শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫ | ১৪ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

ভোজ্যতেল ও চিনিতে নৈরাজ্য, সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন খুচরা বিক্রেতারা

চিনির দাম কমানো হয়েছে জানুয়ারিতে। কিন্তু সেই দামে মে মাসেও চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে, সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে ৪ মে। তার কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই বর্ধিত দামে তেল বিক্রি করা হচ্ছে। উভয় ক্ষেত্রেই মিল মালিকদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন খুচরা বিক্রেতারা।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, মিল মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে সরকার নির্ধারিত কম দামে চিনিই পাচ্ছেন না তারা। মিল মালিকদের কাছ থেকে বেশি দামে কেনার কারণে বিক্রিও করতে হবে বেশি দামে। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীরা বেশি দামে বিক্রি করলে সরকারি সংস্থার জরিমানার সম্মুখীন হতে হয়।

অন্যদিকে, সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১২টাকা বাড়ানো হলে বোতলের গায়ে আগের দাম উল্লেখ থাকার পরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কারণ মিলারদের সিন্ডিকেটের কারনে আগের সয়াবিনও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে ভোজ্যতেল ও চিনির বাজার মিল মালিকদের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে বলেই দাবি খুচরা ব্যবসায়ীদের।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেট, টাউনহলসহ বিভিন্ন বাজারে গেলে এমনই ক্ষোভের চিত্র পাওয়া যাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহার সঙ্গে ঢাকাপ্রকাশ-এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সবশুনে কোনো জবাব না দিয়ে ফোন কেটে দেন।

চিনির দাম তিন টাকা কমিয়ে ১০৪ টাকা কেজি ঘোষণা দিলেও সেই নির্ধারিত দামতো দূরের কথা, কিছু বেশি দামেও কোথায় পাওয়া যায় না। অভিযোগ উঠেছে, বেশি দামের আশায় মিলমালিকরা কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করায় এই অবস্থা। তবে কোনো কোনো ডিলার ও পাইকাররা মিল থেকে বেশি দামে কিনে তা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন। এ জন্য ভোক্তাদের অনেক বেশি দাম গুনতে হচ্ছে, ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি পর্যন্ত।

অপরদিকে, সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৯৯ টাকা ঘোষণার পর থেকেই বাজারে দাম বাড়তে শুরু করেছে। খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, নতুন রেটের তেল না আসলেও বাড়তি দামেই ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করতে হচ্ছে।

এবার রমজানের আগে থেকেই চিনি নিয়ে চলছে ছিনিমিনি। সরকার গত ৮ এপ্রিল থেকে পরিশোধিত চিনির কেজিতে ৩ টাকা কমিয়ে করেছে ১০৪ টাকা। আর প্যাকেট চিনির দাম ৩ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৯ টাকা। কিন্তু সেই দামে তো দূরের কথা রমজান মাস শেষ হলেও প্রায় দোকানে চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কোথাও পাওয়া গেলেও ভোক্তাদের বেশি দাম গুনতে হচ্ছে। মিল থেকেই বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে ডিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। এ জন্য খুচরা ব্যবসায়ীও ভোক্তাদের কাছে বেশি দামে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছে।

সর্বশেষ, গত ১ জানুয়ারি চিনির দাম বাড়িয়ে খোলা চিনির দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০৭ টাকা কেজি এবং প্যাকেটজাত চিনির দাম নির্ধারণ করা হয়েছিলো ১১২ টাকা কেজি। এরপর দ্রব্যমূল্য ও বাজার পর্যালোচনা করে টাস্কফোর্স সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, পরিশোধিত খোলা চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১০৪ টাকা কেজি। প্রতি কেজিতে দাম কমানো হয়েছে তিন টাকা।

কিন্তু সরেজমিনে বাজারে দেখা গেছে উল্টোচিত্র। কারওয়ান বাজাররের মেসার্স রতন স্টোরের মালিক রতন ঢাকাপ্রকাশ-কে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমরা কি মুখে শুধু শুনব দাম কমেছে? আর বেশি দামে কিনতে হবে? তাও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। সরকার চিনির কেজিতে তিন টাকা কমানোর ঘোষণা দেওয়ার পর আমরা পাচ্ছি না কেন। সিটিগ্রুপ, মেঘনা, দেশবন্ধুসহ কয়েকটি চিনি কলের কাছে সরকার জিম্মি হয়ে গেছে। ১৭ কোটি মানুষকেও জিম্মি করে রাখছে। তারা যা ইচ্ছা তাই করছে।

রতন স্টোরের সত্ত্বাধিকারী আরও বলেন, রমজান মাসে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিটিং করে বললেন, চিনির দাম কমানো হয়েছে। যার যতো লাগবে পাবেন। কিন্তু আমরা চাহিদা মতো তো দূরের কথা ঈদ শেষেও সামান্যতম চিনি পাচ্ছি না। আবার কোনো ডিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীর কাছে পেলেও অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। এভাবে কি ব্যবসা হয়? কেউ টাকা লুট করবে সরকার চুপ করে থাকবে। আর আমরা বেশি দামে কিনে বিক্রি করলে গালি শুনতে হয়। জরিমানা দিতে হয়। মিল মালিকদের ধরতে হবে। না হলে ভোক্তাদের পকেট কাটা বন্ধ হবে না। আমিও ভোক্তা। আবার বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। কিন্তু আয় তো আর বাড়েনি। বরং বিক্রি কমে গেছে।

তেলের দামের ব্যাপারে জানতে চাইলে এই খুচরা ব্যবসায়ী আরও বলেন, মিলমালিকরা চিনির দাম কমানোর ঘোষণা দিলেও কমেনি। বরং বেড়েই যাচ্ছে। আবার তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিলে নতুন রেটের তেল মিল থেকে বাজারে আসেনি। কিন্তু কয়েকটি মিল সিন্ডিকেট করে বেশি দামে বিক্রি করছে। এ জন্য পাইকারি ও ডিলাররাও আমাদের কাছে বেশি দাম নিচ্ছে।

আগে ৫ লিটারের এমআরপি ছিলো ৯০৪ টাকা উল্লেখ করে রতন বলেন, তখন তা কিনতাম ৮৭০ টাকা। সেই তেল কিনতে হচ্ছে ৯০৬ টাকা। মাত্র ৪ টাকা লাভ করে ৯১০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। কিন্তু মিল থেকে যে বাড়তি দাম নিচ্ছে সরকার কি করছে? আবার ভোক্তা অধিদপ্তর এসে আমাদের ধরে। বেশি দাম নেওয়ায় জরিমানা করে। কিন্তু যারা সিন্ডিকেট করে বেশি টাকা আদায় করছে তাদের কিছু হয় না কেন?

তাদের বিরুদ্ধে তো সরকার মামলা করেছে। এমন তথ্যের প্রত্যুত্তরে তিনি বলেন, তাহলে তারা আসল দামে মাল দিচ্ছে না কেন?

আন্তর্জাতিক বাজারের অজুহাতে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন গত ৪ মে প্রতি লিটারে ১২ টাকা দাম বাড়িয়ে ১৯৯ টাকা, ৫ লিটার ৯৬০ টাকা ও খোলা তেল ১৩৫ টাকা লিটার করেছে। সরকারও তা মেনে নিয়েছে। কিন্তু দুই দিন না যেতেই মজুত ফুরিয়ে যাওয়ার অজুহাতে বাজারে দাম বেড়ে গেছে।

একই বাজারের লক্ষীপুর স্টোরের ফরিদ বলেন, চিনি আছে ১৫০ টাকা কেজি। এতো বেশি বলা মাত্র তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমগো বলে লাভ কি? গোড়াতে ধরলে সব ঠিক হয়ে যাবে। তারাই বেশি দাম নিচ্ছে। আমরা গালি খাচ্ছি।

কারওয়ান বাজাররের ইউসুফ জেনারেল স্টোরের মো. ইউসুফও ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, বেশি দামে চিনি কিনে জরিমানা খেতে চাই না। তবে তেলের ব্যাপারে বলেন, আছে। তবে লাভের ধান টিয়ায় খাচ্ছে। মানে আগে ৫ লিটার ৮৭০ টাকায় কিনে ৮৮০ থেকে ৮৯০ টাকা বিক্রি করতাম। এখন গায়ের রেটেই কিনতে হচ্ছে। সেই রেটেই আবার বিক্রি করা হচ্ছে। কারণ বেশি নিলে জরিমানা খেতে হয়।
শুধু এই ব্যবসায়ীই নন, কারওয়ান বাজারের সততা ট্রেডার্স, সালমান ট্রেডার্স, আ. গনি স্টোরসহ অন্যান্য খুচরা ব্যবসায়ীরাও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শুধু শুনছি চিনির দাম কমেছে কিন্তু পাচ্ছি তো না। কোথাও পাওয়া গেলেও তা ১৩০ টাকা। মেঘনা গ্রুপের ডিলার জামান ট্রেডার্সের মালিক জামান বলেন, না পারি কইতে না পারি সইতে। মিল থেকেই বেশি দামে চিনি কিনতে হচ্ছে। তাও আবার সহজে পাওয়া যায় না।

মোহাম্মদপুর টাউনহলের মনির জেনারেল স্টোরের আনোয়ার হোসেন ও একতা জেনারেল স্টোরের সুমনও জানালেন একই তথ্য। তারা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, চিনি নেই। সহজে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার পাওয়া গেলেও দাম বেশি। যতোই দিন যাচ্ছে দাম বাড়ছেই। কি হয়েছে যে সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এভাবে চলতে পারে না। ব্যবসা করব কিভাবে। তেল দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গেই আগের দাম লেখা তেলই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তাই বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে।

এদিকে কৃষিমার্কেটের সিটি এন্টারপ্রাইজের আবু তাহের ও বিক্রমপুরের জসিমও বলেন, চিনি তো নেই। দেশে হচ্ছে কি? সরকার বলছে চিনি দাম কমিয়েছি। কিন্তু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। মিলে যে চিনি উৎপাদন হচ্ছে সেগুলো যাচ্ছে কোথায়? তেলের ব্যাপারে জানতে চাইলে একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নতুন রেটের তেল আসেনি। তারপরও আগের কম দামের তেল হাওয়া। কৃষিমার্কেটে পাওয়ায় যায় না।

চিনি ও তেলের ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভোক্তাদের মধ্যেও চরমভাবে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। টাউনহলে জুয়েল নামে এক বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের বেতন বাড়েনি। কিন্তু এ দোকান সে দোকান ঘুরে বেশি দামেই চিনি কিনতে হচ্ছে। এভাবে সিন্ডিকেট করে রাঘব-বোয়ালরা টাকা লুট করছে, পকেট কাটছে সরকারের দেখা উচিত।

শুধু এই ভোক্তা নয় প্রায় বাজারের ভোক্তাদের একই অভিযোগ, গত বছর তেল লুকিয়ে বেশি দামে বিক্রি করা হয়েছে। এবার চিনি নিয়ে চলছে ছিনিমিনি। দুই দিন থেকে আবার শুরু হয়েছে তেল নিয়ে খেলা। বাড়তি দামের রেট না আসলেও বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।

খুচরা ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, রমজান মাসে ব্যবসায়ীদের বলেছিলাম যার যতো চিনি লাগবে চাইলে মিল থেকে দেওয়া হবে। কিন্তু এভাবে দাম বাড়লেও কোনো ব্যবসায়ী অভিযোগ করেনি।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, মিডিয়াতে তো প্রায় দিন খবর হচ্ছে ভোক্তা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক তা দেখেন না?- এমন জবাবে এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আজও ঢাকার বাইরে আছি।

এর চেয়ে বেশি কিছু জানতে চাইলে মহাপরিচালক বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার পরমার্শ দিয়ে বলেন, উনি এর ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। মিলমালিকদের ধরা হচ্ছে না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা প্রায় খাতের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করে বাড়তি দামের ব্যাপারে ব্যাখ্যা চাচ্ছি। তাদের মতামত নিয়ে সরকারের কাছে দামের ব্যাপারে সুপারিশ করছি। কর্পোরেটদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। প্রতিযোগিতা কমিশন সেটা করেছে। কাজেই কর্পোরেটদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না সেটা বলা যাবে না।

শুধু বড় বড় বাজারে নয়, রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলির ছোট দোকানেও দেখা গেছে বেশি দাম ছাড়া পাওয়া যাচ্ছে না চিনি। আবার আগের কম রেটের তেল বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

আরইউ/এএস

Header Ad
Header Ad

চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৩৯.৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড, সহজে মিলছে না বৃষ্টি

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

চুয়াডাঙ্গায় তাপপ্রবাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। এ জেলায় চলছে মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ, যা রোজাদারদের জন্য আরও কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আপাতত বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার কেন্দ্র জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৩৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যেখানে বাতাসের আর্দ্রতা ছিল মাত্র ১৮%। কেন্দ্রের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, গতকাল ছিল মৃদু তাপপ্রবাহ, যা আজ থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। আগামী কয়েকদিন এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে, তারপর কিছুটা কমতে পারে।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

সকালে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই প্রচণ্ড রোদ শুরু হয়, যা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও তীব্র হয়ে ওঠে। দুপুরের পর গরম অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছে যায়, ফলে বাইরে বের হওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত এই তাপদাহ অব্যাহত থাকে।

চলমান তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বেশি ভুগছেন খেটে খাওয়া মানুষ, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যান চালক ও কৃষকরা। প্রচণ্ড রোদে মাঠে কাজ করতে পারছেন না কৃষকেরা, আবার রাস্তায় চলতে হিমশিম খাচ্ছেন রিকশা-ভ্যান চালকেরাও।

বাইসাইকেলে করে গ্রামে কাপড় বিক্রি করা বৃদ্ধ দবির আলী দুপুরের গরমে ক্লান্ত হয়ে একটি দোকানের চৌকিতে ঘুমিয়ে পড়েছেন। ধানচাষি রাসেল বলেন, "বোরোর ভরা মৌসুমে তীব্র খরা চলছে। প্রতিদিন ধানে সেচ দিতে হচ্ছে, কিন্তু বৃষ্টি নেই। ডিজেলের দাম বেশি, তাই চরম বিপাকে আছি।"

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

ভ্যান চালক বাদশা জানান, "সকালে কিছু ভাড়া পাওয়া গেলেও, রোদ বাড়ার পর আর ভাড়া হচ্ছে না। বসে থাকতে হচ্ছে, অথচ সামনে ঈদ, পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে আছি।"

দিনমজুর পিন্টু মিয়া বলেন, "রোদে মাঠে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। কিছুক্ষণ কাজ করার পর গাছের নিচে এসে বিশ্রাম নিতে হচ্ছে।"

গত কয়েকদিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৮.৫ ডিগ্রির মধ্যে ছিল। তবে আজ শুক্রবার (২৮ মার্চ) তা বেড়ে ৩৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে, যা চলমান গরমের চরম রূপ ফুটিয়ে তুলছে।

Header Ad
Header Ad

জেলা প্রশাসকদের প্রতি ১২ নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

হয়রানিমুক্ত নাগরিক সেবা নিশ্চিতসহ জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) ১২ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে পাঠানো এক চিঠিতে এসব নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

প্রধান নির্দেশনাগুলো:

১. জন্মসনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, জমির নামজারি ও রেজিস্ট্রেশনসহ সব নাগরিক সেবা হয়রানি ও দুর্নীতিমুক্ত রাখতে হবে।

২. পুলিশি তদন্ত ছাড়াই দ্রুত পাসপোর্ট প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।

৩. দ্রব্যমূল্য ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহনীয় রাখতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

৪. জনগণের সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সবধরনের ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

৫. প্রশাসনের কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

৬. সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দূর করতে হবে।

৭. জমি রেজিস্ট্রেশন, জন্মনিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবাগুলোর মানোন্নয়ন করতে হবে।

8. মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।

৯. মাঠ প্রশাসনের কার্যক্রম সরকারের সরাসরি নজরদারিতে থাকবে।

১০. জনগণের অভিযোগ ও সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে হবে।

১১. দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

১২. প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে কোনো ধরনের তদবির বা স্তুতিবাক্য গ্রহণযোগ্য হবে না।

চিঠিতে আরও বলা হয়, জেলা প্রশাসকদের দায়িত্বপালনের ক্ষেত্রে আইন মেনে চলতে হবে এবং সেবা কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। সরকারের সব নির্দেশনা মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নে কঠোর নজরদারি রাখা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।

Header Ad
Header Ad

জুমার নামাজের সময় শক্তিশালী ভূমিকম্প, মিয়ানমারে মসজিদ ধসে নিহত অন্তত ২০

ছবি: সংগৃহীত

শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরে শক্তিশালী জোড়া ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভারত ও বাংলাদেশ। ৭.৭ ও ৬.৪ মাত্রার এই ভূমিকম্পে মিয়ানমারে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি হয়েছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, পাশাপাশি থাইল্যান্ডেও একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া মিয়ানমারে একটি নির্মাণাধীন ভবন ধসে অন্তত ৪৩ জন আটকা পড়েছেন।

বার্তাসংস্থা আনাদোলুর বরাতে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম খিত তিত জানায়, ভূমিকম্পে মিয়ানমারের মান্দালয় প্রদেশের ফো শিং মসজিদসহ অন্তত চারটি মসজিদ ধসে পড়েছে। জুমার নামাজের সময় মসজিদ ধসে পড়ায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন।

একজন উদ্ধারকর্মী জানান, “আমরা যখন নামাজ পড়ছিলাম, তখন হঠাৎ মসজিদ ধসে পড়ে। তিনটি মসজিদ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বেশ কয়েকজন আটকা পড়েছেন। এখন পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে, তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।”

এছাড়া মান্দালয়ের ঐতিহাসিক আভা সেতু ও মান্দালয় প্রাসাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুয়াঙ্গো সিটিতে একটি মঠ ধসে পড়ায় পাঁচ উদ্বাস্তু শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল মিয়ানমারের সাগাইং শহরের ১৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে, ভূ-পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে। ফলে কম্পনের মাত্রা ছিল প্রবল, যা মিয়ানমারের বাইরেও বিভিন্ন দেশে অনুভূত হয়েছে।

থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে ভূমিকম্পের ফলে একাধিক ভবন দুলতে দেখা যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবন মুহূর্তের মধ্যে ধসে পড়ে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই ভবনে তখন ৫০ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। তাদের মধ্যে সাতজন বের হয়ে আসতে সক্ষম হন, তবে ৪৩ জন আটকা পড়েন। তাদের উদ্ধারে চলছে অভিযান।

ভূমিকম্পের ফলে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর আসছে। উদ্ধার তৎপরতা চলছে, তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৩৯.৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড, সহজে মিলছে না বৃষ্টি
জেলা প্রশাসকদের প্রতি ১২ নির্দেশনা দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
জুমার নামাজের সময় শক্তিশালী ভূমিকম্প, মিয়ানমারে মসজিদ ধসে নিহত অন্তত ২০
ঈদে রাজধানীর নিরাপত্তায় ৪২৬ জন ‘অক্সিলারি ফোর্স’ নিয়োগ
যমুনা সেতু মহাসড়কে নেই যানজট, নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরছে উত্তরের মানুষ (ভিডিও)
টাঙ্গাইলে ৪০ দিন জামাতে নামাজ আদায় করে পুরস্কৃত ২১ কিশোর-তরুণ
থাইল্যান্ডে ভূমিকম্প: মুহূর্তেই ধসে পড়ল নির্মাণাধীন বহুতল ভবন
মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্প, ধসে পড়ল ভবন ও সেতু
ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৯ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
সমালোচনার মুখে প্রসিকিউটর আফরোজ পারভীন সিলভিয়ার নিয়োগ বাতিল
ঢাকা-চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্প
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের অধীনে জুলাই অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন
‘ইদ’ থেকে ‘ঈদ’ বানানে ফিরছে বাংলা একাডেমি: আসিফ মাহমুদ
গাজীপুরে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে পিকআপের ধাক্কা, নিহত ২
কাশ্মিরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ৪ ভারতীয় পুলিশ সদস্য নিহত
সফল বৈঠক, ড. ইউনূসকে দৃঢ় সমর্থন চীনা প্রেসিডেন্টের
আজ পবিত্র জুমাতুল বিদা: রমজানের শেষ জুমার তাৎপর্য
যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ হাজার যানবাহন পারাপার, কমছে টোল আদায়ের হার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ঝরল আরও ৪০ প্রাণ, নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৫০ হাজার
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন চীনা প্রেসিডেন্ট