‘রমজানে দাম বাড়ানোর নাটক বন্ধ করতে হবে’
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, মুখে বলবেন বিভিন্ন সমস্যার কারণে পণ্য নেই। কিন্তু সরকারের লোক অভিযানে গেলেই খাটের ও মাটির নিচে ৫০০, ২ হাজার কেজি তেল পাওয়া যাচ্ছে, তা হবে না। নেই তো নেই। ৩০০ বছরের রেওয়াজ রমজান এলেই দাম বাড়ানো। এভাবে নাটক সিনেমা বন্ধ করতে হবে। এতে ব্যবসায়ীদের প্রতি মানুষের আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে।
রাজধানীর মতিঝিলে রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) এফবিসিসিআইয়ের সম্মেলনকক্ষে রমজান উপলক্ষে নিত্য পণ্যের মজুদ, সরবরাহ ও দামের ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জসিম উদ্দিন বলেন, রমজান এলে জিনিসপত্রের দাম আমরা বাড়িয়ে দেব- এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইহুদিরাও উৎসবে পণ্যের দাম কমায়। আমারও একান্ত ইচ্ছে এবার যাতে দাম কমাতে পারি।
চিনি, তেলসহ বিভিন্ন পণ্যের মিল মালিকদের উদ্দেশে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, মাল বিক্রি করব কাগজ দেব না, তা হবে না। কাগজ ছাড়া সড়কে পণ্য কীভাবে যায়। এ কারণে বৈধ মাল অবৈধ হয়ে যাচ্ছে। ভোক্তা অধিদপ্তরসহ অন্যরা জরিমানা করবে কাগজ না পেলে। এভাবে আর কতকাল চলবে? ডিজিটাল ছেড়ে স্মার্ট বাংলাদেশে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। দোষারোপের নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কারণ এভাবে যেকোনো ছুতায় পণ্যের দাম বাড়ানোর কারণে ব্যবসায়ীদের প্রতি মানুষের আস্থা হারিয়ে যাচ্ছে। তাই দাম বাড়ানোর নাটক-সিনেমা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রমজানে যাতে পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে এজন্য অনেক আগেই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে মিটিং করে এলসির ব্যাপারে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রয়োজনের দুই-তিন বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ থেকে যাওয়া হয়েছে।
মেঘনা ও সিটি গ্রুপের খুচরা ব্যবসায়ী ও ডিলাররা কথা বলতে চাইলে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, ‘এই তোমরা কেন, তোমাদের মালিকরা কোথায়। এত গুরুত্বপূর্ণ মিটিং-এ কোনো প্রতিনিধি থাকবে না, মালিকদের আসতে হবে। করপোরেটরাই সব জিনিসের দাম বাড়াচ্ছে। বড় বড় করপোরেটরা চাল ব্যবসায় নেমেছে। সিটি গ্রুপ চাউলের ব্যবসায় নেমেছে। বিশ্বের সবচাইতে বড় চাউলের কারখাানা করেছে। এটা কি খুবই দরকার ছিল? তাহলে তো কিছুদিন পর আর খুচরা ব্যবসায়ী থাকবে না।
মেঘনা গ্রুপের জিএম তসলিম উদ্দিন একপর্যায়ে বলেন, আমরা তো কম দামে দিচ্ছি। এসময় জসিম উদ্দিন বলেন, কীসের ভর্তুকি দিচ্ছেন। আগে মানবতা দেখাতে হবে। তিনি আরও অভিযোগ করে বলেন, কই পেঁয়াজ, আলু ব্যবসায়ীরা তো দাম বাড়াতে পারল না। মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবুর অনেক কোল্ড স্টোরেজ আছে। কিন্তু দাম তো বাড়ছে না। আমাদের অবশ্যই সৎ ব্যবসায়ী হতে হবে। এবার রমজানে যাতে আর খাটের নিচে, মাটির নিচে কোনো মাল রাখা না হয়।
আর ভোক্তারদের উদ্দেশে তিনি বলেন, রমজানে একসাথে বেশি পণ্য কিনবেন না। অন্য মাসের মতন স্বাভাবিকভাবে তেল চিনি সবকিছু কিনবেন তাহলে চাপ পড়বে না। সাপ্লাই চেইন ঠিক থাকবে।
জেডএ/এসএন