বাজার থেকে উধাও চিনি
ফাইল ছবি
সরকার চিনির দাম ৯০-৯৫ টাকা কেজি বেঁধে দিলেও খুচরা বাজারে তা পাওয়া যাচ্ছে না। বিক্রেতারা বলছেন, সরকার চিনির দাম বেঁধে দিলেও আমরা পাচ্ছি না। তাহলে সিটি, মেঘনাসহ বিভিন্ন কোম্পানির চিনি গেল কোথায়?
এদিকে পেঁয়াজের দামও কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়ে ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে বিক্রেতারা। চালের দামও কমেনি। আরও এক মাস অপেক্ষা করতে হবে। তবে সবজিতে একটু স্বস্তি দেখা দিয়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে কমেছে ৫-১০ টাকা।
শনিবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
দাম নির্ধারণ করলেও বাজারে নেই চিনি
চলতি মাসের প্রথম দিকে চিনি রিফাইনারি মিলমালিক ও সরকার প্রতি কেজি খোলা চিনি ৯০ টাকা ও প্যাকেটজাত ৯৫ টাকা কেজি বিক্রির ঘোষণা দিলেও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের ইউসুফ জেনারেল স্টোরের ইউসুফ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, যে দিন থেকে খোলা ও প্যাকেট চিনি ৯০ ও ৯৫ টাকা কেজি ঘোষণা করা হয়েছে তারপর থেকেই আমরা চিনি পাচ্ছি না। তাই বিক্রিও করতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, ডিলাররা চিনি পেলে আমরাও খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করতে পারব। কিন্তু ডিলাররাও পাচ্ছে না। তাহলে মেঘনা, সিটিসহ বিভিন্ন যে চিনির মিল রয়েছে তারা কি বন্ধ করে দিয়েছে। তাহলে সরকার দেখে না কেন?
শুধু ইউসুফই নয়, কারওয়ান বাজারের জব্বার স্টোর, ইয়াসিন স্টোরসহ খুচরা দোকানের ব্যবসায়ীরা জানান, ১০-১৫ দিন থেকে চিনি পাই না। তাই বিক্রিও করতে পারি না। তারা আরও বলেন, আটা, ময়দাতেও নেই সুখবর। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ২ কেজি আটার প্যাকেট ১৩০ ও ময়দা ১৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে ইউসুফ বলেন, নতুন রেটে চিনি পাওয়া না গেলেও সয়াবিন তেল কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে। ৫ লিটার ৮৬০-৮৭০ টাকা, ২ লিটার ৩৫০ টাকা এবং ১ লিটার ১৭০ টাকা। মসুর ডাল ৯০-১৩৫ টাকা কেজি।
চালেও নেই সুখবর
সরকার চালের বাজার স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা করলেও তা হচ্ছে না। এখনো কোনো চালের দাম কমেনি। একই বাজারের কুমিল্লা রাইস জেনারেল স্টোরের শহিদুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, মিনিকেট চালের দাম কমেনি। এখনো ৭৫ টাকা কেজি, ২৮ চাল ৬৬ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। তবে মোটা চাল নেই।
অন্যান্য চাল বিক্রেতারও বলছেন, পোলাও চালের দামও কমছে না। খোলা চাল ১২৫ টাকা ও কোম্পানির প্যাকেট চাল ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
পেঁয়াজের ঝাঁজও বেড়েছে
সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের কেজিতে বেড়েছে ৫-১০ টাকা। রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের বেশি দামে কেনা। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। ভালো মানের রাজশাহীর পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। কারণ পাল্লাতেই বেড়েছে ২০-৩০ টাকা। অন্যান্য পেঁয়াজের কেজি ৫০-৫৫ টাকা। আদার দামও আগের মতো ১৮০ টাকা। তবে দেশীয় আদা ১০০ টাকা, রসুন ৭০ টাকা, আর চায়নাটা ১৩০-১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
ঝিম ধরে মাছ-মাংসের দর
নদীর পানি কমলেও খাল, বিলের মাছের দাম কমছে না। এ ব্যাপারে মাছ ব্যবসায়ী নুরুদ্দিন ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, হুদাই নদীর মাছ বলে সব। আসলে বাজারে নদীর তেমন কোনো মাছ নেই। দামও কম না। রুই, কাতলার কেজি ২৮০-৪৫০ টাকা, চিংড়ি ৬০০-১০০০ টাকা কেজি, বোয়াল ৮০০-১২০০ টাকা, কাচকি ৪০০-৫০০ টাকা, পাঙ্গাস ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। আগের সপ্তাহে দাম বাড়লেও তা কমেনি।
কারওয়ান বাজারের জননী পোল্ট্রি হাউজের জনি বলেন, প্রতি কেজি বয়লার ১৮০ টাকা, লাল লেয়ার ৩০০ টাকা, পাকিস্তানি ৩২০ টাকা ও দেশিটা ৫৫০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। এদিকে গরুর মাংস ৭০০ টাকা, খাসির মাংস ৮৫০-৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।
কমছে সবজির দাম
গত সপ্তাহের তুলনায় বাড়েনি কোনো সবজির দাম। বরং শীত ঘনিয়ে আসায় কমেছে কয়েকটি সবজির দাম। বেগুন, পটলের দাম কমেছে। পটল ৪০ টাকা, বেগুন ৭০ টাকা ও মরিচের দাম কমে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, প্রতি কেজি সিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, ঝিঙে, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, ঢেড়স, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা, শসা ৫০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
জেডএ/এসজি