পাচার করা টাকা আনার বিপক্ষে ব্যবসায়ীরা
পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আসুক এটা অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল চাইলেও ব্যবসায়ীরা চান না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেছেন, বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে আনা হলে ভালো ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হবেন। শনিবার (১১ জুন) এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের ওপর সংবাদ সম্মেলনে এমনই তথ্য জানান। রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনের বোর্ডরুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
মো. জসিম উদ্দিন বলেন, 'ব্যাসায়ীরা ২৭ শতাংশ ভ্যাট দিয়ে ব্যবসা করে। এ ব্যবসা করতে গিয়ে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। আর কেউ বিদেশে টাকা পাচার করেছে, সে টাকা দেশে আনা হলে ব্যবসায়ীরা উৎসাহ হারাবে। ডলারের সংকট দুর করতে সরকার হয়ত পাচার করা টাকা আনার কথা বলেছে। কিন্তু আমরা এটা সমর্থন করি না'।
উল্লেখ্য, রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শুক্রবার (১০ জুন) বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেন, 'বিভিন্ন সময়ে দেশের বাইরে অনেক অর্থ চলে গেছে। কিন্তু কেউ বলতে পারবে না কতো গেছে। বিভিন্ন সংস্থা অর্থ পাচাররোধে কাজ করে। ধরা পড়লে জড়িতদের জেল জরিমানা হচ্ছে। আবার কারো বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তাই বাইরে থেকে টাকা ফেরতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা কালো টাকা না বলে অপ্রদর্শিত অর্থ বলা যায়।'
জসিম উদ্দিন বলেন, 'পাইকারি ব্যবসা পর্যায়ে (শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রি-পিস) ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে দেড় শতাংশ করা হয়েছে। কিন্তু শুধু এই কয়টিতো পাইকারি ব্যবসা না। তাই দেশের সকল পাইকারি ব্যবসায় এ কর কার্যকর করা দরকার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'মূল্যস্ফীতি বিশ্বব্যাপী। ভোজ্যতেল এর দাম ভারত, পাকিস্তানের চেয়ে কম আমাদের দেশে। তাই বাজেটে সরকার চেষ্টা করছে যেভাবে হোক মুল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা। সরকার জানে কোথায় কোথায় হাত দিলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। সেখানেই তা করতে হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'ল্যাপটপ আমদানিতে ১৫ শতাংশ মূসক আরোপ করা হয়েছে। এটা কার প্রস্তাবে করা হয়েছে আমরা জানি না । এরফলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাধাগ্রস্থ হবে। তাই এটা বাতিল করা দরকার। কোভিড-১৯ টেস্ট কিট, প্লাস্টিক ফেসশিল্ড, মাস্ক প্রভৃতির উৎপাদন ও ব্যবসায়ী পর্যায়ে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখনো করোনা দুর হয়নি। তাই এসব খাতে ভ্যাট বহাল রাখা দরকার।'
তিনি আর বলেন, 'আমরা ব্যবসায়ী ব্যবসা করি। ট্যাক্স(কর) দিই। তারপরও কিন্তু অনেক সময় বেশি করে কর আদায়ে আমাদের উপর ছুরি চালানো হয়। তাই উপজেলা পর্যায়ে ট্যাক্স নেটওয়ার্ক বাড়ানো দরকার। এ জন্য রাজস্ব আহরণ ও রাজস্ব পলিসি ( নীতি) কার্যক্রম পৃথক করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন বিভাগ গঠন করা দরকার।'
জেডএ/এএজেড