৬১ বছর ধরে রামুতে চাষ হচ্ছে রাবার
কক্সবাজারের রামুতে ১৯৬০ সালে পরীক্ষামূলকভাবে রাবার চাষ শুরু হয়। তৎকালীন সরকার রামুতে রাবার উৎপাদনের লক্ষ্যে ২৬৮২ একর জমি অধিগ্রহণ করে বনসম্পদ উন্নয়ন করপোরেশনের উপর ন্যস্ত করেছিল। সেই থেকে কক্সবাজারের রামুতে রাবার উৎপাদন শুরু হয়।
কিছু ভূমি জবরদখলে চলে গেলেও বর্তমানে ২ হাজার ১শ ৩০ একর জমিতে রাবার গাছ রয়েছে। সেখানে দৈনিক গড়ে সাড়ে ৭ হাজার কেজি শুকনো রাবার উৎপাদন করা হচ্ছে। যার বাজার মূল্য প্রতি কেজি ১৮০ টাকা করে সর্বমোট ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। রাবার বাগানের গাছ থেকে কষ সংগ্রহ করে নিজস্ব কারখানায় এসব কষ রাবারে রূপান্তরিত করা হচ্ছে সেখানে।
রাবার বাগানের ম্যানেজার নন্দী লাল রায় জানিয়েছেন, লোকবল সংকটের কারণে কাজের গতি বাড়ানো যাচ্ছে না। চাহিদা মতো লোকজন ও যানবাহন না থাকায় জবরদখলকারী দুর্বৃত্তদের মোকাবিলা করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই মাঝে-মধ্যে দুর্বৃত্তরা বাগানে জমি দখলে নিতে ও বাগানের গাছ কাটতে হানা দেয়।
এদিকে এই রাবার বাগানের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের কথা উল্লেখ করে সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল জানিয়েছেন, ১৯৬৮ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কক্সবাজার তৎকালীন মহকুমা আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে কক্সবাজারে এসে রামু রাবার বাগানের রেস্ট হাউসে উঠেছিলেন এবং সেখানে বসেই আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে সু- সংগঠিত করেছিলেন। সেই মনোমুগ্ধকর আকর্ষণীয় ঐতিহাসিক রেস্ট হাউসে এখনও বঙ্গবন্ধু যে চেয়ারে বসে দিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন সেটি সংরক্ষণ করে রাখা আছে।
তিনি আরও জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেই থেকে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হওয়া বাংলাদেশ বন সম্পদ শিল্প উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে রাবার চাষ পুরোদমে উৎপাদনের উদ্দেশ্যে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রা শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায়। সেই ধারাবাহিকতায় রামুর রাবার বাগানে পরীক্ষামূলক রাবার চাষ পর্যায়ক্রমে দেশের পার্বত্য চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, এই সেক্টরকে প্রাইভেট খাতে ছেড়ে দেয় সরকার। খুব লাভজনক এই পেশায় এগিয়ে আসে পূঁজিপতি শিল্পপতিরা।
এই রাবার থেকে জুতো, সেন্ডেল থেকে শুরু করে ব্যাগ,পাপস, চেয়ার, টেবিল, বাসন-প্লেট, দরজা, বালতি, আসবাবপত্র ও নানা রকমারী পণ্য-সামগ্রী তৈরি হয়ে আসছে। রাবারের এসব প্লাস্টিক পণ্যসামগ্রী দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
তাই বাংলাদেশ বন সম্পদ শিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের রাবার চাষ বা উৎপাদন বাড়াতে আরও পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলে মনে করেন এ শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্তরা।
একে/এএন