রাজনীতিকদের চেয়ে আমলাদের কর্তৃত্ব বেশি: পরিকল্পনামন্ত্রী
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে আরও বিনিয়োগ করতে হবে। দারিদ্র্য কমিয়ে ঝামেলামুক্ত জীবনের সুযোগ করতে হবে। চীনসহ অনেক দেশ নেগোশিয়েশন করেই কর্তৃত্ববাদীর জায়গায় চলে এসেছে। আমাদের দেশেও অদ্ভুত ধরনের আমলাতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদ আছে। রাজনীতিকদের চেয়ে আমলাদের কর্তৃত্ববাদ বেশি। আমলাতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদের কারণে উন্নয়নের গতি থমকে যাচ্ছে।
’স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশ: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরে-ই বাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে গেছে। এটা ধরে রাখতে বিভিন্ন জনের সঙ্গে নেগোশিয়েশন (আলোচনা) খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, যে দাম-দর করতে পারে সে কম দামে জিনিস কিনতে পারে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, গত দুই দশকে দুইটা মাইলফলক অর্জন হয়েছে বাংলাদেশে। তা হচ্ছে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয় এবং স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন। এলডিসি গ্রাজুয়েশন হলে কোন মন্ত্রণালয় কিভাবে কাজ করবে তা উল্লেখ করা হয়েছে। এলডিসি থেকে গ্রাজুয়েশনের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করতে হবে। বাণিজ্য সুবিধা বাড়াতে হবে বিভিন্ন বন্দরে।
বাংলাদেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানব উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিশেষ করে টেকনিক্যাল অবকাঠামো বাড়াতে হবে।
অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের এলডিসি গ্রাজুয়েশনের সুযোগ হয়েছে। তাই ত্রিমাত্রিক সংশ্লেষকের সন্নিবেশ করতে হবে। পরিবহন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। আঞ্চলিক সংযোগ বাড়াতে হবে। বর্তমানে অর্থনীতির যে গতি তাতে কর্মহীন প্রবৃদ্ধি করলে হবে না। তা অন্তর্ভূক্তিকরণ প্রবৃদ্ধি হতে হবে।
প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ’আমরা তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুতি ঠিক রাখতে হবে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’
ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এলডিসি উত্তরণের পর অন্যতম ইস্যু হচ্ছে প্রতিযোগিতা। এজন্য অবশ্যই দর কষাকষির বা আলোচনার দক্ষতা বাড়াতে হবে। আমাদের সমস্যা হলো কিছু চাইতে হলে দিতে হবে। সেটি অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না। অর্থাৎ কোনো দেশ থেকে বাণিজ্য সুবিধা নিতে গেলে তাদেরও কিছু সুবিধা দিতে হবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের শুল্ক অনেক বেশি। সেগুলো কমানো দরকার।
সংগঠনের সভাপতি এফ এইচ এম হুমায়ন করীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সম্মানীয় অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা বিভাগ সচিব প্রদীপ বঞ্জন চক্রবর্তী। এতে আলোচক হিসেবে ছিলেন পিআরআইর নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর।
জেএ/এসআইএইচ