এখনো কমেনি মাছ, মাংস, চালের দাম
রাজধানীতে সরবরাহ কমে যাওয়ার অজুহাতে মাছ, মাংস, মুরগির দাম কমছে না। আমদানিকৃত চাল দেশে না আসায় কমেনি চালের দাম। আগের মতোই বেশি দামে এসব জিনিস বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, সপ্তাহের ব্যবধানে কোনো কোনো সবজির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা।
শনিবার (৩০ জুলাই) রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্ট ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনই চিত্র পাওয়া গেছে।
এখনো বেশি দামে চাল বিক্রি
সরকার চালে শুল্ক কমালেও বাজারে তার প্রভাব দেখা যায়নি। আগের মতোই মিনিকেট ৬৬ থেকে ৭০ টাকা কেজি, বাসমতি ৮০ থেকে ৮২ টাকা, ব্রি ২৮ চাল ৫২ থেকে ৫৪, চিনিগুড়া ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে প্রায় দোকানেই মোটা চাল পাওয়া যায় না। কোনো কোনো দোকানে পাওয়া গেলেও ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। এখনো কমছে না কেন চালের দাম? জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের বরিশাল রাইস এজেন্সির আল হাসিব ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘ভারতের চাল এখনো দেশে আসেনি। তাই কমেনি চালের দাম। আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মো. আ. আওয়াল তালুকদার জানান, ‘ট্যাক্স কমানোর প্রভাব এখনো বাজারে দেখা যায়নি। আমদানি করা চাল দেশে এখনো আসেনি। তাই বেশি দামে কেনা, বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে।
কম দামে তেল বিক্রি
সরকার ও মিলমালিকরা তেলের দাম কমিয়ে ১৮৫ টাকা লিটার বিক্রি করার যে ঘোষণা দিয়েছে দেরিতে হলেও বাজার তা বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা। কারওয়ান বাজারের ইউসুফ জেনারেল স্টোরের মো. ইউসুফ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘আগে বেশি দামে বিক্রি করা হলেও কয়েক দিন থেকে কম দামে সয়াবিন তেল বিক্রি করা হচ্ছে। ৫ লিটোর তেল ৮৮০ থেকে ৮৯০ টাকা, ২ লিটার ৩৭০ টাকা ও এক লিটার ১৮৫ টাকা বিক্রি করা হচ্ছে। ঈদের পরে আটার দামও কমেছে। আগে ২ কেজির আটা ১১৫ টাকা বিক্রি করা হলেও বর্তমানে দাম কমে ১০০ টাকা কেজি। ডাল ১০০ থেকে ১৩০ টাকা, প্যাকেট চিনির কেজি ১০০ টাকা, তবে খোলাটা ৮০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। মসলা আগের দামেই বিক্রি করা হচ্ছে।
বাড়তি মুরগির দাম, কমেনি খাসির দাম
ঈদের পর সরবরাহ কমে যাওয়ার অজুহাতে মুরগির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে গেছে। ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও কমছে না। এখানো বেশি দামে মুরগি বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা। আল্লাহর দান চিকেন হাউজের আল করিম ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, পাকিস্তানি মুরগির কেজি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি, দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা ও ব্রয়লার ১৬৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। ডিমের দামও আগের মতোই ১২০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে।’
তবে ঈদুল আজহার পর খাসির মাংসের কেজি ১০০০ টাকায় উঠার পর আর নামেনি। আগের মতোই হাজার টাকা কেজি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। কারওয়ান বাজারের জনপ্রিয় মাংস বিতানের নুরুল ইসলাম ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান, বাজারে সরবরাহ কম। বেশি দামে কেনা, তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে মাংস। সরবরাহ বাড়লে হয়ত আগের মতো ৫০ টাকা কমতে পারে।’
কমেনি মাছের দাম
কম সরবরাহের অজুহাতে মাছের দামও চড়া। মাছ ব্যবসায়ী ফারুক ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘ঈদের পর বাড়ে মাছের দাম। পানি কমে যাওয়ায় মাছের পরিমান কমে গেছে। তাই বাড়তি মাছের দাম। বর্তমানে রুই ও কাতল মাছ ২৩০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি, নদীর চিংড়ি ১৪০০ টাকা, বেলে ১০০০ টাকা, আইড় ১০০০ টাকা, পুঁটি ৮০০ কেজি, বোয়াল ৫০০, পাবদা ৬৫০, আইড় ৬০০ টাকা, ২ কেজি ওজনের ইলিশের দাম ২৫০০ টাকা কেজি, দেড় কেজি ওজনের ২০০০ টাকা ও ৭০০ গ্রাম ইলিশের কেজি ১১০০ টাকা, কাচকি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। কমছে না দাম। কখন কমবে তা বলা যাচ্ছে না।’
মরিচের কেজি ১৭০ টাকা
কোরবানির ঈদের পর শসার কেজি কমে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে মরিচের দাম কমছে না। প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। সবজি বিক্রেতারা জানান, ‘মরিচের দাম কমে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি, লেবুর হালি ১০ থেকে ২০ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, পেঁপের কেজি ২০ টাকা। তবে পটল, ঢেঁড়স, কুমড়া ও লাউ ২০ থেকে ৫০ টাকা পিস, লাল ও পাট শাক ১০ টাকা করে আটি, পুঁইশাক ও লাউশাক ১৫ টাকা আটি বিক্রি করছে খুচরা বিক্রেতারা। ঈদের আগের মতোই প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি, রসুন ৭০ থেকে ১১০ ও আদা ১০০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে। তবে গাজরের কেজি ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে।
জেডএ/এমএমএ/এএস