পাচার করা টাকা আনতে কেউ বাধা দিবেন না: অর্থমন্ত্রী
বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, সব টাকাই ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কালো টাকা নয়। পদ্ধতিগত কারণেও টাকা কালো হয়। অপ্রদর্শিত অর্থ দেশে আনলে প্রশ্নবিদ্ধ হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, পাচার করা অর্থ যেকোনো আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফেরত আনা হবে। এতে কোনো ধরনের বাধা কাম্য নয়। এসময় অর্থমন্ত্রীর কথার সঙ্গে একাত্বতা করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ট্রুথ কমিশনের কার্যক্রম কোনো আইন দ্বারা বৈধ ছিল না। এবার বিদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার সিদ্ধান্ত সংসদে আইন দ্বারা প্রণীত হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেট বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। তবে এবারের বাজেটকে কঠিন সময় অতিক্রম করতে হবে। অনেক চড়াই-উৎরাইও অতিক্রম করতে হবে। তিনি বলেন, করোনা মহামারিতেও সামষ্টিক অর্থনীতি নিম্নমুখি ছিল না। স্থানীয় শিল্পকে উৎসাহিত করছে সরকার।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শুক্রবার (১০ জুন) বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'এবারের বাজেটে জনগণের কথা বিবেচনা করা হয়েছে। এ বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। কঠিন সময়ে বিশ্বের প্রায় দেশে নিম্নগামী প্রবৃদ্ধি হলেও আমদের সামষ্টিক অর্থনীতির সব সূচক উর্ধ্বগামী। প্রত্যাশা করছি, কঠিন সময়েও পথ পাড়ি দিতে পারব। রাজস্ব বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'বিভিন্ন সময়ে দেশের বাইরে অনেক অর্থ চলে গেছে। কিন্তু কেউ বলতে পারবে না কতো গেছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'বিভিন্ন সংস্থা অর্থ পাচাররোধে কাজ করে। ধরা পড়লে জড়িতদের জেল জরিমানা হচ্ছে। আবার কারো বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। পিকে হাওলাদার টাকা পাচার করে রক্ষা পাইনি। ভারতে ধরা পড়েছে। তবে আসলে বিশ্বে কতো অর্থ পাচার হয়েছে তা কেউ বলতে পারবে না। তাই বাইরে থেকে টাকা ফেরতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা কালো টাকা না বলে অপ্রদর্শিত অর্থ বলা যায়। কারণ অনেকের অজান্তেও বাইরে টাকা চলে যায়। তাই যারাই দেশে টাকা ফেরত আনবে তাদের ব্যাপারে কোনো প্রশ্ন করা হবে না। আইন করেই তাদের সেই সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাজেটে তা ঘোষণাও করা হয়েছে। কাজেই যারা দেশে টাকা পাঠাবে তাদের ভয়ের কিছু নেই। গোপনীয়তা মানা হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, মালেয়েশিয়া, নওরয়েসহ পৃথিবীর ১৭টি দেশে পাচার করা টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করেছে। সবাই লাভবান হয়েছে। কাজেই আমরাও সেদিকে যাই। এটা দেশের জন্য করা হচ্ছে। এ কাজে কেউ বাধা দিবেন না।'
উল্লেখ্য, জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য পৌনে ৭ লাখ কোটি টাকার বেশি বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। এতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় সাড়ে ৭ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। বিভিন্ন খাতে ভর্তূকি এবং প্রণোদনাও দেওয়া হয়েছে। প্রথা অনুযায়ী বাজেটের পরের দিন সরকারের পক্ষ থেকে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এসময় কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ড, দিপু মুনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালেক,পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ চৌধুরীসহ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
জেডএ/এএজেড/এনএইচবি/আরএ