খুচরা বাজারে প্রভাব পড়েনি ডিমের পাইকারি দামের

গত প্রায় এক সপ্তাহ থেকে তেজগাঁও আড়তে প্রতি ডজন ডিমের দাম ১৮ টাকা কমে ১১৪ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু খুচরা বাজারে সেভাবে তার প্রভাব পড়েনি।
এখনো কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে সেই ডিম ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা ডজন বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন পাড়া মহাল্লায় তা ১৩৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এতে ভোক্তাদের বাড়তি টাকা চলে যাচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীদের পকেটে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে।
ডিমের দামের ব্যাপারে জানতে চাইলে তেজগাঁও আড়তের নাসির অ্যান্ড ব্রাদার্স এর মালিক মো. নাসির উদ্দিন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘প্রায় এক সপ্তাহ থেকে ১০০ ডিম ৯৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। যা আগে ছিল ১ হাজার ৭০ টাকা। ১২৮ টাকার ডিম বর্তমানে ১১৪ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দাম বাড়লে ব্যবসা একেবারে কমে যায়। হাজারে ১৫ থেকে ২০ টাকা লাভ করলেই যথেষ্ট। কাজী, প্যারাগন রেট দিয়ে থাকে। তারাই বাজারে দাম দেয়। সেভাবে আমরা টাঙ্গাইলের বিভিন্ন ফার্ম থেকে ডিম কিনে ৫ পয়সা লাভে বিক্রি করি। এটাই অনেক বেশি।’
নীলিমা এন্টারপ্রাইজের জোবায়েরও বলেন, কয়েকদিন থেকে ১০০ ডিমের দাম কমে ৯৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। যেটা আগে ছিলো ১ হাজার ৭০ টাকা বা পিস ১০ টাকা ৭০ পয়সা। কাজী, প্যারাগনসহ বিভিন্ন কোম্পানি দর দেয়। কয়েকদিন থেকেই এ দামে বিক্রি করছি। আমরা ফার্ম থেকে ডিম এনে বাজার দরে বিক্রি করি। বিনিময়ে তাদের কাছ থেকে ২০ পয়সা কমিশন পাই।
শুধু এই দুই আড়তেই নয়, তেজগাঁও আড়তের অন্যান্য ব্যবসায়ীরাও জানান কয়েকদিন থেকে কমেছে ডিমের দাম। কিন্তু খুচরা বাজারে সেভাবে কমেনি। আড়তে ডজনে ১৪ টাকা কমলেও একটু দূরেই খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা ডজন। যেখানে আগে তারা বিক্রি করত ১৪০ টাকা ডজন।
কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটের সামনে খুচরা ডিম বিক্রেতা রহমত জানান, আগে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকা ডজন বিক্রি করা হতো। বর্তমানে একটু দাম কমে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে ফার্ম থেকে শুরু করে আড়তদাররা বলছেন, এর চেয়ে কম দামে ডিম বিক্রি করলে প্রায় ফার্ম বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ, বর্তমানে খাদ্যের দাম বেশি। পরিবহন খরচও বাড়তি। আবার করোনার সময় অনেক ফার্মও বন্ধ হয়ে গেছে। তাই উৎপাদনও কমে গেছে। কিন্তু চাহিদাতো সেভাবে কমেনি। তবে সামনে রমজান মাস আসছে। চাহিদা কমে যাওয়ায় কিছুটা দাম কমবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে হঠাৎ করেই অস্থির হয়ে উঠেছিল ডিমের বাজার। তাই বাধ্য হয়ে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর মাঠে নামে। বেরিয়ে আসে ডিম কারসাজির বিষয়টি। তাদের সুপারিশে বাধ্য হয়ে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন কাজী ফার্মস, প্যারাগনসহ কয়েকটি কোম্পানির বিরুদ্ধে গত ২৭ সেপ্টেম্বর মামলাও করেছে। সেসব মামলা এখানো নিস্পত্তি হয়নি।
জেডএ/এমএমএ/
