ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয় এমন কোনো আইন হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হয় এমন কোনো আইন করা হবে না। যখনই কোনো আইন করা হয়, তা মানুষের মঙ্গলের জন্যই করা হয়।
ঔষধ ও প্রসাধনীকে একই আইনের আওতায় না এনে বরং এই দুই শিল্পকে পৃথক আইনের আওতায় নিয়ে আসতে প্রসাধনী ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে এ কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
রবিবার (১৬ এপ্রিল) ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) মিলনায়তনে ‘প্রস্তাবিত ঔষধ ও কসমেটিক্স আইন-২০২৩: বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট ও ভবিষ্যৎ প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এতে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
আগামীতে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে প্রসাধনী শিল্পের অংশীজনদের নিয়ে একটি শুনানির আয়োজন করা হবে উল্লেখ করে স্বাস্থমন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ম্যান্ডেট হলো দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন বিষয়গুলোকে রোধ করা। আইনটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে একটি শুনানি আয়োজনে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ঔষধ ও কসমেটিক দুটো পণ্যই সাধারণ ভোক্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। তবে এ দুটি পণ্যের চাহিদা এবং ব্যবহারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। দুটো শিল্পের জন্য যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন অত্যন্ত জরুরি। তবে উৎপাদন পর্যায় থেকে আমদানি পর্যন্ত এ দুটি পণ্যের ব্যবহারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়ায় একই আইনের আওতায় এনে ঔষধের কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রসাধনী সামগ্রীর কার্যক্রম পরিচালিত হলে প্রয়োগের ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীরা প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন।
মো. জসিম উদ্দিন আরও বলেন, কসমেটিক্স এবং ঔষধের জন্য একই আইন ও এর প্রয়োগ ঔষধ প্রশাসনের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ার সম্ভাব্য সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা প্রয়োজন। কারণ আইন অবশ্যই ব্যবসাবান্ধব হতে হবে। অন্যথায় এই শিল্পের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়বে। যা কর্মসংস্থানের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, ড্রাগ আইনটি বেশ ভালো। পূর্বে অ্যান্টিবায়োটিক সবাই যে যার মতো ব্যবহার করতে পারলেও নতুন আইনের মাধ্যমে তা পারবে না। এসময় ক্ষুদ্র শিল্পকে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর মহাপরিচালক আবদুস সাত্তার বলেন, দেশ, দেশের প্রতিষ্ঠান ও জনগণকে বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা সক্ষমতার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশে পরিণত হতে পারবে। স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে বিএসটিআই হতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অ্যাপ্লাইড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. নুরনবী।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর জাভেদ আখতার, বিএসটিআইয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আরাফাত হোসেন সরকার, হেলথকেয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের ডিএমডি ও সিইও মো. হালিমুজ্জামান, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. এম এ মুবিন খান, মিল্লাত কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের এমডি মেহফুজ জামান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি মো. আমিন হেলালী, হাবিব উল্লাহ ডন, ফরেন ইনভেস্টর্স চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি নাসের এজাজ বিজয় প্রমুখ।
জেডএ/এসজি