করোনাকালে হয়েছে বৈষম্যমূলক পুনরুদ্ধার: সিপিডি
![](https://admin.dhakaprokash24.com/logo/placeholder.jpg)
করোনা থেকে ব্যবসায়ীদের রক্ষা করতে সরকার পুনরুদ্ধারে দীর্ঘমেয়াদী যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসাযোগ্য। এটা ইতিবাচক। তবে সামগ্রীকভাবে এটা বৈষম্যমূলক পুনরুদ্ধার। ব্যবসায়ীরা ত্রয়ী (তিন) চ্যালেঞ্জের মুখে, এমনটিই মনে করছে সিপিড।
বাংলাদেশ ব্যবসায় পরিবেশ-২০২১ উদ্যোক্তা জরিপের ফলাফলের প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ধানমন্ডিতে সিপিডি অফিসের সম্মেলন কক্ষে তা জানানো হয়।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। এতে উপস্থিত ছিলেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন।
ড. মোয়াজ্জেম বলেন, করোনাকালে ২০২১ সালের এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত চার মাসে সারাদেশে বড় ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এই সার্ভে করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে করোনা পরবর্তী সময়ে ব্যবসার পরিবেশ উত্তরোত্তর ও ধারাবাহিকভাবে উন্নতি হচ্ছে। তবে তারা ত্রয়ী চ্যালেঞ্জেও পড়েছে। এগুলো হচ্ছে দুর্নীতি, অদক্ষ প্রশাসন ও অর্থায়নে সীমাবদ্ধতা। এসব ব্যবসায়ীদের মাথাব্যথার কারণ বলে সিপিডি মনে করে। এ ছাড়া বাংলাদেশে দক্ষ মানবের অভাবও রয়েছে। সামগ্রীকভাবে ব্যবসা পুনরুদ্ধারে আরও তিন বছর লাগতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবসায়ীদের সাজেশন হচ্ছে- আর্থিক প্রণোদনা, দুর্নীতি কমাতে হবে ও ভ্যাকসিন প্রদান করতে হবে।
সিপিডি বলছে, করোনাকালে ব্যবসার পরিবেশ কেমন ছিলো তা জানতে একটি জরিপ করা হয়েছিলো। তাতে বড় ব্যবসায়ী থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প উদ্যোক্তাদের মতামত নেওয়া হয়েছে অনলাইনে। ২৫০ জনের মধ্যে ৭৩ জন ব্যবসায়ী উত্তর দিয়েছেন। তাতে ব্যবসার পরিবেশ নিয়ে ৬৮ শতাংশ প্রতিবন্ধকতার কথা বলেছেন ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন টেকনিক্যাল প্রতিষ্টান গড়ার পরও বাংলাদেশে এখনো দক্ষ মানবের অভাব রয়েছে।
সিপিডি আরও বলছে, ব্যবসায়ীরা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে এটা ভাবার কারণ নেই। তারা বলছেন, বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে ব্যবসার খরচ কমাতে হবে। আগামী ১০ বছরে কেমন ব্যবসা আসতে পারে এমন তথ্যও জানিয়েছে সিপিডি। প্রতিষ্টানটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিজিটাল ফাইন্যান্স সার্ভিস, ডাটা ব্যবস্থাপনা, রি-সাইক্লিং ব্যবস্থাপনাসহ আরও কিছু খাত রয়েছে। গবেষণা পরিচালক আরও বলেন, বৈশ্বিক ঝুঁকির আলোকে বাংলাদেশেও পাঁচটি ঝুঁকি রয়েছে। এগুলো হচ্ছে-অর্থনৈতিক ঝুঁকি, ভূ-রাজনৈতিক, পরিবেশগত, সামাজিক ও প্রযুক্তিগত ঝুঁকি।
সিপিডির মতে, ২০২০ সালের তুলনাই ২১ সালে ব্যবসার ক্ষেত্রে স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে বলে ৪১ শতাংশ ব্যবসায়ী জানিয়েছেন। সড়ক, নৌপথ তথা ট্যাডিশনাল অবকাঠমোর ইতিবাচক উন্নয়ন হয়েছে। ব্যবসার কমপ্লায়েন্স পরিবেশ বাড়ছে। সরকারের দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনায় ব্যবসায়ীরা প্রশংসা করেছেন ৫৪ শতাংশ। তবে বড় চ্যালেঞ্চ আমদানি-রপ্তানিতে এখনো দুর্নীতি।
সিপিডি আরও বলছে, করোনা মোকাবেলায় গ্রহণযোগ্য পুন:রুদ্ধারে সরকারের দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা থাকা দরকার। আগামী বাজেটে সরকারকে এই দিকে নজর দিতে হবে। পরিবেশ, কর্মসংন্থান, অর্থপাচার রোধে নজর দেওয়া দরকার। টিজিটালাইজেশন হচ্ছে। তবে তা সংকীর্ণভাবে। কারণ করোনাকালে শহরে নেট সুবিধার মতো গ্রামে তা পৌছেনি। তাই বৈষম্য যাতে না থাকে তা নজরে আসতে হবে। প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ আনতে হবে।
ড. ফাহমিদা বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনিীতির ৮০ শতাংশ বেসরকারি খাত থেকে আসে। তাই ব্যবসায়ীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করতে হবে সরকারকে। কারণ তাদের ভূমিকা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে।’
জেডএ/টিটি
![Header Ad](https://admin.dhakaprokash24.com/images/single-post-anniversary.jpeg)