বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদে বরাদ্দ ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা
আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে ৫১তম জাতীয় বাজেট অধিবেশনে বক্তৃতাকালে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল একথা জানান।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, বিগত ১৩ বছর ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের নিরলস প্রচেষ্টার ফলে দেশে সম্প্রতি মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা (ক্যাপটিভ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ) ২৫ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, মুজিব শতবর্ষকে সামনে রেখে উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার সমন্বিত উন্নয়নের মাধ্যমে সরকার দেশের শতভাগ জনগণকে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণে সরকার সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নয়নেও গুরুত্ব দিচ্ছে। পায়রা-গোপালগঞ্জ ৪০০ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন এবং গোপালগঞ্জ-রামপাল ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন দুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে ইতোমধ্যে কমিশনিং করা হয়েছে। এছাড়া মোংলা-খুলনা (দক্ষিণ) ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মিত হয়েছে।
গোপালগঞ্জ-আমিনবাজার ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইনের ৭ দশমিক ৫ কিলমিটার পদ্মা রিভার ক্রসিং অংশের পদ্মা রিভার বেডের সাতটি টাওয়ারের ফাউন্ডেশনের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাওয়ার ইভ্যাকুয়েশনের জন্য ৪০০ কেভি ও ২৩০ কেভি ভোল্টেজের ছয়টি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।
জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে আবিষ্কৃত ২৮ টি প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের মধ্যে ২০টিতে উৎপাদন চলছে। ২০০৯ সালে দেশে দৈনিক ১ হাজার ৭৮৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হতো যা বেড়ে বর্তমানে দুই হাজার ৫২৫ মিলিয়ন ঘনফুট হয়েছে। পাশাপাশি গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে দৈনিক প্রায় ৬০০-৭৫৩ মিলিয়ন ঘনফুট তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) হিসেবে আমদানিপূর্বক রিগ্যাসিফাইকরত জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করা হচ্ছে। দেশের জ্বালানি তেলের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের শোধনক্ষমতা আরও ৩০ লাখ টন বৃদ্ধির জন্য ইআরএল ইউনিট-২ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে, যা বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক পরিশোধন ক্ষমতা ৪৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হবে।
প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার হচ্ছে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। বাজেটের বড় আকারের সঙ্গে সঙ্গে ঘাটতি বাজেটও এবার অনেক। অনুদান বাদে এই বাজেটের ঘাটতি ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এই টাকা জিডিপির সাড়ে ৫ শতাংশের সমান। অন্যদিকে, অনুদানসহ বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ দশমিক ৪০ শতাংশের সমান।
আরইউ/এএজেড