শিক্ষায় বরাদ্দ কমল ৪২ এবং স্বাস্থ্যে ৩৮ শতাংশ

সরকার শিক্ষা খাতে বেশি গুরুত্ব দিয়ে চলতি অর্থবছরে (২০২২-২৩) ২৫ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও তা ব্যয় করতে পারছে না। বাধ্য হয়ে সরকার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে ১০ হাজার ৬৩৯ কোটি টাকা বা ৪১ দশমিক ৪৯ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ কমিয়েছে।
এর মধ্যে শুধু মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে ১৪ হাজার কোটি থেকে কমিয়েছে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা বা ৪৮ শতাংশের বেশি। এটি সংশোধিত এডিপির প্রায় ৩৭ শতাংশ। কারণ আরএডিপিতে মোট বরাদ্দ কমানো হয়েছে ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এরপরই স্বাস্থ্য বিভাগে বরাদ্দ কমানো হয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি ৩৮ শতাংশ।
এ ব্যাপারে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, অর্থনৈতিক গতি এবং প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার জন্য এডিপিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের চাহিদার প্রেক্ষিতে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) ২১টি মন্ত্রণালয়ের অর্থ বরাদ্দ বেড়েছে এবং কমেছে ৩৭টি মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ।
অনেক অর্থ বরাদ্দ পেলেও ব্যয় করতে না পারার কারণ জানতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
অপরদিকে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিফ না করায় কোনো মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে , সরকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ এগিয়ে নেওয়ার জন্য চলতি অর্থবছরে সবমিলে এডিপিতে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ দিয়েছিল। এর মধ্যে বিদেশি ঋণ ধরা হয়েছিল প্রায় ৯৬ হাজার কোটি টাকা। বাকি এক লাখ ৬০ হাজার ১৭০ কোটি টাকা সরকারি কোষাগার ও বিভিন্ন সংস্থার নিজস্ব অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
১০টি মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে ৩৬ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। এরপরই বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ৩৯ হাজার ৪১২ কোটি টাকা। তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ ছিল শিক্ষা খাতে ২৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। এরপরে স্বাস্থ্যখাতে ছিল ১৯ হাজার ৭৮ কোটি টাকা।
কিন্তু অন্যান্য খাতে তেমন না কমলেও শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে উন্নয়ন কাজের গতি পায়নি। বাধ্য হয়ে সরকার বুধবার (১ মার্চ) চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ কমিয়েছে ১৮ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে ১৪ হাজার কোটি থেকে কমিয়ে ৭ হাজার ২১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কমানো হয়েছে ৬ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। যা মোট কমানোর ৪১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এরপর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ১১ হাজার ৬৪২ কোটি থেকে কমিয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৮৫৭ কোটি টাকা। কমানো হয়েছে ৩ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা। তবে এককভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে ১৫ হাজার ৮৫১ কোটি থেকে কমিয়ে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৯ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা। ব্যয় করতে না পারায় সংশোধিত এডিপিতে কমানো হয়েছে ৬ হাজার ৭১ কোটি টাকা বা ৩৮ শতাংশ।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসনের সভাপতিত্বে পরিকল্পনা কমিশনের এনএসসি সম্মেলন কক্ষে বুধবার (১ মার্চ) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় আরএডিপির অনুমোদন দেওয়া হয়।
জেডএ/এমএমএ/
