা নিয়েও আলোচনা হয়। উভয়পক্ষ আশা প্রকাশ করেন যে, এই আলোচনার মাধ্যমে সীমান্ত সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের পথ প্রশস্ত হবে।

এদিকে, সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হতে যাওয়া বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) চার দিনব্যাপী সীমান্ত সম্মেলন নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। জুলাই মাসের গণ-অভ্যুত্থানের পর এই প্রথমবার দুই দেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিজিবির মহাপরিচালকের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল এই সম্মেলনে অংশ নেবে।

বৈঠক শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে জয়শঙ্কর জানান, আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, যেখানে বিমসটেকসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

Header Ad
Header Ad

মিঠাপুকুরে এক যুগেও চালু হয়নি ইকোপার্ক, শত কোটি টাকার প্রকল্প প্রশ্নবিদ্ধ

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

রংপুরের মিঠাপুকুরে ইকোপার্ক নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল এক দশকেরও বেশি সময় আগে। এটি ছিল উপজেলার একমাত্র বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রকল্প। তবে বাস্তবে এটি পরিণত হয়েছে মাদকসেবী, বখাটে ও অসামাজিক কার্যকলাপকারীদের অভয়ারণ্যে।

২০১৩ সালে প্রকল্পের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এইচ এন আশিকুর রহমান। তখন প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ১০০ কোটি টাকা। তবে দীর্ঘ এক যুগেও প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি। বরং, বরাদ্দ বাড়লেও উন্নয়ন কার্যক্রম তেমন অগ্রগতি লাভ করেনি।

বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও ইকোট্যুরিজম উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২২৬ একর জায়গায় মিঠাপুকুর ইকোপার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়। এতে বিশ্রামাগার, রান্নাঘর, পার্কিং এলাকা, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার, গোলঘর, টিকিট কাউন্টার, প্রবেশদ্বার, নিরাপত্তাকক্ষ, গণশৌচাগার, পানির ট্যাংক, পানির সরবরাহ লাইন, পুরাতন বন বিশ্রামাগার উন্নয়ন, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের ব্যারাক, পার্ক অফিস ভবন, ডিসপ্লে মানচিত্র, আমব্রেলা শেড, স্পিনার, পাকা বেঞ্চ নির্মাণসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু বাস্তবে, শুধুমাত্র সীমানা প্রাচীর ও কিছু দায়সারা কাজ ছাড়া প্রকল্পটির তেমন কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। এমনকি ইকোপার্কের প্রধান ফটক আজও সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি।

স্থানীয়দের মতে, এই প্রকল্পের শত কোটি টাকার বরাদ্দ কোথায় গেল, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। মিঠাপুকুর ইকোপার্কটি রংপুরের শঠিবাড়ী-দিনাজপুরের আফতাবগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। একই মহাসড়কের ২৫ কিলোমিটার পশ্চিমে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য শিবলী সাদিকের ব্যক্তিগত বিনোদনকেন্দ্র 'স্বপ্নপুরী' রয়েছে। স্থানীয়রা ধারণা করছেন, স্বপ্নপুরীর জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে মিঠাপুকুর ইকোপার্কের উন্নয়ন ইচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে এবং বরাদ্দকৃত অর্থ লোপাট করা হয়েছে।

সরেজমিনে ইকোপার্ক পরিদর্শন করে দেখা যায়, সেখানে গরু, ছাগল ও ঘোড়া চরছে। প্রবেশদ্বারে কোনো পাহারাদার নেই, চারপাশে সীমানা প্রাচীর থাকলেও একাধিক জায়গায় ভাঙা। এসব পথ দিয়ে বহিরাগত ও মাদকসেবীরা অবাধে প্রবেশ করে সেখানে মাদকের আসর বসায়। দর্শনার্থীরা আসলেও নিরাপত্তার অভাবে দ্রুত ফিরে যান। বিভিন্ন অবকাঠামোর যন্ত্রপাতি অযত্নে নষ্ট হতে বসেছে।

স্থানীয় ১৩ নম্বর গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ তালুকদার বলেন, "ইকোপার্কের প্রকল্পে কত কোটি টাকার কাজ হয়েছে, তার সঠিক তথ্য মন্ত্রণালয়ের নথিতেও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ইউনিয়ন পরিষদেও কোনো নথি জমা হয়নি। মূলত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিজেল এন্টারপ্রাইজ নিজের ইচ্ছামতো কাজ করেছে।"

এ বিষয়ে বিএনপির মিঠাপুকুর উপজেলা সদস্য সচিব মোঃ মোতাহারুল ইসলাম নিক্সন পাইকাড় বলেন, "আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের প্রতি কোনো জবাবদিহিতা রাখেনি। তাদের নেতাকর্মীরা যেখানে যা পেরেছে লুটপাট করেছে। আমরা যখন বিরোধী দলে ছিলাম, তখনও জানতে পেরেছি যে এখানে ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প চলছে। কিন্তু বাস্তবে কাজের অগ্রগতি নেই বললেই চলে।"

তিনি আরও বলেন, "এইচ এন আশিকুর রহমান সংসদে বাজেট বরাদ্দ এনে তার ছেলে রাশেক রহমানের মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডিজেল এন্টারপ্রাইজকে কাজ দিয়েছেন। তবে কাজের মান কিংবা প্রকৃত বাস্তবায়ন হয়নি।"

মিঠাপুকুর ইকোপার্ক প্রকল্পের দীর্ঘসূত্রিতা ও অর্থ লোপাটের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা দরকার বলে অনেকেই মনে করেন। বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক ব্যবহার না হলে, এটি শুধুই একটি ব্যর্থ প্রকল্প হিসেবে থেকে যাবে। স্থানীয়দের প্রত্যাশা, প্রকল্পটি পুনরায় কার্যকর করা হোক এবং এলাকাবাসীকে কাঙ্ক্ষিত বিনোদনকেন্দ্র উপহার দেওয়া হোক।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেত্রী দোলনা আক্তার গ্রেপ্তার
গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক পররাষ্ট্র উপদেষ্টার
মিঠাপুকুরে এক যুগেও চালু হয়নি ইকোপার্ক, শত কোটি টাকার প্রকল্প প্রশ্নবিদ্ধ
মসজিদে নববীর প্রধান ইমাম হলেন শেখ আব্দুল রহমান আল হুদাইফি
মালিতে পরিত্যক্ত সোনার খনি ধসে পড়ে অন্তত ৪৮ জন নিহত
কেমন হলো টাইগারদের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জার্সি
‘হজযাত্রী প্রতি অতিরিক্ত ৩০ হাজার টাকা বেশি নিয়ে আমরা ভাগ করে নেব’
হঠাৎ তিস্তার পানি বৃদ্ধি: অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণার পর খুলল ৬ জলকপাট
বইমেলায় স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রির অভিযোগে দুটি স্টল বন্ধ
ভ্যালেন্টাইনের সঙ্গে পরিচয় করানোর নামে লাইভে এসে কাপড় বেচলেন পরীমণি
উত্তরপূর্ব ভারতের ৫৫ শতাংশ মানুষ শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পক্ষে
দেশকে কারা নেতৃত্ব দেবে তা বাছাই করার সময় এসেছে: তারেক রহমান
বিদ্রোহ থেকে সরে এলেও অনুশীলনে যোগ দিচ্ছেন না সাবিনারা
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগপ্রত্যাশীদের সচিবালয়মুখী পদযাত্রায় পুলিশের বাধা, জলকামান নিক্ষেপ
নির্বাচনের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা, গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা ব্যারিস্টার মামুনের
গান গাইতে গাইতেই মারা যেতে চান আশা ভোঁসলে
ইলন মাস্কের ইন্টারনেট বাংলাদেশে: সুবিধা কি, খরচ কত?  
ভারতের তামিলনাড়ুর শতবর্ষী ম্যাগাজিনে মোদির ব্যঙ্গচিত্র, ওয়েবসাইট ব্লক নিয়ে বিতর্ক
সেন্টমার্টিনে কোস্টগার্ডের অভিযানে ৩০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার
শেখ হাসিনার পতন হলেও দেশে এখনো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়নি: রিজভী