আবারও মুরগির দাম লাগামহীন
আবারও লাগামহীন হয়ে পড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। এ ছাড়া পাকিস্তানি মুরগি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। রমজানের প্রথম দিকে ফলের দাম বেশি থাকলেও বর্তমানে তরমুজসহ কয়েকটি ফলের দাম কমের দিকে। কমেছে শসা ও লেবুর দামও। এ ছাড়া ডিমের দামও কমে ১২০-১২৫ টাকা ডজন বিক্রি হচ্ছে।
শনিবার (২৫ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, টাউনহল ঘুরে সংশ্লিষ্ট খুচরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্র দেখা গেছে।
রমজানের আগেই মুরগির বাজার একেবাবে অস্থির হয়ে গেলে শীর্ষ ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কঠোরভাবে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। বাধ্য হয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা কম লাভে মুরগি বিক্রি করতে শুরু করেছেন। দুদিন (শুক্রবার-শনিবার) হলো আবার লাগামহীন হয়ে পড়েছে। টাউনহল মার্কেটের মায়ের দোয়া পোল্ট্রির মিজান ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ব্রয়লার ২৩০ টাকা ও পাকিস্তানি ৩৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। হঠাৎ দাম বেড়ে গেছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। অন্যান্য মুরগি ব্যবসায়ীরাও বলছেন দাম বেশি।
কিন্তু সেই মুরগি কারওয়ান বাজারে একটু কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে।
নুরজাহান ব্রয়লার হাউজের নবীসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা জানান, আগের চেয়ে একটু দাম বেড়েছে। তাই বর্তমানে ব্রয়লার ২০০ ও পাকিস্তানি মুরগি ৩২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে মুরগির দাম বৃদ্ধি পেলেও গরুর মাংস আগের মতোই ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, খাসির মাংসও ১০০০ থেকে ১১০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে বলে মাংস বিক্রেতা জানান।
ডিমের দাম আগের সপ্তাহে চেয়ে ৫ থেকে ১০ টাকা কমে মতো ১২০-১২৫ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান। এলাকাভেদে এই দাম কম-বেশি হচ্ছে।
তবে মুরগির দাম বাড়লেও কারওয়ান বাজার ও টাউনহলে আগের মতোই রুই, কাতলা, ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। মাছ বিক্রেতারা জানান, রুই, কাতলা ২৫০-৪৫০ টাকা কেজি। তবে বড়টা আরও বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। চিংড়ি ৫০০-১২০০ টাকা কেজি, টেংরা, বোয়াল, আইড় ৫০০-৮০০ টাকা, কাচকি ৩০০-৩৫০ টাকা, শিং ৪০০-৬০০, কাজলি ও বাতাসি ৬০০ টাকা, পাঙ্গাস ও তেলাপিয়া ১৫০-২০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া, ইলিশও আকারভেদে ১২০০-১৪০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আর হাফ কেজির ইলিশ ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
এখনো বেশি দামে চিনি বিক্রি
দীর্ঘ দিন থেকে মিল মালিকরা বললেও বাজারে খোলা চিনির কেজি ১০৭ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনির কেজি ১১২ টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। ভোক্তাদের বেশি দামেই ১২০ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে। কারণ ডিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরাই ঠিকমতো পাচ্ছে না। তাই খুচরা ব্যবসয়ীরাও বিক্রি করছে না।
তবে ১ লিটার সয়াবিন তেল ১৮৫-১৮৭ টাকা, ২ লিটার ৩৭০-৩৮০ টাকা ও ৫ লিটার ৮৭০-৯০৫ টাকা, মসুর ডাল ৯৫-১৩৫ টাকা কেজি, প্যাকেট আটা ২ কেজি ১৩০ টাকা ও খোলা আটার কেজি ৬০ টাকা, ময়দা ১৫০ টাকা, ছোলা ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
পেঁয়াজের দামও বাড়েনি। বরং কমের দিকে। প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা ও কেজি ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। দেশি রসুন ১০০ টাকা, চায়না রসুন ২৪০ টাকা কেজি, দেশি আদা ১১০-১৪০ টাকা ও বিদেশি আদা ২৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
কমেনি চালের দাম
দেশে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও কমছে না চালের দাম। আগের মতোই মোটা স্বর্ণা চাল ৪৪ থেকে ৫০ টাকা, ২৮ ও পাইজাম ৫৬ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে বিভিন্ন কোম্পানির বস্তার মিনিকেট চালের কেজি ৭২ টাকা বিক্রি করা হলেও আকিজ, রূপচাঁদা, প্রাণ, সিটি গ্রুপসহ বিভিন্ন কোম্পানির বস্তার মিনিকেট চাল ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
কমের দিকে বেগুণ, শসা, লেবুর দাম
রমজানের প্রথমে লেবুর হালি ৭০ থেকে ১০০ টাকা হালি বিক্রি হলেও বর্তমানে অনেক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের স্বপন বলেন, বড় লেবুর হালি ৪০ টাকা ও ছোটগুলো ২০ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। এসব আগে অনেক বেশি দামে বিক্রি করা হতো। অন্যান্য বাজারেও কম দামে লেবু বিক্রি হচ্ছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান। একইভাবে রমজানের প্রথমে শসার দাম বেশি হলেও বর্তমানে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।
এদিকে রমজানে বাজারে চাহিদা কম থাকায় সবজির দামও স্থির হয়ে আছে। আগের চেয়ে বাড়েনি। বেগুন আগে বেশি দামে বিক্রি হলেও বর্তমানে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, পটল ও ঢেঁড়স ৬০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা, আলু ২৫-৩০ টাকা, প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ২০-৪০ টাকা, লাউ ৬০ থেকে ৮০ টাকা, শিমের কেজি ৩৫-৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৩০ টাকা, মূলা ও পেঁপের কেজি ২০-৩০ টাকা, গাঁজর ৩০-৪০ টাকা বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। তবে সজনাও কম দামে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজি, লাল ও পালং শাকের আঁটি ১০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও ধনিয়ার পাতা ১০ থেকে ১৫ টাকা আটি বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
জেডএ/এসএন