৮৩ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ভর্তুকির প্রস্তাব
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জ্বালানি ও সারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে চাপ সামলাতে এবার অনেক ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে সরকার। নতুন অর্থবছরের (২০২২-২৩) জন্য জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ভর্তুকি ও প্রণোদনায় ৮২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা ব্যয় করার প্রস্তাব করেছেন। যা চলতি অর্থবছরে ছিলো ৫৩ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। যা জিডিপির ১ দশমিক ৯০ শতাংশ। বিভিন্নখাতে এই ভর্তূকি ও প্রণোদনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আশা করছেন, ভর্তুকি, প্রণোদনা এবং নগদ ঋণ বৃদ্ধির ইতিবাচক প্রভাব বৈশ্বিক ঝুঁকি থেকে অর্থনীতিতে নতুন করে উদ্দীপনা জোগাবে। এটা একদিকে দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষায় যেমন কাজ করবে, তেমনি উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করে জনগণকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপ থেকেও স্বস্তি দেয়া সম্ভব হবে।
ভর্তুকি হিসেবে ব্যয় করা হবে ৪২ হাজার ৪৫ কোটি টাকা, প্রণোদনা হিসেবে ৩০ হাজার ৭০০ কোটি এবং নগদ ঋণ হিসেবে ১০ হাজার কোটি টাকা।বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় দাবি করেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস ও সারের মূল্যের সাম্প্রতিক যে গতি-প্রকৃতি, তাতে ভর্তুকি ব্যয় ১৫-২০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা বাজেট বাস্তবায়নে একটি বিরাট চ্যালেঞ্জ হতে পারে।
চলতি অর্থবছরের তুলনায় প্রস্তাবিত বাজেটে সার বাবদ ভর্তুকি চার হাজার কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। কারণ চলতি বাজেটে সারে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু বিশ্বজুড়ে সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় বছর শেষে তা ১২ হাজার কোটি টাকা দাঁড়ায়। মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় এবার ভর্তুকির পরিমাণ বাড়িয়ে ১৬ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে।
পণ্যমূল্য সহনীয় রাখতে এবং উৎপাদন খরচ কমাতে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরের জন্য এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৯ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি এবার স্বল্প আয়ের মানুষের খাদ্যনিরাপত্তায় ভর্তুকি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে আরও ৬ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া টিসিবির মাধ্যমে বছরজুড়ে ফ্যামিলি কার্ডের আওতায় সারা দেশে এক কোটি পরিবার তথা পাঁচ কোটি মানুষকে সরবরাহ করা হবে সুলভ মূল্যের পণ্য। অন্যান্য খাতেও ১৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদানের মাধ্যমে সরকার মূল্যস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।
এছাড়া বাজেটের আওতায় নগদ ঋণ দেওয়া হবে আরও ১০ হাজার কোটি টাকা। রপ্তানিমুখী শিল্পের উৎপাদন বাড়িয়ে রপ্তানি আয়ের মাধ্যমে এবং প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের মাধ্যমে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার চাকাও গতিশীল রাখার লক্ষ্য সরকারের। এর জন্য রপ্তানিমুখী শিল্পের জন্য নগদ প্রণোদনা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। পাটজাত দ্রব্যাদি রপ্তানিতে প্রণোদনা রাখা হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা।
খাদ্যে ভর্তূকি ৬ হাজার কোটি টাকা, রপ্তানি সহায়তাসহ বিভিন্নখাতে ১১ হাজার ৩২৫ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যান্য খাতেও ভর্তুকি ব্যয় হবে ৩৪ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা।
জেডএ/