তথ্য নয়-ছয় করবেন না পরিকল্পনামন্ত্রী
রাজনীতি করলেও এটা স্পষ্ট করে বলতে চাই তথ্য নিয়ে নাড়াচাড়া করব না। নয়-ছয় করব না। দারিদ্র্যের হার কমে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ হয়েছে।
গবেষকদের মতো না হলেও আমি গ্রামেও দেখেছি দরিদ্র মানুষ কমছে। আবার বিআইডিএসও ঢাকা মেট্রোতে সার্ভে করে দেখেছে দারিদ্র্যতা কমছে। কারণ হচ্ছে করোনাকালে বিশ্বে অনেকে লকডাউন করলেও আমরা সব কিছু খুলে রেখেছিলাম। মিল-কলকারখানা খোলা ছিল, কৃষকরা মাঠে কাজ করত। খানা আয় ও ব্যয় জরিপ-২০২২ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বুধবার (১২ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস মিলনায়তনে এ প্রকাশনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। বিবিএসের মহাপরিচালক মো. মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিআইডিএস মহাপরিচালক ড. বিনায়েক সেন, বিবিএসের যুগ্নসচিব দিপংকর রায়সহ অন্যরা।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘করোনাকালে আগুণে পানি ছিটানোর মতো নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল, স্বল্পমূল্যে এক কোটি পরিবারকে খাদ্য সরবরাহসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে এক বিলিয়ন (১০০ কোটি) ডলারের বেশি আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ জন্য কোভিডের সময়ও প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার ফলে গত কয়েক বছরে দারিদ্রের হার কমেছে। সারা দুনিয়াকে জানিয়ে দেওয়ার মতো ৯৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। ৯২ শতাংশ মানুষ পরিষ্কার পানি পাচ্ছে, খানার আয়-ব্যয় জরিপে স্বাক্ষরতার হার বেড়ে ৭৪ শতাংশ হয়েছে।
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সাংস্কৃতিক বৈষম্যচর্চার কারণে গ্রাম ও শহরে কিছু বৈষম্য রয়ে গেছে। যেমন কেউ বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিক্যাল কলেজ করলে ঢাকা শহরে করতে চাই। তবে এই খানার আয় ব্যয় জরিপ ভালো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এর প্রশংসা করেছে। এই খানা জরিপ প্রতি তিন বছর পর পর করতে হবে।’
সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, হতদরিদ্র এত কমল এটাই স্বাভাবিক। অবাক হওয়ার কিছু নেই। নেতিবাচক মন্তব্য ও হায় হায় করে লাভ নেই। কারণ, সরকার মানুষকে বিভিন্ন সুবিধা দিয়েছে। এসব দ্রুত গ্রামে পৌঁছে গেছে। এর ফলে গ্রামে শ্রমিক পাওয়া যায় না। আইএমএফসহ অনেকে আমাদের প্রশংসা করছে।
তিনি আরও বলেন, আয় বৈষম্য মোটেই বাড়ছে না। বরং স্থিতিশীল রয়েছে। বিদেশিরা বাটার, সফট ড্রিংক ব্যবহার করে বলে তাদের ক্যালরি বেশি। আমরাতো সেগুলো খাই না।
ড. বিনায়েক সেন বলেন, দেশে চরম দরিদ্র ক্রমশ শেষ হতে চলেছে। তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ, গরিবরা ধনী হওয়ার চেষ্টা করছে। এ জন্য দরিদ্র ও হতদরিদ্র কমছে।
বিবিএসের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমি মনে করি এবারের খানা আয়-ব্যয়ের জরিপ ভালো হয়েছে, এ জন্য অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে। স্যামপ্লিং করেই এটা করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে করা হয়নি। এটা করাও সম্ভব না।’
জেডএ/এমএমএ/