পোশাকশ্রমিকের নিরাপত্তা মজবুত করতে পাইলট প্রকল্প
তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের কর্মস্থলে দুর্ঘটনা থেকে নিরাপত্তা প্রদানে শ্রম ও কর্মসংস্থার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে (পাইলট) নতুন একটি প্রকল্প শুরু করেছে ‘আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা’ (আইএলও)।
এই যাত্রায় মন্ত্রণালয় ও আইএলও-কে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করে আসছে নেদারল্যান্ড এবং জার্মানি সরকার। এরই ধারাবাহিকতায়, আয় সুরক্ষা নিশ্চিতের মাধ্যমে উন্নত সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার আওতায় থাকবে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতের (আরএমজি) শ্রমিকরা।
আইএলও এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের (এমওএলই) যৌথ উদ্যোগে মঙ্গলবার (২১ জুন) ‘এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিম’ (ইআইএস) প্রকল্পের পাইলট প্রোগ্রামের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
আরও উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এহসান-এ-এলাহী; আইএলও বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পৌটিআইনেন; জার্মানি, নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডসের দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এনসিসিডব্লিউই, শ্রমিক সমিতি, উন্নয়ন সহযোগী ও অন্যান্য জাতীয় স্টেকহোল্ডারদের গণ্যমান্য প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতি ও ক্রমবর্ধমান জিডিপি-তে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। তাই তাদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
‘এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্ক্রিম’ (ইআইএস) পাইলট প্রোগ্রামের সাফল্যের পর অন্যান্য অর্থনৈতিক খাতেও এরূপ সুবিধা প্রদান করা হবে। তৈরি পোশাক শিল্পের কোন কর্মী কাজ করার দরুন আহত, নিহত ও দুর্ঘটনার শিকার হলে তাকে বা তার পরিবারকে দীর্ঘমেয়াদে মাসিক ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে।
অনুষ্ঠানে সালমান এফ রহমান, এমপি বলেন, ‘বাংলাদেশের সরকার দেশের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বদা স্বচেষ্ট। এই প্রকল্পটি তারই একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
আইএলও বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পৌটিআইনেন বাংলাদেশের শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, ‘দেশের তৈরি পোশাক শ্রমিকদের দুর্ঘটনা জনিত নিরাপত্তা মজবুত করতে ইআইএস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটি একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপও বটে। সরকার, সকল মালিক পক্ষ ও শ্রমিক পক্ষের সাথে কাজ করে একটি আধুনিক ও সমসাময়িক ক্ষতিপূরণ ব্যবস্থা তৈরি করতে পেরে আইএলও ভীষণ আনন্দিত। এমন একটি উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত হবে।’
শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এহসান-এ-এলাহী বলেন, ‘এই দিনটি সামাজিক সুরক্ষা খাতে উন্নয়নের একটি নতুন দ্বার উন্মোচন করতে চলেছে। এই পাইলট প্রোগ্রামটি ‘আন্তর্জাতিক শ্রম মানদন্ড’ অনুযায়ী ডিজাইন করা হয়েছে এবং এর সফলতা নিয়ে কোনো প্রকার সন্দেহ নেই।’
বিজিএমইএ-এর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘দেশের তৈরি পোশাক শিল্প টেকসই ও নিরাপত্তা খাতে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সাধন করেছে, বিশেষ করে শ্রমিক কল্যাণ এবং শিল্প সংযোগের ক্ষেত্রে। ইআইএস শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে এবং বিশেষ করে দেশের সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। আমরা শ্রমিকদের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও কল্যাণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
জেডএ/এমএমএ/