১০ দিনে গ্রাহকের অভিযোগ নিস্পত্তি করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ
গ্রাহক ব্যাংকে অভিযোগ করলেও কোনো কোনো ব্যাংক আমলে নিচ্ছে না। তাই বাংলাদেশ ব্যাংক গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণ, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে সোমবার (১৩ জুন) এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পঠিয়েছে। ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মাকসুদা বেগমের সই করা সার্কুলারে বলা হয়েছে ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২০০৫ সালের নির্দেশনা অনুযায়ী গ্রাহকদের অভিযোগ ১০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। অভিযোগ নিষ্পত্তির সময় কোনোভাবেই ৪৫ দিনের বেশি হওয়া যাবে না।
অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে অভিযোগ সেল পরিচালনা করতে হবে। কিন্তু কোনো কোনো ব্যাংকের শাখায় গ্রাহকের অভিযোগ বা আবেদনপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে না বলে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গোচরীভূত (জানতে পেরেছে) হয়েছে। এ ছাড়া কোনো কোনো ব্যাংক অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকের অভিযোগ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না বলেও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্ত্রীয় ব্যাংক নতুন এই নির্দেশনা দিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘অনেক ক্ষেত্রে কোনো কোনো ব্যাংক গ্রাহকের অভিযোগের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এ জন্য ব্যাংকের আমানতকারী, ঋণগ্রহীতাসহ সব ধরনের গ্রাহকের অভিযোগ কিংবা আবেদনপত্র ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ যে কার্যালয় বা দপ্তরেই দেয়া হোক না কেন, তা প্রাপ্তিস্বীকার প্রদানের মাধ্যমে গ্রহণ করতে হবে। আগের নির্দেশিত সময়ের মধ্যে এবং আবেদনপত্র যথাযথ প্রক্রিয়ায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিষ্পন্ন করতে হবে।’
এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে তফসিলি ব্যাংকগুলোর শাখা অফিসসহ সব কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিষয়টি অবগত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর ক্ষমতা বলে এই সার্কুলার জারি করা হলো বলে সার্কুলারে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গ্রাহকের হয়রানি বন্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০১১ সালের ২৭ মার্চ প্রথমে ‘হেল্প ডেস্ক’ নামে সেবাকেন্দ্র চালু করে। পরে ২০১২ সালে ‘ফাইন্যান্সিয়াল ইন্ট্রিগ্রিটি অ্যান্ড কাস্টমার সার্ভিস (এফআইসিএসডি)’ নামে আলাদা বিভাগ গঠন করা হয়। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ গ্রহণের শুরুতে শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে থাকলেও ২০১১ সালের শেষ দিকে অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির জন্য প্রতিটি ব্যাংকে অভিযোগ সেল খোলার নির্দেশ দেয়া হয়।
কেউ সেবা নিতে গিয়ে হয়রানিতে পড়লে বা কোনো ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হলে প্রথমে ওই শাখায় প্রতিকার চাইতে হবে। শাখায় প্রতিকার না পেলে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় বা আঞ্চলিক কার্যালয়ের অভিযোগ কেন্দ্রে জানাতে হবে। তবে কোনো গ্রাহক ব্যাংকিং সেবা পেতে হয়রানির শিকার হলে বা কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তা সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকেও জানাতে পারবে, সে সুযোগ রাখা হয়েছে। সরাসরি ১৬২৩৬ এই নাম্বারে টেলিফোন করে অভিযোগ করা যায়। এ ছাড়া মোবাইল অ্যাপ, ই-মেইল, বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটের নির্ধারিত ফরম, ডাকযোগে এবং সশরীরেও অভিযোগ করা যাবে।
জেডএ/